আমার মাতৃচুম্বনের আদি স্বর
টাঙ্গুয়ার হাওরে পূজা চেরি
মুহম্মদ নূরুল হুদা
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ১২:০০
মেঘেদের আড়ালে হাসছিলাম হাহা। ঠা-ঠা ডিগবাজি খাচ্ছিলাম সপ্ত-ঋষির পবনে-
পর্বতে। মুহূর্তের তিমিরাক্ষী আলোকপোশাক রূপবদলরত অনবরত। ভীতসন্ত্রস্ত আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলাম স্বর্গমর্ত্য অমাদিগন্ত। আমার আগে-
পেছনে আমাকে খুঁজে খুঁজে পাহারা দিচ্ছিল হাজার হাজার কোটি কোটি আমার আমি। যেহেতু আমার আগে-পেছনে আমার পেছনে-আগে ছুটছিলেন বড়শি হাতে আমার মানবজনক। জনক তো নয়, খলুই হাতে এক মৎস্যশিকারি। শিকারি তো নয়, সুদর্শন চক্র হাতে এক নিমগ্ন নিকারি। নিকারি নয়, ধনুক হাতে এক দোলনা-কারবারি...
কত অনন্ত পার হতে চলেছে মা আমার সন্তানহীনা। মানুষজনের হাতে হাতে বেদনার বেহালাবীণা। না তিরস্কার, না পুরস্কার; বাবা আটকুঁড়া বাদশাহ ভুবনবিদারী হাহাকার। হাহা কার! হাহা কার? হাহা কার! আমি তখনো ধারণ করিনি কোনো প্রাণীর আকার। তাহলে হাহা কার? হাহা কার? কার গো? কার? তিনভুবনে ঘুরন্ত ঘোর অমাজোছনা; শিকারি বাবার হাতের নাগালের বাইরে আমি তখনো অনন্ত না-না-না-না
তিনভুবনে তাঁর আপন সহধর্মিণীকে অঙ্গলগ্ন করে বাবা দিলেন শৃঙ্গতম শৃঙ্গার-ওঙ্কার। তাঁর বল্লম বিদ্ধ করলো প্রেয়সীর সিদ্ধতম শ্রী। তার ধনুক প্রসারিত করলো ব্রহ্মাণ্ডের দীর্ঘতম জয়শ্রী। ক্ষিপ্রতম তার লাঙ্গলবর্শা চষে বেড়ালো সহধর্মিণীর পলিশরীর। দক্ষতম কৃষকের কৌশলে বাবা হাতের মুঠোয় সংগ্রহ করলেন তাঁর সন্তানের বীজামৃত; তারপর কালবিলম্ব না করে সেই সন্তানবীজ পুঁতে দিলেন আমার মা-জননীর নহলি জমিনে...
গগনে গগনে তখন যৌবনের আতশবাজি।
ভুবনে ভুবনে তখন মৌবনের মধুর কারসাজি।
জনকজননীর অঙ্গে অঙ্গে তখন অমৃতের অহংকার : রাজি, রাজি, রাজি।
কত অনন্ত এলো গেলো, কত দশমাস দশদিন পার হলো, গর্ভসাগরে যুগযুগান্তর ধরে আমিও তথাস্তু সন্তরণরত: অনন্তর যুগলমুঠির ভিতর মুখ লুকিয়ে লাজুক অহঙ্কারে মায়ের সামনে নিজেকে নিক্ষেপ করলাম আমি এক শিশুলাভা : ওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়া ওঁয়াওঁয়াওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়া মাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামামামামামামামামামামামামামামামামামামামামামা মামামামামামামামামামামামামামামামামামামামামা
ওঁয়া থেকে মা মা সাড়া দিলেন সেই ওঁয়া-মা ডাকে। মুখে মুখ লাগিয়ে তিনি বন্ধ করলেন আমার মুখ।
সেই আমার প্রথম মাতৃচুম্বন। আমি জন্মজন্মান্তরের তীব্রতম সুখে ও দুখে উচ্চারণ করলাম জননীর প্রথম চুম্বনধ্বনি : অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ
তাইতো 'অ' আমার মাতৃভাষার প্রথম অক্ষর তাইতো 'অ' আমার মাতৃচুম্বনের আদি স্বর
পর্বতে। মুহূর্তের তিমিরাক্ষী আলোকপোশাক রূপবদলরত অনবরত। ভীতসন্ত্রস্ত আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলাম স্বর্গমর্ত্য অমাদিগন্ত। আমার আগে-
পেছনে আমাকে খুঁজে খুঁজে পাহারা দিচ্ছিল হাজার হাজার কোটি কোটি আমার আমি। যেহেতু আমার আগে-পেছনে আমার পেছনে-আগে ছুটছিলেন বড়শি হাতে আমার মানবজনক। জনক তো নয়, খলুই হাতে এক মৎস্যশিকারি। শিকারি তো নয়, সুদর্শন চক্র হাতে এক নিমগ্ন নিকারি। নিকারি নয়, ধনুক হাতে এক দোলনা-কারবারি...
