গত মার্চে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস রোগী শনাক্তের পর বন্ধ হয়ে যায় সবকিছু। অঘোষিত লকডাউনে পুরো দেশ। পুরো বিশ্বের মতো স্থবির হয়ে যায় বাংলাদেশও। বন্ধ হয়ে যায় সব ধরনের খেলাধুলা। বৈশ্বিক মহামারির কারণে ইতোমধ্যে ঘরোয়া ফুটবলের চলতি মৌসুম বাতিল হয়ে গেছে। স্থগিত হয়ে আছে প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ। ঝুলে আছে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমসও। মাঠের খেলা তো দূরের কথা, করোনার কারণে ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোতে পড়ে যায় তালা। তবে বিভিন্ন ফেডারেশন তাদের কর্মকাণ্ডগুলো অনলাইনে চালিয়ে যায়। অবশেষে খুলল বন্ধ দুয়ার। টানা ৬৬ দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল থেকে খুলেছে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান।

এরই ধারাবাহিকতায় রোববার থেকে খুলতে শুরু করেছে ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোও। মাঠের খেলা কবে শুরু হবে তা অজানা থাকলেও অসম্পন্ন কাজগুলো সম্পন্ন করতে খুলেছে বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশন, বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশন। আর করোনার কারণে অফিস বন্ধ থাকলেও বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ), বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে), বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেও (বিসিবি) কর্মকাণ্ড অনলাইনে চলে আসছে। এদিন বাফুফে এবং বিওএ অফিস খুললেও, খোলেনি বিসিবি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেই অফিস খুলতে চায় ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

অফিস বন্ধ থাকলেও করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অসহায়-দুস্থদের এক বেলা খাবার দিয়ে আসছিল বাফুফে। আর সাবেক ফুটবলার গোলাম রব্বানী হেলালের জানাজার জন্য শনিবারই খোলা হয়েছিল বাফুফের প্রধান ফটক। অনেক দিন পর অফিস খুলেছে বলে গতকাল সকাল থেকেই বাফুফে ভবনের চারপাশে স্প্রে করা হয়। ভেতরের গেটে ঢোকার সামনে অবস্থিত অভ্যর্থনা কক্ষে থাকা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে ভবনে প্রবেশ করেছেন অফিসের স্টাফরা। অনেকে পিপিই পরে এসেছেন।

সবার মুখে ছিল মাস্ক, হাতে গ্লাভস। স্বাস্থবিধি মেনে অফিস খুললেও সবাই একসঙ্গে অফিস করেননি। সামাজিক দূরত্বের কথা মাথায় রেখে অফিসের ফিফটি পার্সেন্ট স্টাফ কাজে যোগ দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে বাফুফে সাধারন সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ বলেন, 'সরকারি নির্দেশনা মেনে আমরা অফিস খুলেছি। তবে শুরু থেকে আমাদের সব কর্মীকে অফিস বাধ্যতামূলক করিনি। আমরা রোটেশন অনুযায়ী অফিস শিডিউল করেছি। করোনার মধ্যেও আমাদের কাজে কোনো সমস্যা হয়নি। এখন যে বিভাগের কাজ জরুরি তারাই অফিসে আসছেন।'

বাফুফের মতো একই পন্থা অবলম্বন করে অফিস খুলেছে বিওএ। তবে অফিস স্টাফ ছাড়া বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের কোনো কর্মকর্তা এদিন আসেননি। যদিও যাদের বেশি প্রয়োজন, তারাই অফিসে আসছেন বলে জানিয়েছেন বিওএ মহাসচিক সৈয়দ শাহেদ রেজা, 'আমাদের কাজগুলো হচ্ছে অনলাইনে। আজ (রোববার) অফিস খুলেছে। যাদের প্রয়োজন তারাই অফিস করছে। পরিস্থিতি আরও উন্নতি হলেই আমরা বাংলাদেশ গেমসসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করব।'

সব খুলে দেওয়ার প্রথম দিনে কিছু সময়ের জন্য খোলা হয়েছে হ্যান্ডবল ফেডারেশন। তবে ফেডারেশনের কোনো কর্মকর্তারা যাননি। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান কোহিনুর বলেন, 'অফিস খোলার দিনে কিছু সময়ের জন্য স্টাফরা অফিস খুলেছেন। বেশিক্ষণ খোলা রাখা হয়নি। আস্তে আস্তে আমরা অফিসে যাব। কারণ আমাদের কিছু কাজ ঝুলে আছে। যেমন করোনার সময় অসহায় দুস্থ হ্যান্ডবল খেলোয়াড়দের সাহায্য করতে চাই আমরা। আর এখনই কোনো প্রতিযোগিতা শুরুর চিন্তাভাবনা করছি না। পরিস্থিতি দিন দিন তো খারাপ হচ্ছে।'