- খেলা
- ফুটবল যার কাছে দাবার মতো
ফুটবল যার কাছে দাবার মতো

কে এই কিকে সেতিয়েন! তিনি কি পারবেন বিশ্বের লাখো-কোটি বার্সা ভক্তের প্রত্যাশা পূরণ করতে! এ প্রশ্নের উত্তর দেবে ভবিষ্যৎ। তবে খানিকটা অপরিচিত হলেও আশ্বস্ত হতে পারেন বার্সা ভক্তরা। বার্সা আইকন ইয়োহান ক্রুইফের ফুটবল দর্শনের অনেক বড় ভক্ত এই সেতিয়েন। বলের দখল ধরে রেখে আক্রমণাত্মক স্টাইলই তার ফুটবলের মূলমন্ত্র। ৬১ বছর বয়সী সেতিয়েন আবার ভীষণ দাবাপাগল মানুষ। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আনাতোলি কারপভ ও গ্যারি কাসপরভের সঙ্গে দাবাও খেলেছেন। হয়তো এ কারণেই স্প্যানিশ এ কোচের কাছে ফুটবল খেলাটা অনেকটা দাবার মতোই। তার মতে, ফুটবল শরীরনির্ভর খেলা হলেও খেলতে হয় বুদ্ধি দিয়ে।
আক্রমণাত্মক ফুটবলের পূজারি সেতিয়েনের ১৯৮৫-৮৬ সালে স্পেন জাতীয় দলের হয়ে তিনটি ম্যাচ খেলেছিলেন। খেলোয়াড়ি জীবনের বেশির ভাগ সময়ই কাটিয়েছেন তিন শহরের দল রেসিং সান্তানদরে। অ্যাথেলেটিকো মাদ্রিদেও খেলেছেন চার বছর। ২০০১ সালে শহরের দল সান্তানদরের হয়েই কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করেন। সর্বশেষ ছিলেন রিয়েল বেটিসের কোচ। সেখান থেকে গতপরশু যোগ দেন বার্সেলোনায়। লা লিগায় সান্তানদর, লাস পালমা, বেটিসের মতো ছোট দলগুলোকে সাফল্য এনে দেওয়ার সুনাম আছে তার। তবে বার্সার মতো বড় ক্লাবের সংস্কৃতি ও প্রত্যাশার চাপের সঙ্গে তিনি কতটা মানিয়ে নিতে পারেন- সেটাই এখন সবচেয়ে বড় বিষয়।
তবে ক্রুইফের ভক্ত বলেই সেতিয়েনের ওপর ভরসা রাখছেন বার্সা কর্তারা। তিনি কত বড় ক্রুইফ ভক্ত, সেটা স্পষ্ট বোঝা যায় তার একটি মন্তব্যেই, 'ক্রুইফ যখন বার্সেলোনায় কোচ হিসেবে এলেন, আমি লক্ষ্য করলাম তাদের বিপক্ষে যারাই খেলছে, কেউ বল পাচ্ছে না। বার্সা খেলোয়াড়দের বলের দখল এতটাই বেশি ছিল। আমি সেটা দেখে ভাবলাম, আমি তো এটাই চাই! খেলোয়াড় হিসেবেও আমি বল নিয়ে খেলতে চেয়েছি, কোচ হিসেবেও সেটাই চাই।' বল দখলে রাখার এই কৌশলটাই তার কোচিংয়ের মূলমন্ত্র। এ কৌশলেই গত নভেম্বরে ন্যু ক্যাম্পে এসে বার্সেলোনাকে নাকানি-চুবানি খাইয়েছিলেন তিনি। সেদিন বার্সাকে ৪-৩ গোলে হারিয়েছিল সেতিয়েনের বেতিস। গত ১০ মৌসুমের মধ্যে ন্যু ক্যাম্পে বার্সা ও সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদকে হারানো একমাত্র কোচ হলেও এই সেতিয়েন। তার নেতৃত্বে বার্সায় আবার টিকিটাকা ফেরানোর প্রত্যাশা করছে কাতালনারা।
ভালভার্দের বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ ছিল, তিনি তরুণদের সুযোগ দেন না। সেতিয়েন কিন্তু তারুণ্যে বিশ্বাসী। তার হাতেই গড়ে উঠেছেন জুনিয়র ফিরপো, জোনাথন ভিয়েরা, ফ্যাবিয়ান রুইজ, জিওভান্নি লে সোলসোর মতো তারকারা। বল দখলে রাখা তার মূল কৌশল হলেও ৪-৩-২-১ ছকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলাতে পছন্দ করেন সেতিয়েন। তাই বলে তার যে খুঁত নেই, তা কিন্তু নয়। এই অতি আক্রমণাত্মক মানসিকতাই তার দুর্বলতা। এ কারণে তিনি নাকি রক্ষণের প্রতি গুরুত্বই দেন না। যে কারণে গত মৌসুমে লা লিগায় ৫২টি গোল হজম করেছে বেতিস।
মন্তব্য করুন