লিটন দাসের আগের ইনিংসগুলো পাহাড়ি নদীর মতো। উদ্দাম, উচ্ছ্বলতা আছে। কিন্তু অগভীর। ভালো শুরু পেলেও শেষটা অতৃপ্তির। আগের ৩৩ ওয়ানডেতে তাই একটি সেঞ্চুরির সঙ্গে ছিল তিনটি ফিফটি। তবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে দারুণ এক সেঞ্চুরি পেয়েছেন লিটন। তার ব্যাটে ভর করে জিম্বাবুয়েকে ৩২২ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান। আর ওয়ানডেতে নিজেদের অষ্টম সর্বেোচ্চ সংগ্রহ।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়মে রোববার টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে শুরুটা ভালো করে বাংলাদেশ। ওপেনিং জুটিতে তোলে ৬০ রান। এরপর অ্যাংকরিং রোলে খেলা তামিম ৪৩ বলে ২৪ রান করে ফিরে যান। সেট হয়ে হাত খুলতেই আউট হন তিনি। এরপর টেস্ট-টি২০’র পর ওয়ানডে দলে ফেরা নাজমুল শান্ত দুই ছক্কা ও এক চারে ২৯ রান করে ফেরেন। বিতর্ক আছে তার আউট নিয়ে।

তাতে অবশ্য রানের চাকায় ছেদ পড়েনি। ওপেনার লিটন দাস মাঠের চারদিকে শট খেলছিলেন, সিঙ্গেল-ডাবল রান করছিলেন। তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ডাবল সেঞ্চুরি পাওয়া মুশফিকুর রহিম। কিন্তু লিটন দাস সেঞ্চুরি করতেই উইকেটরক্ষকের পাশ দিয়ে ব্যাটের আলতো ছোঁয়ায় শট খেলতে গিয়ে সাজঘরে ফেরেন মুশফিকুর রহিম। তিনি করেন ১৯ রান।

লিটনের ক্যারিয়ার সেরা ১২৬ রানের ইনিংসে ভর করে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রান বাংলাদেশের। ছবি: ইউসূফ আলী

শান্ত কিংবা মুশফিকের আউটের হাওয়া লিটন দাসের ব্যাটে এসে লাগেনি। তিনি তার মতো খেলছিলেন। একশ’র বেশি স্ট্রাইক রেটে সেঞ্চুরি করা লিটন পরে আরও দ্রুত রান তুলতে থাকেন। কিন্তু ১০৫ বলে ১৩ চার ও দুই ছয়ে ১২৬ রান করার পরে পায়ের ইনজুরিতে পড়েন তিনি। রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে উঠে যান। তারপর  মোহাম্মদ মিঠুন এবং মাহমুদুল্লাহ দলের রান বাড়িয়ে নেন। কিন্তু সেঞ্চুরির পরে লিটনের হাত খোলা শট মিসের আক্ষেপ আছে দলের কিংবা ভক্তদের।

এর আগে লিটন দাস ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ১২১ রানের ইনিংস খেলেন লিটন দাস। এরপর ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৯৪ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন তিনি।

বাংলাদেশ দলের হয়ে মাহমুদুল্লাহ আউট হওয়ার আগে করেন ৩২ রান। মোহাম্মদ মিঠুন ৫০ রানের ইনিংস খেলে ফেরেন। তিনি পাঁচটি চারের সঙ্গে মারেন একটি ছক্কা। আর শেষটায় ছোট্ট একটা ঝড় দেখান ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেলা পেস অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন। তিনি ১৫ বলে তিন ছক্কায় করেন হার না মানা ২৮ রান। জিম্বাবুয়ের হয়ে ক্রিস এমপফু নেন ২ উইকেট।