বিতর্ক থেকে সতর্ক সাকিব
-samakal-6524c6503c18f.jpg)
ছবি- ক্রিকইনফো
সেকান্দার আলী, ধর্মশালা থেকে
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৩ | ০৩:৩৪ | আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৩ | ০৯:৪২
একদিকে খোলস ছেড়ে বের হলে অন্যদিকে খোলসবন্দি হওয়ার একটা চল রয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে। এই নিয়মটা সাকিব আল হাসান অধিনায়ক হওয়ার পর থেকে বেশি চর্চিত। যেটা কখনও কখনও সমালোচনার জন্ম দিচ্ছে। আসলে সাকিব সব সময় নিজের চারপাশটা বিতর্কের চাদরে মুড়িয়ে রাখতে ভালোবাসেন।
বিশ্বকাপের আগে থেকে যার সূত্রপাত। বিতর্কিত সাক্ষাৎকার দেওয়া, বিশ্বকাপ খেলতে এসে মিডিয়ার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি; সবই তো পরিকল্পিত। বাংলাদেশ অধিনায়কের এই উল্টো রথের যাত্রী হওয়া কারও কাছে বিরক্তিকর হলেও তাঁর কাছে ভালো খেলার রসদ। সাকিব নিজে যাকে বলেন ‘কিক’। আফগানিস্তানের বিপক্ষে মরিয়া হয়ে খেলা এবং বড় জয় তুলে নেওয়া সে পরিকল্পনারই অংশ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও যেটাকে পুঁজি করতে চান তিনি।
বিশ্বকাপে ঢোকার পর থেকে অধিনায়ক সাকিব এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি মিডিয়ার মুখোমুখি হননি। আফগানদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। জয়ের পরও অধিনায়কের দেখা মেলেনি। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনে দলীয় প্রতিনিধি হলেন স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ। যাঁর বসবাস ভীতির রাজত্বে। গতকালের সংবাদ সম্মেলনে ম্যাচের প্রস্তুতি নিয়ে কত কি-ই না জানার ছিল সাংবাদিকদের। অনেক প্রশ্নও হলো। কিন্তু উত্তর এলো ‘অশ্বডিম্ব’।
ধর্মশালায় প্রথম ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা থেকে দ্বিতীয় ম্যাচের একাদশে একজন অতিরিক্ত বোলার নেওয়া হবে কিনা, জানতে চাওয়া হলে হেরাথ বলেন, ‘ষষ্ঠ বোলার খেলানোর বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করছে কন্ডিশন এবং নির্বাচক ও কোচ-অধিনায়কের ওপর। তারা আলোচনা করে কাল সিদ্ধান্ত।’
বিশ্বকাপের সংবাদ সম্মেলনে এ রকম যত প্রশ্ন হলো হেরাথের উত্তর ছিল– ধরি মাছ না ছুঁই পানি। জাতীয় দলের ম্যানেজার রাবীদ ইমামকে এ নিয়ে শেষ পর্যন্ত মিডিয়ার সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে।
ধর্মশালায় এমনিতেই বিতর্ক তুঙ্গে। হিমাচল প্রদেশের এ ভেন্যুর আউটফিল্ড নিয়ে সমালোচনা করেন ধারাভাষ্যকাররা। গত দু’দিন ধরে সংবাদ সম্মেলনেও প্রশ্ন হচ্ছে। ইংলিশরা সরাসরি উত্তর দিলেও হেরাথ চেপে গেলেন। যদিও গতকাল ফিল্ডিং অনুশীলনে গলদঘর্ম হতে হয়েছে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের। ভেজা আউটফিল্ড। ওপর থেকে সবুজ দেখালেও মাঠজুড়েই ক্ষত। অসমান জমিনে বল পড়ে বাঁক বদল করে। চোটে পড়ার ঝুঁকি নিয়ে খেলতে হচ্ছে ক্রিকেটারদের।
যদিও বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা এ নিয়ে কোনো আপত্তি করেননি। তারা ফোকাস করছেন খেলার মাঠে। বিশ্বকাপ চলাকালে সবকিছু থেকে নিজেদের দূরে রেখে জয়ের পর জয় লিখতে চান রেকর্ডবুকে। কারণ সাকিবরা স্বপ্নের রঙে রাঙাতে চান ভারত বিশ্বকাপ। খেলতে চান সেমিফাইনাল। এ জন্য চার থেকে পাঁচটি ম্যাচ জিততে চান হাথুরুসিংহে। সাকিব এগোতে চান ধাপে ধাপে– এক একটি ম্যাচ জিতে।
টুর্নামেন্টের শুরুটা ভালো হওয়ায় দ্বিতীয় ম্যাচ ঘিরেও আশার রেণুরা ওড়াউড়ি করছে। যেটা থেকে জয়ের ফুল ফোটাতে চান সাকিবরা। এ জন্য প্রধান কোচ হাথুরুসিংহে ও অধিনায়ক আঁটঘাঁট বেঁধে গেম প্ল্যান করেছেন। এর প্রতিফলন আজ দেখা যেতে পারে হিমাচলের ধলাধারে। আর এ ম্যাচ জিতে গেলে সেমিফাইনালের পথে এক পা দেওয়া হবে টাইগারদের। ধর্মশালায় খেলা দেখতে আসা বিসিবি পরিচালকদের বিশ্বাস, আজ আরেকটি জয়ের দামামা বাজবে পাহাড়ের পাদদেশে।