- খেলা
- থেমে আছে আকবরদের উত্তরসূরির খোঁজ
থেমে আছে আকবরদের উত্তরসূরির খোঁজ
ছবি: ফাইল
সেই যেদিন নারী ক্রিকেট দল এশিয়া কাপ জিতে এলো, সেদিন দেশের মানুষের মুখে ছিল প্রাপ্তির আনন্দ। কতজনের মুখে শোনা, 'হোক না মেয়েদের এশিয়া কাপ, শিরোপা তো এসেছে।' মাশরাফি বিন মুর্তজারা যে বিকেলে ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপ জিতল আয়ারল্যান্ডের মাটিতে, সেদিনও খুশি ছড়িয়ে পড়েছিল ৫৫ হাজার বর্গমাইলে। আর যেদিন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল, সেদিন সকলে হেসেছিল পরিতৃপ্তির হাসি। সে তো বেশিদিন আগের কথা নয়।
এ বছর ৯ ফেব্রুয়ারি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন দলের স্বীকৃতি এলো। তাতেই বেড়ে গেছে স্বপ্নের পরিধি। কর্মকর্তাদের মুখে শোনা, 'এই শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব বেড়ে গেল বিসিবির।' চ্যাম্পিয়ন দলের মর্যাদা নিয়ে শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ নিয়ে খেলতে হবে পরের বিশ্বকাপে। হোক তা দুই বছর পর। এখন থেকে পরিকল্পনা করলে চলবে কেন। করোনাকালেও তাই থেমে থাকেনি বিসিবি গেম ডেভেলপমেন্টের ২০২২ যুব বিশ্বকাপ ভাবনা। গেম ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার আবু ইমাম মোহাম্মদ কাওসার জানান, পরের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ দলের প্রস্তুতি করতে অন্তত ৩০টি ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেইমতো কাজও এগিয়ে রাখছেন তারা।
বিসিবি মাঠ পর্যায়ের পরিকল্পনায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনাভাইরাসের বিশ্বের মহামারি। এতদিনে হয়তো খেলোয়াড় বাছাই করে প্রাথমিক একটা দলও করে ফেলা সম্ভব হতো। যুব ক্রিকেট লিগের তিন দিনের ম্যাচের লিগ সম্পন্ন করে রেখেছে গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগ। মার্চের শেষের দিকে সিলেটে শুরু হওয়ার কথা ছিল ওয়ানডে টুর্নামেন্ট। সেটা আর সম্ভব হয়নি। দেশের পরিস্থিতি ভালোর দিকে গেলে সবকিছু দ্রুত করতে হবে বলে জানান কাওসার, 'পরিকল্পনা পর্যায়ের কাজগুলো করা আছে। করোনা পরিস্থিতি ভালো হলে মাঠের কাজগুলো করতে হবে। কম সময়ের মধ্যে হয়তো বেশি খেলা ফেলতে হবে। আশা করি পরিস্থিতি অনুকূলে এলে করা যাবে।'
করোনাভাইরাস যেভাবে প্রভাব বিস্তার করে রেখেছে, তাতে করে প্রান্তিক পর্যায়ের ক্রিকেট আগামী তিন-চার মাসে শুরু করা নাও যেতে পারে। ২০২০ সালের বাকি সময় বয়সভিত্তিক খেলা না হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। সেক্ষেত্রে যুব বিশ্বকাপের দল প্রস্তুত করতে এক বছর সময় পাবে বিসিবি। ২০২১ সালে ৩০টি ম্যাচ খেলা কঠিন হয়ে পড়বে একটি নতুন দলের জন্য। এ ছাড়া ফিটনেস এবং স্কিল নিয়েও কাজ করতে হবে কোচিং স্টাফকে।
ছেলেদের দল হিসেবে গড়ে তোলারও চ্যালেঞ্জ থাকবে টিম ম্যানেজমেন্টের জন্য। এই বাস্তবতা স্বীকার করছেন বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্টের ম্যানেজার কাওসার, 'একটা চাপ তৈরি হতে পারে। এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। এ জন্যই খুব ভেবেচিন্তে পরিকল্পনাগুলো করা। আমরা ২০২১ এবং ২০২২ সালে দেশে এবং দেশের বাইরে খেলাগুলো রাখছি। যাতে ৩০টি ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেওয়া সম্ভব হয় সেভাবে অন্য বোর্ডগুলোর সঙ্গে কাজ এগিয়ে নেওয়া হয়েছে।'
যুব দলের নির্বাচক হান্নান সরকারও মনে করেন এক বছর একটা দলকে সর্বোচ্চ মানে নিয়ে যেতে যথেষ্ট সময় নয়। তার মতে, 'এই পরিস্থিতি না হলে এতদিনে দল গোছানো হয়ে যেত। দেড় বছর ধরে একটা দল গড়ে তোলা হয়। এরই মধ্যে ছয় মাস চলে গেছে। এ বছর খেলা না করা গেলে হাতে থাকবে এক বছর। ওই সময়ের ভেতর দল প্রস্তুত করে পর্যাপ্তসংখ্যক ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেওয়া কঠিন হবে।' তবে আশার কথা, প্রতিটি দেশই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতি ভালো হলে দ্রুতই হয়তো মাঠে দেখা যাবে যুবাদের খেলা।
মন্তব্য করুন