২০ এপ্রিল হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন। করোনা মহামারির কারণে ফিফা ও এএফসির অনুমতি সাপেক্ষে নির্বাচন স্থগিত করে বাফুফে। নির্বাচন হওয়ার আগ পর্যন্ত কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটিকে দায়িত্ব চালিয়ে যেতে বলে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। আর বৈশ্বিক মহামারির পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন আয়োজন করতে মানা ছিল ফিফার। তবে আস্তে আস্তে সব খুলে দিয়েছে সরকার। সোমবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে খেলাধুলা শুরু করতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একদিন পরই নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করেছে বাফুফে। মঙ্গলবার কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩ অক্টোবর হোটেল সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের বার্ষিক সাধারণ সভা ও নির্বাচন।

নির্বাচনকে সামনে রেখে অনেক দিন ধরেই কার্যক্রম শুরু করে বাফুফে। কাউন্সিলরদের নামও চূড়ান্ত করেছে ঘরোয়া ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। মঙ্গলবার নির্বাহী কমিটির মিটিংয়ে মোট ১৩৯ জন ডেলিগেটকে চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভায় সশরীরে উপস্থিত ছিলেন ১৩ জন এবং অনলাইনে যুক্ত ছিলেন মোট পাঁচজন। সবার সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে নির্বাহী কমিটির মিটিং শেষে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন বাফুফে সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী এমপি, 'ফিফা আমাদের পরামর্শ দিয়েছিল যে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নির্বাচন করতে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, ফিফাকে আবারও চিঠি দেব। তার পরও আজ আমরা নির্বাহী কমিটির মিটিংয়ে বসেছি নির্বাচনকে সামনে রেখে। সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বলব না প্রাথমিকভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, ৩ অক্টোবর সোনারগাঁও হোটেলে সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে।'

বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটির মিটিংয়ে শুধু নির্বাচনীই এজেন্ডাই নয়, পেশাদার লিগ, ফিফার করোনা তহবিল, ২০২০-২১ সালের বাজেট এবং অডিট রিপোর্ট নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ফিফা থেকে অনুদান হিসেবে মোট দেড় মিলিয়ন ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। এই অর্থের মধ্যে হাফ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হবে নারী ফুটবলে এবং বাকি এক মিলিয়ন জেলা বিভাগীয় ফুটবলসহ অন্যান্য খাতে করা হবে। আর মঙ্গলবারের মিটিংয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ২০২০-২১ সালের জন্য বাজেটও। এই প্রসঙ্গে সালাম মুর্শেদী বলেন, '২০২০-২১ সালের জন্য আমাদের মোট বাজেট ধরা হয়েছে ৫১ কোটি ৪৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। যাতে ব্যয় হবে ৫২ কোটি ৩১ লাখ টাকা। আমাদের ঘাটতি আছে ৮৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এভাবে খসড়া বাজেট আমরা অনুমোদন করেছি আর কংগ্রেসে চূড়ান্তভাবে এটার অনুমোদন হবে।' 

মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে পেশাদার লিগ নিয়েও। করোনার কারণে লিগ বাতিল হলেও এখনও অনেক ফুটবলারই তাদের বকেয়া পাওনা পাননি ক্লাবগুলো থেকে। এই ইস্যু এবং লিগ শুরু করা নিয়ে কয়েকবারই বাফুফে সভাপতি সালাউদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন সিনিয়র ফুটবলাররা। তখন সালাউদ্দিন বলেছিলেন ক্লাবগুলোর সঙ্গে বসবেন। এদিন একই কথা বলেছেন মুর্শেদী, 'আমরা ক্লাবগুলোকে নিয়ে বসব। গত বছর লিগ না হওয়ায় অনেক খেলোয়াড় পুরোপুরি অর্থ পায়নি। আমি মনে করি পরবর্তী লিগ এবং দলবদল বসার আগে আমি ক্লাবগুলোকে নিয়ে বসতে চাই।'