আক্রমণ বনাম রক্ষণ
-samakal-6398139b7cb3b.jpg)
সেমিফাইনাল ম্যাচের আগে অনুশীলনে দুই দলের খেলোয়াড়েরা
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২২ | ২৩:৫৪
যাদের গোলপোস্টের নিচে ৬ ফিট ২ ইঞ্চির দেয়ালসম একজন থাকেন, তাদের জালে বল পাঠানো যে কতটা কঠিন, তা এরই মধ্যে হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে বেলজিয়াম-ব্রাজিলের মতো দল। তুখোড় আক্রমণভাগ নিয়েও কূল পায়নি তারা। শুধু পোস্টের নিচে না রক্ষণভাগ আগলে রাখার মতো যে চার বা পাঁচজন সেনানী আছেন জল্গাতকো দালিচের ডেরায়, তাঁরাও প্রাচীরের মতো কাজ করেন।
সর্বশেষ ব্রাজিল ম্যাচের একটা উদাহরণই দেওয়া যায়। শক্তিশালী ব্রাজিল একের পর এক আক্রমণ চালিয়েও গোল পেতে অপেক্ষা করতে হয় ১০৫ মিনিট পর্যন্ত। সে দিন একাই ১১টি বল সেভ করেছেন ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার ডমিনিক লিভাকোভিচ। এর পর টাইব্রেকেও দুর্দান্ত এক গোলকিপারের দেখা মেলে। এই দলটির রক্ষণ ভাঙার কঠিন কাজটা এবার মেসিদের সামনে। বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে হবে ম্যাচটি। সেমির সাগর পাড়ি দেওয়ার পথে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণ ভাঙা। অন্যদিকে ক্রোয়াটদের চিন্তা থাকবে মেসিদের পথ আটকানোর।
জমাট রক্ষণ আর মাস্টারক্লাস মাঝমাঠই এবার ক্রোয়েশিয়াকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে। বিশেষ করে মাঝমাঠে অভিজ্ঞ লুকা মডরিচের সঙ্গে ব্রজোভিক, ওরসিস, কোভাসিসও আছেন ছন্দে। দলটির বেশিরভাগ আক্রমণের ত্রাতা তাঁরা। মাঝেমধ্যে রক্ষণেও ভূমিকা রাখতে দেখা যায় তাঁদের। যদিও তাঁদের ব্যাকলাইন খুবই শক্ত। যেখানে গত কয়েক ম্যাচে দালিচের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন লিভাকোভিচ, লভরেন ও গার্ডিওল। আর লেফটে সোসা রাইটব্যাকে থাকা জুরানোভিচও প্রতিপক্ষের আক্রমণ ঠেকাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করছেন। এই ডিফেন্স দেয়ালের সঙ্গে প্রতিপক্ষ আক্রমণ ঠেকাতে কিছুটা নিচে নেমে খেলতে দেখা যায় মাঝমাঠের কোভিসিস ও ব্রজোভিককে।
আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগও আগের চেয়ে এখন সুসজ্জিত। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে খেই হারালেও পরে ঠিকই তারা ভুল শুধরে নেয়। তাতে পাঁচ ম্যাচে দলটি গোল হজম করেছে পাঁচটি। যেখানে ক্রোয়েশিয়া মাত্র তিনটি গোল হজম করে। মূলত বল দখলে রেখে ছোট ছোট পাসে প্রতিপক্ষকে কাবু করার চেষ্টা করে আর্জেন্টিনা। সেক্ষেত্রে মাঝমাঠ বা দুই উইং থেকে সাজানো আক্রমণ মেসি বা আলভারেজ হয়ে জালে যায়।
মেসিকে কড়া মার্কিং করায় ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে দেখা যায় তাঁকে। ডি বক্সের সামনে কিছুটা ড্রিবলিং করে একটু জায়গা পেলেই সেই জায়গা দিয়ে বল সামনে পাঠান সতীর্থ কোনো খেলোয়াড়ের উদ্দেশে আবার কখনও সরাসরি গোলপোস্টে জড়ান তিনি। আর্জেন্টিনার জন্য এই মেসিই সব আক্রমণের মূলে। তাঁকে কেন্দ্র করেই আক্রমণ শানিয়ে থাকে দলটি। আর ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই জোরালো আক্রমণ চালায়। তাতে এক বা দুই গোলে লিড নেওয়ার পর রক্ষণটা একটু শক্ত করে নেয়।
যেখানে ক্রোয়েশিয়া এর উল্টো। অনেকটা সুযোগের সন্ধানে থাকে। রক্ষণটা ঠিকঠাক রেখে মাঝমাঠে বল নিজেদের পায়ে নিয়ে হুট করে আক্রমণে ওঠে। মাঝেমধ্যে লং পাসে আবার কখনও কাউন্টারে দ্রুততম সময়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভাঙতে চায়। সেজন্য প্রতিপক্ষের রক্ষণ দেয়াল শক্ত না হলে বিপদ।