- অন্যান্য
- ফুটবল ছেড়ে বক্সিংয়ের প্রেমে সুরকৃষ্ণ
ফুটবল ছেড়ে বক্সিংয়ের প্রেমে সুরকৃষ্ণ

ছবি: ফাইল
তাঁর শৈশব কেটেছে পাহাড়ের ফুটবল মাঠের চৌহদ্দিতে। রাঙামাটির ছেলে সুরকৃষ্ণ চাকমার স্বপ্নই ছিল ফুটবলার হয়ে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়ানোর। সুরকৃষ্ণের কাছে খেলাধুলা মানেই ছিল ফুটবল আর ক্রিকেট। দেশের জনপ্রিয় এ দুটি খেলার বাইরে অন্য কোনো খেলা বুঝতেন না তিনি।
কিন্তু ফুটবলার হওয়ার যে স্বপ্ন নিয়ে বিকেএসপিতে ভর্তি হয়েছিলেন, সেটা পূরণ হয়নি তাঁর। এরপর আয়োজকদের পরামর্শে ট্রায়াল দেন বক্সিংয়ে। এই ট্রায়ালে বক্সিং কোচরা সুরকৃষ্ণকে ছিনে নিতে ভুল করেননি। ফুটবলের পাশাপাশি মার্শাল আর্টও টানত বলে বক্সিংকে বেছে নিতে খুব একটা সমস্যা হয়নি তাঁর। ফুটবলের স্বপ্নটা বিসর্জন দিয়ে বক্সিংয়ে নাম লেখানো সুরকৃষ্ণ তো এখন দেশের অন্যতম সেরা তারকা।
সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘বেক্সিমকো এক্সবিসি ফাইট নাইটে’ নিজেকে মেলে ধরেন সুরকৃষ্ণ। ২৯ বয়সী এ বক্সার এ প্রতিযোগিতায় ছয় রাউন্ডের ম্যাচে দ্বিতীয় রাউন্ডেই নকআউট করে দেন থাইল্যান্ডের চ্যাম্পিয়ন বক্সার পোনলাওয়াত নানচিন্দাকে।
এর আগে গত বছর বাংলাদেশে হওয়া দক্ষিণ এশিয়ান প্রফেশনাল বক্সিং ফাইটেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মাস্টার্স পড়ুয়া সুরকৃষ্ণ। দেশের মাটিতে পর পর দুটি আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়া এ বক্সারের স্বপ্ন এখন আট রাউন্ডের প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া, ‘আমার ফিলিপাইনি কোচ মানসিক প্রস্তুতিটা ভালোভাবেই রপ্ত করিয়েছেন। আমি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে চাই– এই জেদ ও ইচ্ছাটা তিনিই আমার মনের মধ্যে গেঁথে দিয়েছেন। এখন আমার লক্ষ্য আট রাউন্ডের বক্সিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া।’
সুরকৃষ্ণের অনুপ্রেরণার নাম বিশ্বখ্যাত বক্সার মোহাম্মদ আলি। মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের ব্র্যান্ড এনডোর্সার হয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে বিকাশের চিফ মার্কেটিং অফিসার মীর নওবত আলী বলেন, ‘সুরকৃষ্ণ চাকমা একজন অসাধারণ প্রতিভাবান খেলোয়াড়। প্রচেষ্টা আর সাধনায় তিনি পেশাদার বক্সিংয়ের জগতে নিজের এবং বাংলাদেশের নাম লিখিয়েছেন। সামনের দিনে সুরের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ তৈরি করতে আমরা তাঁর সঙ্গে যুক্ত হয়েছি।’
বাংলাদেশে পেশাদার বক্সিংয়ের চর্চা ছিল না, সুরকৃষ্ণ চাকমাকে দিয়ে সেটার শুরু। ২০১৪ সালে এসএ গেমসে স্বর্ণজয়ী বক্সার আবদুর রহিমকে হারিয়ে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। এর পর কমনওয়েলথ গেমসের দলে ডাক পান। ২০১৮ সালে সুরকৃষ্ণকে পাঠানো হয় ভারতে। হরিয়ানার একটা একাডেমিতে ছয় মাস অনুশীলন করেন তিনি। বক্সিং ফাউন্ডেশনের অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশে এমন একটি ইন্টারন্যাশনাল বক্সিং টুর্নামেন্ট হবে। সেই টুর্নামেন্টেই সুরকৃষ্ণ তাক লাগিয়ে দেন সবাইকে।
মন্তব্য করুন