বিশ্বকাপের আগে থেকেই কানাঘুষা শুরু, বিশ্বকাপের সময়ও কম কথা ওঠেনি তাকে নিয়ে। পাওয়ার প্লে ব্যাটিংয়ে নেমে 'ডট' বল বেশি খেলে অন্যদের চাপে ফেলে দিচ্ছেন। তারপরও নির্বাচকদের মুখে তাকে নিয়ে সেই আস্থার সুর- 'ও দেশ সেরা ওপেনার। রানে ফিরবেই ...। ভালো দিন আসবে ওর ...।' 

তামিম ইকবালকে নিয়ে বিশ্বকাপের সময় বলা নির্বাচকপ্রধান মিনহাজুল আবেদনী নান্নুর সেই 'ভালো দিন' এখনও যে এলো না। শেষ ১২টি ওয়ানডেতে তামিম ইকবালের ব্যাট থেকে এসেছে মোট ২৮০ রান। গড় ২৩ দশমিক ৩৩। আর স্ট্রাইকরেট! ৫৫ দশমিক ৫৫। দলের সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে তার রান-খরাকে 'সাময়িক ব্যাড প্যাচ' বলেই এড়িয়ে যাওয়া যায়, কিন্তু এই স্কোর যদি অন্য কারও বেলায় হতো, তাহলে নিশ্চিত নির্বাচকদের ছুরির নিচে পড়তেন।

শুধু 'অটো চয়েজ'-এর কোটার কারণেই কি এখনও এই পারফরম্যান্স কার্ড নিয়ে দিব্যি খেলে যাচ্ছেন তামিম ইকবাল? পারফরম্যান্সের বিচারে যদি মাশরাফিকে কাটাছেঁড়া করা যেতে পারে, সাঁইত্রিশ বছর বয়সের কারণে যদি তাকে 'অবসর' কবে নিচ্ছেন শুনতে হতে পারে, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে যদি টেস্ট থেকে বিশ্রামে পাঠানো যেতে পারে, তাহলে তামিম ইকবালের ২৩ গড় আর ষাটের নিচে স্ট্রাইক রেট দেখে প্রশ্ন করা যেতেই পারে- তামিম কি তার সেরা সময় ফেলে এসেছেন? 

ওয়ানডেতে তার সর্বশেষ সেঞ্চুরি ২৩ ম্যাচ আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ২০ মাস আগে ওই সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি সেন্ট কিটসে। এরপর ১শ'র ওপর স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছিলেন শুধু আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। বিশ্বকাপ থেকে এখনও পর্যন্ত বোল্ড হয়েছেন মোট পাঁচবার। বিশ্বকাপ থেকে এখনও পর্যন্ত তার হাফ সেঞ্চুরি মাত্র একটি। নটিংহ্যামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। সেদিনও তার স্ট্রাইক রেট ছিল ৮৩ দশমিক ৭৮। পাওয়ার প্লেতে ৪৮ শতাংশ ইনিংস তিনি ডট বল খেলেছেন, শেষ ১২টি ওয়ানডেতে তার ব্যাট থেকে কোনো ছক্কা আসেনি। বিশ্বকাপের পর শ্রীলংকা সফরে অধিনায়ক হিসেবে গিয়ে তিন ওয়ানডেতে রান করেছিলেন মাত্র ২১। রোববার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও রান-খরা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। ৪৩ বলে ২৪ রান করে এলবিডব্লিউ হয়েছেন, সঙ্গে একটি রিভিউও খরচ করেছেন।

কিন্তু প্রতিপক্ষ যখন জিম্বাবুয়ে, তখন হাতে থাকা বাকি দুটো ম্যাচে হয়তো বড় অঙ্কের দেখা পেতেও পারেন। তাছাড়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাটিংয়ের এই হাল হলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে কিন্তু দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন তিনি। সদ্যই বিসিএলে ৩৩৪ রান করেছেন। এখন দেখার অপেক্ষা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কবে কেক কাটার মতো রানে ফেরেন।