মেহেদী হাসান মিরাজ যেন এক নিঃসঙ্গ শেরপা। গতকাল শেষ বিকেলে তিনি যখন ড্রেসিংরুমে ফিরছিলেন, তার চোখেমুখে তখন রাজ্যের আঁধার। অথচ কী অসাধারণ একটি সিরিজ কাটিয়েছেন! একটি সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরিতে ১৯৮ রান করেছেন, বল হাতেও তিনি নিয়েছেন ১০ উইকেট। এমন স্মরণীয় অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের পরও হাসি নেই তার মুখে। দল হেরে গেলে সব অর্জন যে মূল্যহীন হয়ে পড়ে!

গতকাল একের পর এক উইকেট পতনের মাঝেও ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মিরাজ। শেষ ব্যাটসম্যান আবু জায়েদ রাহি নামার পর একাই সব দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন। ছয়-চার মেরে আশা জাগিয়েও তুলেছিলেন। অসম্ভব এক জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েও শেষ পর্যন্ত ১৭ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি।

শুধু গতকালই নয়, প্রথম ইনিংসেও তিনিই হয়ে উঠেছিলেন ভরসা। ১৫৫ রানে ৬ উইকেট পতনের পর তিনি ও লিটন সপ্তম উইকেট জুটিতে ১২৬ রান যোগ করে ভরাডুবির হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন দলকে। আক্ষেপের শুরু চট্টগ্রাম থেকে। শেষ দিনে কাইল মেয়ার্সের ঐতিহাসিক ডাবল সেঞ্চুরি বাদ দিলে সেখানে পুরোটা সময় রাজত্ব করেছেন তিনি। প্রথম ইনিংসে সাত নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি করেছেন। এরপর বল হাতে ৪ উইকেট নিয়ে দলকে বড় লিড এনে দিয়েছেন। দ্বিতীয় ইনিংসেও ৪ উইকেট নিয়েছিলেন; কিন্তু বাংলাদেশের আর কোনো বোলার জ্বলে উঠতে না পারায় হারতে হয়।

হোয়াইটওয়াশ হওয়া এ সিরিজে বাংলাদেশের একমাত্র প্রাপ্তি মিরাজ। বয়সভিত্তিক দলে মিরাজ ছিলেন মূলত ব্যাটসম্যান। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাটিং ভুলে পুরোদস্তুর অফস্পিনার হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এই সিরিজ যেন সেই পুরোনো ব্যাটসম্যান মিরাজকে ফিরিয়ে দিল।