শাহ্‌জালাল ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ২০১৯ সালের ২৯ জুন যাত্রা শুরু করে ইতোমধ্যেই কার্ড মার্কেটে বেশ সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছে। শরিয়াহভিত্তিক ক্রেডিট কার্ড এবং ইএমভি চিপসংবলিত আন্তর্জাতিক ভিসা ব্র্যান্ডের সব আধুনিক সুবিধা নিয়ে আমরা গ্রাহকের দোরগোড়ায়।
আমাদের কার্ড শরিয়াহভিত্তিক। ইসলামী শরিয়াহ ‘ওয়াকালাহ’ ধারণা অনুসরণ করে কার্ড চালু করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি ট্রানজেকশন আলাদা আলাদা ডিল। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা আলাদা আলাদা ডিলের ওপর ১৫ থেকে ৪৫ দিনের মুনাফামুক্ত অর্থ পরিশোধের সুবিধা পাচ্ছেন।   
আমাদের কার্ড ভিসা ব্র্যান্ডেড এনএফসি ও চিপ বেজড কার্ড, যা গ্রাহকের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। এ সুবিধা ছাড়াও আমাদের মুনাফার হারও গ্রাহকদের জন্য সুবিধাজনক। এ ছাড়া অন্যান্য ব্যাংকের কার্ডের সব সুবিধা আমাদের কার্ডেও আছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বলাকা লাউঞ্জে আমাদের প্লাটিনাম কার্ডধারীদের জন্য রয়েছে বিশেষ সুবিধা। গ্রাহকদের আরও বেশি সুবিধা নিশ্চিতের জন্য রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ইএমআই, বার্ষিক ফি মওকুফ, প্রায়োরিটি পাস আন্তর্জাতিক লাউঞ্জ ব্যবহারের সুবিধাসহ সারা বছর ডিসকাউন্ট বা ক্যাশব্যাকের সুবিধা তো আছেই।
কার্ডহোল্ডারের ‘পকেট অব চয়েজ’ হওয়াটাই আমাদের ব্যাংকের মূল লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে আমরা সব ধরনের আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে আমাদের কার্ড প্রডাক্ট উন্নয়নে সচেষ্ট। যার মধ্যে ই-স্টেটমেন্ট প্রদান, গ্রাহকের মোবাইলে এবং ই-মেইলে প্রতিটি লেনদেনের নোটিফিকেশন প্রদান, পেমেন্টের স্ট্যান্ডিং ইনস্ট্রাকশন, অন্যান্য ব্যাংকের মোবাইল অ্যাপস এবং এমএফএস যেমন– বিকাশ, নগদ থেকে সহজেই পেমেন্ট গ্রহণ, টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ই-কমার্স লেনদেন উল্লেখযোগ্য। অধুনা গ্রাহকরা ঘরে বসেই আমাদের মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে কোনো রকম কল সেন্টার এজেন্টের সাহায্য ছাড়া নিজেই তাঁর পিন সেট করতে পারবেন। ইলেকট্রনিকস, আসবাব, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আমাদের ইএমআই সুবিধা চালু আছে। সর্বোপরি গ্রাহকের সবচেয়ে স্বস্তির জায়গা হতে পারে আমাদের এনএফসি ও ইএমভি চিপভিত্তিক কার্ড।
‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ’– এ স্লোগান ধারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সর্বজনীন কিউআর কোডভিত্তিক লেনদেনে আমরাও গর্বিত অংশীদার। আমাদের ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকরা ব্যাংকের মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করে প্রান্তিক পর্যায়ে বাংলা কিউ আর কোড স্ক্যান করে খুব সহজেই লেনদেন করতে পারছেন।
ক্রেডিট কার্ড যেহেতু একটি আনসিকিউর প্রডাক্ট, তাই আমাদের ব্যাংকের কোয়ালিটি বজায় রাখতে আমরা সর্বদা সচেষ্ট। আমরা ইনভেস্টমেন্ট কোয়ালিটি বজায় রেখে গ্রাহকের সব সুবিধা নিশ্চিত করে গ্রাহক সংখ্যা বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছি।
ক্রেডিট কার্ডের কিছু পূর্বশর্ত আছে। যার মধ্যে প্রথমেই বলা যায় ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন)-এর কথা। যাঁদের ই-টিআইএন আছে, তাঁরাই কেবল ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক হতে পারেন। এ ছাড়া শহরের বাইরের অনেক গ্রাহক ক্রেডিট কার্ডের বাইরে থেকে যাচ্ছেন। বর্তমানে ট্যাক্স রিটার্ন জমাদান বাধ্যতামূলক হওয়াও একটি ইম্প্যাক্ট ফেলছে।   
আমরা গ্রাহকের কাছে ট্রান্সপারেন্ট। আমাদের কার্ডে কোনোরকম শর্তের বেড়াজাল নেই। আমাদের যাবতীয় ফি বা চার্জ ব্যাংকের ওয়েব পোর্টালে বিদ্যমান। এতে কোনো রকম পরিবর্তন হলে আমরা কার্ডহোল্ডারদের মোবাইলে এসএমএস ও ই-মেইলের মাধ্যমে অবহিত করি।
ক্রেডিট কার্ড আসলে বিপদের বন্ধু। উন্নত বিশ্বে অনেক জায়গায় যেখানে ক্যাশ চলে না, সেখানে ক্রেডিট কার্ডই একমাত্র অবলম্বন। এ ছাড়া আমরা অনেক সময় এমন পরিস্থিতিতে পড়ি, যেখানে ক্যাশ সংগ্রহ করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। সে পরিস্থিতিতে ক্রেডিট কার্ডই হতে পারে বিপদের অন্যতম বন্ধু।
লেখক: ইভিপি ও হেড অব কার্ড ডিভিশন, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড