লিগ বাতিলে ক্লাবগুলো একজোট!

ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২০ | ১২:০০
করোনায় অনিশ্চিত গন্তব্যে বিশ্ব ফুটবল। ইউরোপিয়ান লিগগুলো নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি। বৈশ্বিক মহামারির প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় ডাচ্ লিগ বাতিল করেছে দেশটির ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা। করোনাভাইরাসের থাবায় এলোমেলো দেশের ফুটবলও। আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত ক্লাবগুলো। প্রিমিয়ার লিগের ১৩টি ক্লাবকে কোনো না কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান পৃষ্ঠপোষকতা করে। কিন্তু করোনার কারণে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ের পথ বন্ধ। এই অবস্থায় ক্লাবগুলো পড়েছে মহাসংকটে। সংকট আরও বেশি বিদেশি ফুটবলার ও কোচিং স্টাফদের বসে বসে বেতন দিচ্ছে বলে। তাই পেশাদার লিগের অধিকাংশ ক্লাবই চাচ্ছে এবারের মৌসুম বাতিল হোক। বসুন্ধরা কিংস, সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, আরামবাগ, রহমতগঞ্জ, মুক্তিযোদ্ধা, ব্রাদার্স ইউনিয়নের মতো ক্লাবগুলো লিগ বাতিলের সিদ্ধান্তটি আজ পেশাদার লিগ কমিটির মিটিংয়ে তুলতে যাচ্ছে। শনিবার অনলাইনে লিগ কমিটির মিটিং থেকে যে কোনো সিদ্ধান্ত আসতে পারে। নিজ নিজ অবস্থান থেকে ক্লাবগুলোর কর্তারা তাদের মতামত জানাবেন। তবে লিগ বাতিলের মতো সিদ্ধান্ত এখনই নিতে চায় না পেশাদার লিগ কমিটি। তারা আগে ক্লাবগুলোর দাবি-দাওয়া শুনতে চায়।
আগের সূচি অনুযায়ী প্রিমিয়ার লিগ শেষ হওয়ার কথা ছিল জুলাইয়ে। গত মার্চে বাংলাদেশে করোনা রোগী শনাক্তের পর স্থবিরতা নেমে আসে ক্রীড়াঙ্গনে। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায় ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসরটি। ক্লাবগুলো ক্যাম্প বাতিল করে ফুটবলারদের ছুটি দিলেও বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের আকাশপথের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আটকে যায় বিদেশিরা। খেলা না থাকলেও তাদের ক্লাবে কিংবা অ্যাপার্টমেন্টে রাখতে হচ্ছে; যা আর্থিকভাবে ক্লাবগুলোকে আরও ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়েছে। আবার বিদেশিদের সঙ্গে মৌসুমভিত্তিক চুক্তি হওয়ায় আরও বিপাকে তারা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন থেকেও লিগ স্থগিত কিংবা বাতিলের চূড়ান্ত রূপরেখা পাচ্ছে না ক্লাবগুলো। এ অবস্থায় লিগ বাতিল করে নতুন মৌসুমের জন্য উইন্ডো ঘোষণা করা হলে সবার জন্য সুবিধা হবে বলে মনে করেন বসুন্ধরা কিংস সভাপতি ইমরুল হাসান, 'বাস্তবতার কথা যদি বলতে চাই, তাহলে লিগ খেলার মতো অবস্থানে নেই ক্লাবগুলো। করোনা পরিস্থিতির কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। আপনি জানেন যে প্রতিটি ক্লাবই কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের অধীনে। এই অবস্থায় অধিকাংশ ক্লাবের পক্ষেই লিগে খেলা কঠিন হয়ে যাবে। লিগ খেলতে হবে; এমনটা চাপিয়ে দিলে তো হবে না। আপনাকে অবশ্যই ক্লাবগুলোর অবস্থা বুঝতে হবে। আমার সঙ্গে কয়েকটি ক্লাবের কথা হয়েছে, তারাও লিগ খেলতে চায় না। আমরা চাচ্ছি, এই মৌসুম বাতিল করে নতুন মৌসুমের জন্য উইন্ডো ঘোষণা করা হোক।' বিদেশিদের নিয়ে মহাসংকটে থাকার কথাও বলেছেন ইমরুল, 'লিগ হোক বা না হোক, এটার একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দু-তিন দিনের মধ্যে দিয়ে দিক বাফুফে। যদি লিগ চার মাসের জন্য স্থগিত হয় কিংবা বাতিল হয়, যেটাই হোক না কেন, তখন আমরা বিদেশিদের সঙ্গে বসতে পারব। তখন তাদের একটা ব্যবস্থা করতে পারব। এখন যেহেতু ঝুলে আছি, আমরা তো তাদের সঙ্গে ওইভাবে কথা বলতে পারছি না। আমার কোচ ও খেলোয়াড়দের বসে বসে বেতন দিতে হচ্ছে।' অনেকেই বলেছেন দেশিদের নিয়ে লিগ করতে। তা করতে হলে আবার নতুন করে লিগ শুরু করার দাবি কিংস সভাপতির।
বসুন্ধরা কিংসের মতো আরেকটি বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানের ক্লাব হলো সাইফ স্পোর্টিং। ক্লাবটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির উদ্দিন চৌধুরী অনেক ক্যালকুলেশন করে দেখেছেন যে, এই মৌসুমে আর লিগ হওয়ার সম্ভাবনা নেই, 'আপনি দেখেন ইউরোপের লিগগুলোর ৮০ ভাগ খেলা হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে আমাদের এখনও ৮০ ভাগের মতো বাকি। প্রতিটি ক্লাব পাঁচ-ছয়টি করে ম্যাচ খেলেছে। এখনও আপনার বাকি আছে স্বাধীনতা কাপ। করোনার যে ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে করে এই মৌসুম করতে পারবেন না। আমি বিভিন্ন ক্যালকুলেশন করে দেখেছি যে, কোনোমতেই এই মৌসুমটা চালু রাখা সম্ভব নয়। আর লিগ যে হবে না, এটা মোটামুটি আমাদের মধ্যে একটা ধারণা চলে এসেছে।' দু-একটি ক্লাব ছাড়া বাকি ক্লাবগুলোর আর্থিক অবস্থা আরও নাজুক বলে জানান নাসির, 'আমরা বড় বড় ক্লাবগুলো এই অবস্থায় হিমশিম খাচ্ছি। ছোট ক্লাবগুলোর অবস্থা তো আরও খারাপ। আপনি দেখেন, মোহামেডান, ব্রাদার্স, আরামবাগ এসব দলকে কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সাপোর্ট দেবে? কারোই তো আয় হচ্ছে না। আর লিগ বাতিলের চিন্তা নিয়েই আমরা মিটিংয়ে যাচ্ছি।'
লিগ বাতিলের মতো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনই জানাতে নারাজ ঢাকা আবাহনীর ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রূপু। তার কথায়, সবাই চাইলে লিগ বাতিলে আবাহনীর কোনো আপত্তি থাকবে না, 'আসলে আমরা বিদেশিদের নিয়ে একটা চিন্তায় আছি। এখন একটা সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। সবাই যদি লিগ বাতিল চায়, আমাদেরও তাতে কোনো আপত্তি থাকবে না। তখন আমরা আমাদের বিদেশিদের নিয়ে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব।' মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের পরিচালক সারোয়ার হোসেন তো বলেই দিলেন, লিগ অলরেডি বাতিল হয়ে গেছে। তবে পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান ও বাফুফে সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদি মনে করেন, মৌসুম শেষ করা সম্ভব, 'ক্লাবগুলো তো ইনভেস্ট করেছে। আমি মনে করি, তারা লিগ বাতিল করার মতো সিদ্ধান্ত নেবে না। কারণ, একটা মৌসুম বাতিল করা যেনতেন ব্যাপার নয়। আমরা আগে সবার কথা শুনব, তারপর একটা সিদ্ধান্ত নেব।'
আগের সূচি অনুযায়ী প্রিমিয়ার লিগ শেষ হওয়ার কথা ছিল জুলাইয়ে। গত মার্চে বাংলাদেশে করোনা রোগী শনাক্তের পর স্থবিরতা নেমে আসে ক্রীড়াঙ্গনে। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায় ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসরটি। ক্লাবগুলো ক্যাম্প বাতিল করে ফুটবলারদের ছুটি দিলেও বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের আকাশপথের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আটকে যায় বিদেশিরা। খেলা না থাকলেও তাদের ক্লাবে কিংবা অ্যাপার্টমেন্টে রাখতে হচ্ছে; যা আর্থিকভাবে ক্লাবগুলোকে আরও ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়েছে। আবার বিদেশিদের সঙ্গে মৌসুমভিত্তিক চুক্তি হওয়ায় আরও বিপাকে তারা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন থেকেও লিগ স্থগিত কিংবা বাতিলের চূড়ান্ত রূপরেখা পাচ্ছে না ক্লাবগুলো। এ অবস্থায় লিগ বাতিল করে নতুন মৌসুমের জন্য উইন্ডো ঘোষণা করা হলে সবার জন্য সুবিধা হবে বলে মনে করেন বসুন্ধরা কিংস সভাপতি ইমরুল হাসান, 'বাস্তবতার কথা যদি