ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

ইমিউনিটি বাড়াতে ক্রিকেটারদের নির্দেশিকা

ইমিউনিটি বাড়াতে ক্রিকেটারদের নির্দেশিকা

ছবি: ফাইল

আলী সেকান্দার

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২০ | ০১:৩৯

তেল-চর্বি পরিহার, কাঁচা চিনি না খাওয়া, শর্করা জাতীয় খাবার পরিমিত- আরও কত রকমের নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয় খেলোয়াড়দের 'ডায়েট চার্টে'। সেগুলো অনুসরণ এবং কঠোর শারীরিক পরিশ্রম করেই তো শরীরকে ছিপছিপে রাখেন ক্রিকেটাররা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ঘরবন্দি জীবনেও পূর্বের খাদ্যাভ্যাসই বহাল রেখেছিলেন তারা। শনিবার থেকে সেই ক্রিকেটারদেরই বলা হয়েছে পুষ্টিকর খাবার বেশি বেশি খেতে। দৈনন্দিন রুটিনও নতুনভাবে সাজানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিসিবির মেডিকেল বিভাগ থেকে।

বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী জানান, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে ক্রিকেটারদের বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনাগুলো নিয়ম করে নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে ক্রিকেটারদের অনলাইন একটি গ্রুপে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুসরণ করেই ক্রিকেটারদের জন্য অবশ্য পালনীয় চার্ট তৈরি করেছে বিসিবি। করোনাভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে জোর দেওয়া হচ্ছে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার ওপর। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসকে প্রতিরোধ ও পরাস্ত করার একটাই পথ খোলা মানুষের সামনে- স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে নেওয়া।

খেলোয়াড়দের এজন্য যে কাজগুলো করতে হবে সে রকম কিছু নির্দেশনার কথা বললেন দেবাশীষ চৌধুরী, 'আজ (গতকাল) থেকে খেলোয়াড়দের জন্য মানসিক স্বাস্থ্যবিধি (মেন্টাল হেলথ টিপস) ও ইমিউনিটি সিস্টেম ডেভেলপে কিছু নির্দেশিকা জারি (সার্কুলেট) করছি ওদের অনলাইন গ্রুপে। প্রথমত; পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন রুটিন তৈরি করতে হবে খেলোয়াড়দের।

আগে যে নিয়মে চলেছে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নতুন রুটিন তৈরি করলে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সহজ হবে। ইউমিনিটি বাড়ানোর জন্য খাওয়া-দাওয়া করতে বলা হচ্ছে। ইউমিনিটি বাড়ে এমন খাদ্য খেতে হবে সবাইকে। নিয়মিত ব্যায়াম করতে বলা হচ্ছে। এই সময়ে মানসিকভাবে ভালো থাকাটা জরুরি। এজন্য করোনাভাইরাস সংক্রান্ত দিকনির্দেশনা পেতে বা তথ্য জানতে গ্রহণযোগ্য সূত্র বেছে নিতে হবে। বিশেষ করে সরকারি পোর্টালগুলো দেখতে বলা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম না দেখাই ভালো। ওখানে অনেক ধরনের ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য থাকে। যেগুলো মনের ওপর চাপ ফেলতে পারে। এ মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম না দেখাই ভালো।'

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, প্রতিদিন নিয়ম করে কমপক্ষে এক ঘণ্টা ব্যায়াম করতে হবে। খোলা মাঠে যেতে না পারলেও বাসার ভেতরে হলেও ব্যায়াম করতে হবে। জাতীয় দলের ট্রেনার 'ফিটনেস ওয়ার্কে'র নির্দেশিকা আগেই দিয়েছেন। মুমিনুল হক, মাহমুদুল্লাহ, তামিম ইকবালরা জানান, ট্রেনারের দেওয়া নির্দেশনা মেনে নিয়মিত ব্যায়াম করছেন তারা।

এ ব্যাপারে দেবাশীষ চৌধুরীর তালিকা অনুযায়ী ফলমূলের ভেতরে ভিটামিন সি জাতীয় ফল বেশি খাওয়া। লেবু, মালটা, কমলা, নাশপাতি, স্ট্রবেরি, পেঁপে, আনারস ও মৌসুমি ফল, ব্রুকলি, গাজর, শাকসবজি, অ্যাসপারাগাস, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, উদ্ভিজ্জ এবং প্রাণিজ প্রোটিন, বাদাম, ফ্রুুটস সালাদ, কফি, আইসক্রিম, চকলেট, বিস্কুট ইত্যাদি। এ ছাড়াও পর্যাপ্ত ঘুমাতে বলছেন বিসিবির এই চিকিৎসক।

তিনি জানান, দিনে আট থেকে ১০ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে ইমিউনিটি বাড়াতে। পাশাপাশি ধূমপান পরিহার করতে বলা হচ্ছে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ এখন পর্যন্ত তৈরি হয়নি। বিজ্ঞানীরা প্রাণপণ লড়াই করে গেলেও প্রতিষেধক তৈরি করতে পারেননি। ছোঁয়াচে এই ভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা ও ব্যক্তিগত জীবনযাপনে পরিবর্তন আনাই মহৌষধ। সরকারি নির্দেশনা জারি হওয়ার পর থেকে ক্রিকেটাররা খেলার মাঠে আসা ছেড়ে দিয়েছেন। বেশিরভাগ ক্রিকেটারের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, পরিবার নিয়ে নিরাপদে এবং ভালো আছেন তারা।

আরও পড়ুন

×