আমাদের নিবেদন
বাংলা ভাষা চিরদিনের মাধুর্য
--
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ১২:০০
একুশে ফেব্রুয়ারি প্রাণের বিনিময়ে মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষা করার দিন। ১৯৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারি থেকে আমার জানি 'একুশ মানে মাথা নত না করা'। এই জাতিকে পরিচয়হীন করতে ১৯৪৭-এ জন্ম নেওয়া সাম্প্রদায়িক পাকিস্তান রাষ্ট্রে প্রথমেই আঘাত আসে মাতৃভাষা বাংলার ওপর। পরভাষী করতে পারলে নিজস্ব সংস্কৃতি ও মূল্যবোধশূন্য করতে সহজ; কিন্তু দ্বিজাতিতত্ত্বকে মিথ্যা প্রমাণ করে সেই প্রাণের ভাষা বাংলাই এ ভূখণ্ডে মানুষকে আবার একটি কেন্দ্রে মিলিত করেছে, আমরা স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র নিয়ে পৃথিবীর বুকে নিজেদের বিজয় ঘোষণা করেছি। তাই একুশে ফেব্রুয়ারি এদেশের মানুষের আবেগ ও আত্মমর্যাদার দিন। যা এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।
একসময় রাজনৈতিক শক্তি যা করতে পারেনি, বর্তমান আকাশ সংস্কৃতি আমাদের সেই পথেই নিয়ে যাচ্ছে। বাংলা ভাষা নিয়ে শুরু হয়েছে অতি তরলীকরণের প্রয়াস। বিকৃত বা কৃত্রিম উচ্চারণ, কথনে ও লেখায় দ্বিভাষিক শব্দ ও বাক্যের ব্যবহার এবং আঞ্চলিকতার মিশ্রণ ভয়াবহ হয়ে উঠছে। প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে প্রিয় বাংলাভাষা।
ভাষার যথাযথ ব্যবহার, চর্চা এবং সর্বজনীনতার ওপর এর সমৃদ্ধি অনেকাংশে নির্ভরশীল। সমৃদ্ধি না ঘটলে ভাষা দীন হতে থাকে, একসময় বিলুপ্তি ঘটে। ভাষা দীনহীন, দুর্বল হয়ে যাওয়ার নানাবিধ কারণের মধ্যে রয়েছে বিকৃতিসাধন, রূপান্তর, ভাষার ব্যবহারে অসচেতনতা, অপব্যবহার প্রভৃতি। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মুক্তবাজার অর্থনীতির মুনাফাতত্ত্ব। বাংলা ভাষার শুদ্ধতা রক্ষায় এসব কিছুর বিরুদ্ধেই আমাদের লড়াই করতে হবে।
এবারের একুশে বিশেষ সংখ্যায় আমরা ভাষার মাধুর্য প্রসঙ্গে নানামাত্রিক আলোচনার আয়োজন করেছি। বিভিন্নভাবে দেখতে চেয়েছি বাংলা ভাষার সৌন্দর্য ও বিকাশের যাত্রা। বিশিষ্ট লেখকদের রচনায় আমরা সন্ধান করেছি বাংলা ভাষার চিরকালীন শক্তিকে, যাকে প্রাণের বিনিময়ে রক্ষা করেছেন আমাদের পূবসূরিরা। সবাইকে মহান একুশের শুভেচ্ছা।
-মুস্তাফিজ শফি
- বিষয় :
- বাংলা ভাষা চিরদিনের মাধুর্য