বলতে চাই, তাহলে লিগ খেলার মতো অবস্থানে নেই ক্লাবগুলো। করোনা পরিস্থিতির কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। আপনি জানেন যে প্রতিটি ক্লাবই কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের অধীনে। এই অবস্থায় অধিকাংশ ক্লাবের পক্ষেই লিগে খেলা কঠিন হয়ে যাবে। লিগ খেলতে হবে; এমনটা চাপিয়ে দিলে তো হবে না। আপনাকে অবশ্যই ক্লাবগুলোর অবস্থা বুঝতে হবে। আমার সঙ্গে কয়েকটি ক্লাবের কথা হয়েছে, তারাও লিগ খেলতে চায় না। আমরা চাচ্ছি, এই মৌসুম বাতিল করে নতুন মৌসুমের জন্য উইন্ডো ঘোষণা করা হোক।' বিদেশিদের নিয়ে মহাসংকটে থাকার কথাও বলেছেন ইমরুল, 'লিগ হোক বা না হোক, এটার একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দু-তিন দিনের মধ্যে দিয়ে দিক বাফুফে। যদি লিগ চার মাসের জন্য স্থগিত হয় কিংবা বাতিল হয়, যেটাই হোক না কেন, তখন আমরা বিদেশিদের সঙ্গে বসতে পারব। তখন তাদের একটা ব্যবস্থা করতে পারব। এখন যেহেতু ঝুলে আছি, আমরা তো তাদের সঙ্গে ওইভাবে কথা বলতে পারছি না। আমার কোচ ও খেলোয়াড়দের বসে বসে বেতন দিতে হচ্ছে।' অনেকেই বলেছেন দেশিদের নিয়ে লিগ করতে। তা করতে হলে আবার নতুন করে লিগ শুরু করার দাবি কিংস সভাপতির।
বসুন্ধরা কিংসের মতো আরেকটি বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানের ক্লাব হলো সাইফ স্পোর্টিং। ক্লাবটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির উদ্দিন চৌধুরী অনেক ক্যালকুলেশন করে দেখেছেন যে, এই মৌসুমে আর লিগ হওয়ার সম্ভাবনা নেই, 'আপনি দেখেন ইউরোপের লিগগুলোর ৮০ ভাগ খেলা হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে আমাদের এখনও ৮০ ভাগের মতো বাকি। প্রতিটি ক্লাব পাঁচ-ছয়টি করে ম্যাচ খেলেছে। এখনও আপনার বাকি আছে স্বাধীনতা কাপ। করোনার যে ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে করে এই মৌসুম করতে পারবেন না। আমি বিভিন্ন ক্যালকুলেশন করে দেখেছি যে, কোনোমতেই এই মৌসুমটা চালু রাখা সম্ভব নয়। আর লিগ যে হবে না, এটা মোটামুটি আমাদের মধ্যে একটা ধারণা চলে এসেছে।' দু-একটি ক্লাব ছাড়া বাকি ক্লাবগুলোর আর্থিক অবস্থা আরও নাজুক বলে জানান নাসির, 'আমরা বড় বড় ক্লাবগুলো এই অবস্থায় হিমশিম খাচ্ছি। ছোট ক্লাবগুলোর অবস্থা তো আরও খারাপ। আপনি দেখেন, মোহামেডান, ব্রাদার্স, আরামবাগ এসব দলকে কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সাপোর্ট দেবে? কারোই তো আয় হচ্ছে না। আর লিগ বাতিলের চিন্তা নিয়েই আমরা মিটিংয়ে যাচ্ছি।'
লিগ বাতিলের মতো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনই জানাতে নারাজ ঢাকা আবাহনীর ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রূপু। তার কথায়, সবাই চাইলে লিগ বাতিলে আবাহনীর কোনো আপত্তি থাকবে না, 'আসলে আমরা বিদেশিদের নিয়ে একটা চিন্তায় আছি। এখন একটা সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। সবাই যদি লিগ বাতিল চায়, আমাদেরও তাতে কোনো আপত্তি থাকবে না। তখন আমরা আমাদের বিদেশিদের নিয়ে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব।' মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের পরিচালক সারোয়ার হোসেন তো বলেই দিলেন, লিগ অলরেডি বাতিল হয়ে গেছে। তবে পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান ও বাফুফে সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদি মনে করেন, মৌসুম শেষ করা সম্ভব, 'ক্লাবগুলো তো ইনভেস্ট করেছে। আমি মনে করি, তারা লিগ বাতিল করার মতো সিদ্ধান্ত নেবে না। কারণ, একটা মৌসুম বাতিল করা যেনতেন ব্যাপার নয়। আমরা আগে সবার কথা শুনব, তারপর একটা সিদ্ধান্ত নেব।'
- বিষয় :
- খেলা
- দেশি ফুটবল
- লিগ
- বন্ধ চায় ক্লাব
- বাফুফে