কলকাতাকে পাশে পাবে কি সাকিবরা

ছবি: ফাইল
সেকান্দার আলী, কলকাতা থেকে
প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৩ | ০৪:৪৮
ইডেন গার্ডেন্সে প্রবেশ করার পর যে স্মৃতি সবার আগে চোখের সামনে ভেসে উঠেছে, তা হলো দর্শক। দেশের সবচেয়ে কাছের আর ভাষার দিক থেকে শতভাগ মিল থাকা সত্ত্বেও অতীতে ইডেনের গ্যালারি সেভাবে সাড়া দেয়নি বাংলাদেশকে। বিস্ময়কর মনে হলেও অভিজ্ঞতা এমনই । ২০১৬ সালের টি২০ বিশ্বকাপ কাভার করতে আসা সবাইকে এ অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে।
মাশরাফি বিন মুর্তজাদের ম্যাচ খেলতে হয়েছিল হাজার হাজার পাকিস্তানি সমর্থকের সামনে। আসলে কোনো দিক থেকেই কলকাতায় ভালো অভিজ্ঞতা নেই বাংলাদেশের। সাত বছর আগে কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের কাছে নাকাল হতে হয়েছে। ২০১৯ সালে গোলাপি বলের টেস্টের কথা কোনোদিন ভোলার নয় লিটন কুমার দাসদের।
মোহাম্মদ শামিদের বলের আঘাতে চোটজর্জর ছিলেন তারা। এক টেস্টে দুটি কনকাশন সাব নামাতে হয়েছিল রাসেল ডমিঙ্গোকে। সেই ইডেন এবার কি বাংলাদেশ দলকে দু’হাত ভরিয়ে দেবে? কাল কি নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জিততে পারবেন সাকিবরা? এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে শনিবার। কিন্তু সমর্থকদের তো ততক্ষণ অপেক্ষা করার সময় নেই। নেদারল্যান্ডস ও পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় দেখতে কলকাতায় এসেছেন তারা। কারণ, বিশ্বকাপে ঘুরে দাঁড়ানোর এটাই তো শেষ সুযোগ সাকিবদের।
বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচ খেলে মাত্র এক জয় বাংলাদেশের। পরাজয়ের ভারে ক্লান্ত ক্রিকেটাররা। এই অভিসম্পাত থেকে মুক্তির খোঁজ করছেন ক্রিকেটাররা প্রিয় কলকাতায়। যে কলকাতার সঙ্গে সাকিবের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। আর বাংলাদেশের মানুষের আছে আবেগ জড়িয়ে। বুড়িগঙ্গাপাড়ের মানুষ গঙ্গাপাড়ে বিজয় উল্লাসে মাততে চান। সে বিজয় উপহার দিতেই তো সাকিবের এভাবে প্রস্তুত হওয়া। দেশে ফিরে নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সঙ্গে মিরপুরে ব্যাটিং অনুশীলন করা।
মুম্বাই থেকে কলকাতায় পৌঁছানোর পরদিন ক্রিকেটারদের মাঠে নেমে পড়াও তো একাগ্রতার বার্তা দেয়। যদিও গতকাল সন্ধ্যার অনুশীলন ছিল ঐচ্ছিক। কিছুটা আমরা সবাই রাজা আমাদেরই এই রাজার রাজত্বের মতো। প্রস্তুতিতে ক্রিকেটারদের উপস্থিতির হার তাই বলে। ইডেনের প্রথম অনুশীলনে উপস্থিত ছিলেন মাত্র আট ক্রিকেটার। মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাজমুল হোসেন শান্তরা নিজেদের ফিরে পেতে ঘাম ঝরালেও লিটন কুমার দাসরা ছিলেন হোটেলে। ‘মুম্বাই সেঞ্চুরিয়ান’ মাহমুদউল্লাহকেও অনুশীলনে দেখা যায়নি।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে এসে সাকিব বলেছিলেন, সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি। শেষের পাঁচ ম্যাচ জিতলেই বাজিমাত করা হবে। সেই পাঁচ জয়ের একটি কাটা পড়েছে ১৪৯ রানের বিশাল পরাজয়ে। কাগজে-কলমে এখনও সেমির সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি। নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারলে পাঁচ জয়ে ১০ পয়েন্ট অর্জনে বেঁচে থাকবে সেমির আশা!
সাকিব তো বলেছেনই, অন্যরা হেরে তাদের সুযোগ করে দিচ্ছে। নিজেরা নিজেদের সহযোগিতা করার কথা বলেছিলেন তিনি। যদিও সেটা তারা করতে পারছেন না। এরপরও সাকিবরা প্রেরণা খুঁজতে পারেন পয়েন্ট টেবিল থেকে। কারণ পয়েন্ট টেবিলে তাদের নিচেও দুটি দল রয়েছে। সে তো যেনতেন দল নয়– বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস। গতকাল শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে স্লিপ করেছে ইংলিশরা। বাংলাদেশ কাল নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জিতলেই জাম্প করবে। সেদিক থেকে বলাই যায়, বিশ্বকাপের নাটক জমার বাকি এখনও।