কত অনন্ত পার হতে চলেছে মা আমার সন্তানহীনা। মানুষজনের হাতে হাতে বেদনার বেহালাবীণা। না তিরস্কার, না পুরস্কার; বাবা আটকুঁড়া বাদশাহ ভুবনবিদারী হাহাকার। হাহা কার! হাহা কার? হাহা কার! আমি তখনো ধারণ করিনি কোনো প্রাণীর আকার। তাহলে হাহা কার? হাহা কার? কার গো? কার? তিনভুবনে ঘুরন্ত ঘোর অমাজোছনা; শিকারি বাবার হাতের নাগালের বাইরে আমি তখনো অনন্ত না-না-না-না
তিনভুবনে তাঁর আপন সহধর্মিণীকে অঙ্গলগ্ন করে বাবা দিলেন শৃঙ্গতম শৃঙ্গার-ওঙ্কার। তাঁর বল্লম বিদ্ধ করলো প্রেয়সীর সিদ্ধতম শ্রী। তার ধনুক প্রসারিত করলো ব্রহ্মাণ্ডের দীর্ঘতম জয়শ্রী। ক্ষিপ্রতম তার লাঙ্গলবর্শা চষে বেড়ালো সহধর্মিণীর পলিশরীর। দক্ষতম কৃষকের কৌশলে বাবা হাতের মুঠোয় সংগ্রহ করলেন তাঁর সন্তানের বীজামৃত; তারপর কালবিলম্ব না করে সেই সন্তানবীজ পুঁতে দিলেন আমার মা-জননীর নহলি জমিনে...
গগনে গগনে তখন যৌবনের আতশবাজি।
ভুবনে ভুবনে তখন মৌবনের মধুর কারসাজি।
জনকজননীর অঙ্গে অঙ্গে তখন অমৃতের অহংকার : রাজি, রাজি, রাজি।
কত অনন্ত এলো গেলো, কত দশমাস দশদিন পার হলো, গর্ভসাগরে যুগযুগান্তর ধরে আমিও তথাস্তু সন্তরণরত: অনন্তর যুগলমুঠির ভিতর মুখ লুকিয়ে লাজুক অহঙ্কারে মায়ের সামনে নিজেকে নিক্ষেপ করলাম আমি এক শিশুলাভা : ওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়াওঁয়া ওঁয়াওঁয়াওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়া মাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামাওঁয়ামামামামামামামামামামামামামামামামামামামামামা মামামামামামামামামামামামামামামামামামামামামা
ওঁয়া থেকে মা মা সাড়া দিলেন সেই ওঁয়া-মা ডাকে। মুখে মুখ লাগিয়ে তিনি বন্ধ করলেন আমার মুখ।
সেই আমার প্রথম মাতৃচুম্বন। আমি জন্মজন্মান্তরের তীব্রতম সুখে ও দুখে উচ্চারণ করলাম জননীর প্রথম চুম্বনধ্বনি : অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ-অ
তাইতো 'অ' আমার মাতৃভাষার প্রথম অক্ষর তাইতো 'অ' আমার মাতৃচুম্বনের আদি স্বর
- বিষয় :
- আমার মাতৃচুম্বনের আদি স্বর