দুঃসময়ে ছোট জিনিসও বড় হয়ে ধরা দেয়। করোনাভাইরাসের মহামারি সময়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের কিছু ক্রিকেটারের মনে এই সমস্যা প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। মহামারির কারণে বিকল্প রোজগারের সব পথ বন্ধ থাকায় ক্লাব থেকে টাকা না পাওয়া খুব কষ্ট দিচ্ছে তাদের।

আর্থিক সংকটে পড়ে কিছুটা হতাশার ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন ব্রাদার্স ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ক্রিকেটাররা। ক্লাব থেকে বলা হচ্ছে চেক দেওয়া আছে, টাকা পেয়ে যাবে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বিষয়টি জানালেও বিরূপ পরিস্থিতির কারণে তেমন কিছু করতে পারছে না।

ব্রাদার্স ইউনিয়নের ম্যানেজার আমের খান স্বীকার করেছেন, বেশিরভাগ খেলোয়াড়কেই চুক্তির নূন্যতম টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, 'আমরা বেশিরভাগ খেলোয়াড়কে ৭০ শতাংশ টাকার চেক দিয়ে রেখেছি। কেউ কেউ নগদ টাকাও নিয়েছেন। ২৫ মার্চ চেক জমা দেওয়ার কথা ছিল। ১৮ মার্চ থেকে খেলা বন্ধ হওয়ায় এবং করোনাভাইরাসের কারণে যে স্পন্সর থেকে টাকা পাব, সেটা পাওয়া যায়নি। এখন যে পরিস্থিতি, তাতে টাকা দেওয়া সম্ভব হবে না। খেলা শুরু করা যাবে কিনা, সেটাই তো কেউ জানে না। খেলোয়াড়দেরও ক্লাবের পরিস্থিতি বুঝতে হবে। দেশের পরিস্থিতি ভালো হলে টাকা অবশ্যই পাবে।'

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জুনায়েদ সিদ্দিকী ছাড়া ব্রাদার্স বাকি ক্রিকেটারদের নগদ টাকা দেয়নি। লিগের অন্য দলের খেলোয়াড়রা যখন চুক্তির একাংশ টাকা পেয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে আছেন, ব্রাদার্সের ক্রিকেটাররা তখন আর্থিক অনটনে হতাশাগ্রস্ত। 

শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাইনিং মানি হিসেবে লিগ শুরুর আগে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল সবাইকে। ১৮ মার্চ থেকে লিগ বন্ধ হয়ে গেলেও আর কোনো টাকা দেওয়া হয়নি ইলিয়াস সানি, নুরুল হাসান সোহান, সোহরাওয়ার্দী শুভদের। গতকাল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফয়েসের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'আমরা চেক দিচ্ছি ক্রিকেটারদের। আগেও টাকা দিয়েছি। এই পরিস্থিতিতে ক্লাবও তো সমস্যায় আছে। ইচ্ছা থাকলেও সব সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না। তবে আমরা চেষ্টা করছি।'

শেখ জামাল চুক্তি অনুযায়ী ৫০ থেকে শুরু করে দুই লাখ টাকার চেক দিচ্ছে খেলোয়াড়দের। ১৫ জুনের আগে চেক নগদ করা যাবে না। ক্লাব কর্মকর্তাদের এই নিয়ম পছন্দ হয়নি ক্রিকেটারদের। তারা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ঈদের আগেই কিছু টাকা পাওয়ার চেষ্টা করছেন। শেষ পর্যন্ত সমঝোতা না হলে চেক নাও নিতে পারেন ক্রিকেটাররা।

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ১২টি ক্লাবের বাকি ১০টি চুক্তির একটি সম্মানজনক অংশ ক্রিকেটারদের দিয়েছে। শাইনপুকুরের কোচ তালহা যোবায়ের বলেন, 'আমাদের ক্লাব থেকে ২৫ শতাংশ টাকা দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ ক্রিকেটারদের ব্যাংকে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। খেলোয়াড়রা খুশি, আমরাও খুশি।' যদিও শাইনপুকুরের একাধিক ক্রিকেটার বলছেন, ক্লাব থেকে প্রত্যাশিত সম্মানী দেওয়া হয়নি তাদের। খেলোয়াড়দের দিক থেকে অভিযোগ, লিগের খেলা বন্ধ হওয়ায় ক্লাব কর্মকর্তারা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা তো লিগে খেলব। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ দিয়েই তো মৌসুম শুরু হবে।