বিশ্বকাপ ফাইনালের বিগ ম্যাচে গোলরক্ষকদের একটা দুর্দান্ত সেভ বদলে দেয় পুরো ম্যাচের ভাগ্য। ২০১০-এর ফাইনালে স্পেনের ইকার ক্যারিয়াস ও ২০১৪-তে জার্মানির ম্যানুয়াল নুয়ার যার বড় উদাহরণ। লুসাইলের ফাইনালের দুই গোলরক্ষক আর্জেন্টিনার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ ও ফ্রান্সের হুগো লরিসের সামনেও সুযোগ থাকছে দলের নায়ক হয়ে ওঠার। দু'জনই আবার আছেন বিশ্বকাপের সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার 'গোল্ডেন গ্লাভস' জয়ের লড়াইয়ে। তাই তো সময়ের অন্যতম সেরা দুই গোলরক্ষকের মধ্যে জম্পেশ এক লড়াই জমবে ফাইনালে।

পরিশ্রম আর অধ্যবসায় মানুষকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে- এর এক দারুণ উদাহরণ আর্জেন্টিনার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। পাঁচ বছর আগেও ধারে স্প্যানিশ ক্লাব গেতাফেতে খেলছিলেন মার্টিনেজ। প্রথম একাদশে সুযোগ পেতেন না নিয়মিত। ২০১৭ সালে নিজের ফেসবুক পেজে বিমর্ষ এক ছবি আপলোড করে ক্যাপশন জুড়ে দিয়েছিলেন, 'আমারও সময় আসবে।' সেই সময়টা কী দুর্দান্তভাবেই না এলো। বিশ্বকাপের সেরা গোলরক্ষক হওয়ার হাতছানি দিচ্ছে অ্যাস্টন ভিলার গোলরক্ষককে। কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টাইব্রেকারে দুর্দান্ত পেনাল্টি সেভ এবং সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ক্লিনশিট ফাইনালের আগে বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে এ আর্জেন্টাইনকে। বিশ্বকাপ শুরুর আগে মার্টিনেজ জানিয়েছিলেন, মেসির শেষ বিশ্বকাপে মেসির হাতে কাপ তুলে দিতে প্রয়োজনে নিজের জীবন বাজি রাখবেন। নিজের কথা রাখা থেকে ঠিক এক ধাপ দূরে দাঁড়িয়ে ৩০ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক। ফাইনালের লড়াইয়ে তাই তো নিজের সেরাটাই নিংড়ে দিতে চাইবেন তিনি।

ফ্রান্সের গোলবারের নিচে সবচেয়ে বড় আস্থা তাদের অধিনায়ক হুগো লরিস। ৩৫ বছর বয়সী অভিজ্ঞ এই গোলরক্ষক সব সময়ই বড় মঞ্চের খেলোয়াড়। গ্রুপ পর্বটা লরিসের জন্য খুব একটা ভালো না গেলেও, কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিতে এই টটেনহাম গোলরক্ষক ফিরেছেন নিজের সেরা ছন্দে। তবে মেসির দুর্দান্ত ফর্ম চিন্তার কারণ হতে পারে লরিসের জন্য। পাশাপাশি হুলিয়ান আলভারেজ, ডি মারিয়ারাও নিঃসন্দেহে কঠিন পরীক্ষা নেবেন ফরাসি অধিনায়কের। এদিকে দারুণ এক ব্যক্তিগত অর্জনও অপেক্ষা করছে লরিসের জন্য। ফাইনালে মাঠে নামলেই বিশ্বকাপে গোলরক্ষক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ২০ ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়বেন লরিস। বিশ্বকাপে মোট ১৯ ম্যাচ খেলে এখন এই রেকর্ডে লরিসের সঙ্গে যৌথভাবে আছেন জার্মান গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নুয়ার।