দিল্লিতে কে হবেন ‘ফখর’

লিটন দাস
সঞ্জয় সাহা পিয়াল, দিল্লি থেকে
প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৩ | ০৩:২৭ | আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৩ | ০৯:২৭
ক্রিকেট এমনই অনন্ত কৌতুকময়, এমনই অশেষ সম্ভাবনার পুর্নগর্ভ, কোনো কিছুই স্থিতিশীল নয়; চূড়ান্ত নয় কোনো জয়-পরাজয়। তা না হলে বেঙ্গালুরুতে ফখর জামান নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে যা করে দেখালেন, তাতে শুধু পাকিস্তান দলই নয়, অন্তত আটটি দলের পয়েন্ট টেবিল নড়েচড়ে গেছে।
আগের দিন মাঠ থেকে ফিরেই টেলিভিশনের সামনে বসে পড়েছিলেন সাকিবরা। নিজেদের হারানো আত্মবিশ্বাস খুঁজে পেয়েছেন নাকি তারা ফখর জামানের ওই ইনিংসের মধ্যেই। সেই রাতে সাকিবের ডাকা টিম মিটিংয়ে নাকি ফখর জামানের ইনিংসটি নিয়ে আলোচনা হয়। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে উদাহরণ হিসেবে ফখরের নামটি সামনে এনে বুঝিয়ে দেন। ‘আমাদের মধ্য থেকে কোনো একজনকে স্ট্যান্ডআপ হতে হবেই। অনেকটা ওই ফখর জামানের মতোই। আমাদের মধ্যেও তেমন প্রতিভা রয়েছে। আমি চাইছি এমন কারও কোনো স্পেল কিংবা এমন কোনো ইনিংস, যা কিনা পুরো দলকে অনুপ্রেরণা দেবে। তাহলেই আমাদের অনেক কিছু বদলে যাবে।’
গতকাল দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামের মিডিয়া হলেও সেই ফখর জামানের কথাই বলতে শোনা যায় হাথুরুকে। আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দলের কেউ একজন ফখরের মতো সাহসি হতে পারলে বাকিরাও জেগে উঠবে বলে বিশ্বাস তাঁর। ফখর জামান এবং পাকিস্তান দলের উত্থানে পুরো বাংলাদেশ দল যে মনের জোর পেয়েছে, সেটা অস্বীকার করে নিজেদের দুর্বলতা আর ঢেকে রাখেননি হাথুরু।
কিন্তু কে হতে পারেন বাংলাদেশ দলের ‘ফখর জামান’? হাথুরু চলে যাওয়ার পর কলম্বো থেকে আসা এক সাংবাদিকের সঙ্গে আড্ডায় লিটন কুমার দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিমের নাম বলে গেলেন দিল্লির সাংবাদিক। শুনে লঙ্কান সাংবাদিকের উত্তর– ‘এদের কেউ কিছু করতে পারবেন না। কাল শ্রীলঙ্কাই জিতবে।’
ভারতের কাছে ৩০২ রানে হেরে আসা দলটি এতটাই আত্মবিশ্বাসী? আসলে দিল্লির যে মাঠে আজ খেলা হবে, সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন শতাধিক রান তুলেছিল শ্রীলঙ্কা। যদিও চারশর ওপর রান দিয়েছিল তারা। তবে স্টেডিয়ামেরই এক মাঠকর্মীর বিশ্বাস কিন্তু অন্যরকম। আইপিএলের দল দিল্লি ক্যাপিটালসের ছেলে মুস্তাফিজ তাদের কাছের মানুষ। এই পিচে নাকি মুস্তাফিজই শেষ কথা বলবেন।
অবশ্য টানা ছয় হারের পর দলের এখন এমন অবস্থা যে, আশার কথা বললেই শুনতে ভালো লাগে। তবে এই মাঠের পিচ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও কোচ হাথুরুও মিলে দেখেছেন। কোচের কাছে মনে হয়েছে, এবারের বিশ্বকাপের সেরা পিচে বাংলাদেশ দল আজ শ্রীলঙ্কার সঙ্গে খেলতে নামছে।
এদিন নেটে নামার আগে তানজিদের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলেছেন কোচ। আগের দিন বিশ্রামে থাকা লিটন দাসকেও দেড় ঘণ্টা বরাদ্দ দিয়েছিলেন। নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়েও অনুশীলনে বেশ সিরিয়াস দেখা গেছে। পুরো কোচিং স্টাফ চেষ্টা করে যাচ্ছে, টপঅর্ডার থেকে কেউ একজন যেন বিস্ফোরক ইনিংস খেলতে পারেন। তাদের কারও একটা বারুদের ঘষাতেই হয়তো জ্বলে উঠতে পারে পুরো দল। হাতের সামনে টাটকা উদাহরণ তো পাকিস্তানই রয়েছে। এই মুহূর্তে এমন কিছু আশা করা ছাড়া যে আর কোনো পথ সামনে নেই।