এই খেলোয়াড়দের এইচপিতে রাখতে পারলে ভালো হবে। পাপন ভাই গতকাল একটা কথা বলেছেন- উদীয়মান ক্রিকেটারদের নেওয়া হবে এইচপিতে। অনূর্ধ্ব-১৯ দল ভালো খেলে এসেছে। বিশ্বকাপ জিতেছে তারা। এই দলকে অবশ্যই এইচপিতে রাখা উচিত। সঠিক দিকনির্দেশনা পেলে আগামী দুই বছরে উন্নতির ধারায় থাকবে তারা। একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, তারা অনূর্ধ্ব-১৯-এর সেরা দল, বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা দল না। সিনিয়রদের সেরা দল না। এই দলকে সিনিয়রদের সেরা দল বানাতে হলে একটা প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হবে। যাতে প্রতিভাগুলো অপচয় না হয়। সঠিক নির্দেশনা পায় এবং খেলার প্রতি একাগ্র থাকে।
হান্নান সরকার
অধিনায়ক, বাংলাদেশ
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ২০০০

অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ের খেলা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। পেশাদারিত্ব অবশ্যই থাকে, তবে সেটা জাতীয় দলের চেয়ে অনেক কম। পরের লেভেলে যাওয়ার পর পেশাদারিত্ব আসে। পরিবারকে দেখার ব্যাপার থাকে। নিজেও পরিণত হয়। ছেলে থেকে পুরুষ হয়। এই পর্যায়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে জাতীয় দলে খেলেছি, খুব কম বয়সে খেলেছি। একটা সময়ে ওই চাপের সঙ্গে মানিয়ে নিতে আমাদের কষ্ট হচ্ছিল। অনূর্ধ্ব-১৯ আর জাতীয় দলের মাঝখানের যে পিরিয়ড ওই সময়ে যদি যত্ন নেওয়া হতো তাহলে আরও পাকা হয়ে ঢুকতে পারলে আমাদের ক্যারিয়ার অনেক ভালো হতো। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলব, বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন দলের ক্রিকেটারদের উচিত হবে আগামী দু-তিন বছর ধারাবাহিক খুব ভালো ক্রিকেট খেলা। ভারত বা পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা যেমন খেলে থাকে। তারা ধারাবাহিক রান করতে থাকে। একটা-দুটা একশ' করেই জাতীয় দলে ঢোকে না। আমি আশা করব, তারাও ধারাবাহিক ভালো ক্রিকেট খেলে জায়গা করে নেবে। অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ের পারফরম্যান্স সব সময় ভালো থাকে। জাতীয় দলে যাওয়ার পর অতটা ভালো করতে দেখা যায় না। এই দলকে আগামী দু-তিন বছর ভালো যত্ন নেওয়া গেলে এবং খেলোয়াড়রা একাগ্রতা দিয়ে ধারাবাহিক ভালো ক্রিকেট খেললে জাতীয় দলে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে।
নাফিস ইকবাল
অধিনায়ক, বাংলাদেশ
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ২০০২

ওরা বিশ্বকাপ জিতেছে মানে কোয়ালিটি খেলোয়াড়। বিশ্বকাপের সবচেয়ে ভালো ফল ওরাই করেছে। অনূর্ধ্ব-১৯ বয়সভিত্তিক দল পর্যন্ত একটা গাইডলাইনের ভেতরে থাকে খেলোয়াড়রা ক্রিকেট বোর্ড এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কারণে। এরপর গাইডলাইনটা একটু কমে যায়। যারা ভালো ক্রিকেট খেলে তারা এইচপি, 'এ' দলে সুযোগ পাবে। বাকিদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে। আগামী কয়েকটা বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময় চ্যাম্পিয়ন দলের খেলোয়াড়দের জন্য। 'এ' দল বা জাতীয় দলের স্কোয়াডে যাওয়া পর্যন্ত কঠিন সময়। আমার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, অনেক খেলোয়াড় হারিয়ে যায় এই সময়ে। অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলে, ভালো করে; কিন্তু দু-তিন বছর পর অনেকে রেসে থাকে না। এই জিনিসটা যাতে না হয় এজন্য ওদের সচেতন থাকা দরকার। ভালো খেলে ফেলায় অনেক পরিচিতি পায়, এটা যদি উপভোগ করতে শুরু করে দেয় তাহলেও ওদের ভবিষ্যৎ একটু কঠিন হবে। আর উপভোগ না করে কঠিন পরিশ্রম করে গেলে প্রতিষ্ঠা পাবে। খেলার দিকে মনোযোগ রাখলে আমার মনে হয় তারা অনেক দূর যাবে।
সোহরাওয়ার্দী শুভ
অধিনায়ক, বাংলাদেশ
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ২০০৮

এই বিশ্বকাপে খেলা ১৬ জনই জাতীয় দলে খেলবে না। তারাই খেলবে যারা নিয়মিত পারফর্ম করবে। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ পর্যায়ে শুধু ওয়ানডে খেলা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ টি২০, ওয়ানডে এবং টেস্ট খেলে। বিভিন্ন কন্ডিশনে খেলে, সব দেশের সঙ্গে খেলে, দেশে খেলে, বিদেশে খেলে। আমার কাছে মনে হয় সব ধরনের ক্রিকেটের জন্য তারা দেশে যে খেলাগুলো হয় (লিগ ও টুর্নামেন্ট) সেগুলোতে নিয়মিত খেলে পারফর্ম করবে এবং বড় পরিসরের জন্য নিজেদের তৈরি করবে। সুস্থ থাকতে হবে। আর যে কন্ডিশনিং ট্রেনিং পেয়েছে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে সেটা যেন পরবর্তী সময় ধরে রাখে। তাহলে ফিটনেস ভালো থাকবে। এই আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো ঠিক থাকলে ভালো করতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারণ তারা ক্রিকেটটা ভালো খেলছে। বাংলাদেশ দলের বেশিরভাগই অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে আসে এবং পারফর্মও করে। আমার কাছে মনে হয়, এরাও জাতীয় দলে আসবে এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে লম্বা সময় ধরে।
এনামুল হক বিজয়
অধিনায়ক, বাংলাদেশ
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ২০১২