ম্যানুয়েল নয়্যার, থমাস মুলার, রবার্ট লেভানডস্কি- বায়ার্ন মিউনিখের তিন পোস্টারবয়। জার্মান জায়ান্টদের দশকব্যাপী আধিপত্যের তিন স্তম্ভও। নতুন প্রজন্মের জসুয়া কিমিচ, লেওন গোরেৎস্কারা উঠে এলেও তারা এখনও অপরিহার্য। হয়তো এ কারণে টানা নবম বুন্দেসলিগা জয়ের পর আদর করে তিনজনকে 'ট্রায়োনিখ' বন্ধনীতে বেঁধে মর্যাদা দিয়েছেন মিউনিখের ভক্তরা।

রোববার মুনশেনগ্লাডবাখের বিপক্ষে মাঠে নামার আগেই সুখবরটা পেয়ে গিয়েছিল বায়ার্ন। পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে থাকা লাইপজিগ নিজেদের মাঠে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে ৩-২ গোলে হেরে গেলে বায়ার্নের রেকর্ড টানা নবম বুন্দেসলিগা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। এরপর মুনশেনগ্লাডবাখকে ৬-০ গোলের বন্যায় ভাসিয়ে শিরোপা উদযাপন করেন তারা। যেখানে হ্যাটট্রিক করেন লেভানডস্কি। আর এই হ্যাটট্রিক দিয়ে ৪৯ বছরের পুরোনো এক রেকর্ড ভাঙার দ্বারপ্রান্তে চলে গেছেন পোলিশ এই স্ট্রাইকার। ১৯৭২ সালে বুন্দেসলিগায় এক মৌসুমে সর্বোচ্চ ৪০ গোল করে রেকর্ড গড়েছিলেন জার্মান কিংবদন্তি গার্ড মুলার। লেভার গোলসংখ্যা এখন ৩৯। তার হাতে আছে আরও দুটি ম্যাচ। তাই নতুন রেকর্ড করার সুবর্ণ সুযোগ লেভার সামনে

অবশ্য লেভার এই কীর্তিতেই অবাক বায়ার্ন প্রধান নির্বাহী কার্ল হেইঞ্জ রুমেনিগে, 'সত্যিই আমি বিস্মিত। আমি ভেবেছিলাম মুলারের রেকর্ড বুঝি চিরস্থায়ী, কেউ কোনোদিন ভাঙতে পারবে না। রবার্টের হাতে আরও দুটি ম্যাচ আছে। এটা পরিস্কার, ক্লাবের ইতিহাস নতুন করে লিখবে সে।' লেভার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন বায়ার্নের বিদায়ী কোচ হ্যান্সি ফ্লিকও, 'ছেলেবেলায় গার্ড মুলার ছিলেন আমার আদর্শ। আমার তারুণ্যে মুলার যা ছিল, এখন লেভানডস্কি ঠিক তা-ই!'

বুন্দেসলিগায় এখন পর্যন্ত ৩১ বার শিরোপা জিতল বায়ার্ন। ২০০০ সালের পর এটা তাদের ১৬ নম্বর শিরোপা। আর এ মৌসুমে হলো টানা নবম। এর মধ্যে একটি রেকর্ড করেছেন থমাস মুলার ও ডেভিড আলাবা। বায়ার্নের হয়ে তারা দু'জনই দশম লিগ শিরোপা জিতলেন। দু'জনের মধ্যে মুলার আবার দীর্ঘদিন ধরে ক্লাবের আক্রমণভাগের অন্যতম ভরসা। গত মৌসুমে বুন্দেসলিগায় রেকর্ড ২১টি অ্যাসিস্ট করে ছিলেন তিনি। বায়ার্নের 'ষষ্ঠক' জয়ে অন্যতম ভূমিকা ছিল তার। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ১৮ অ্যাসিস্ট তার। স্কুলে পড়া অবস্থায় বাভারিয়ার এই ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারে এই এক ক্লাবে খেলা মুলার বলেন, 'টানা নবম শিরোপা! অবিশ্বাস্য লাগছে এবং প্রতিবারই আমি ছিলাম। এ জন্য আমি কৃতজ্ঞ ক্লাবের প্রতি।'

বায়ার্নের এই সফলতার আরেক রূপকার হলেন ম্যানুয়েল নয়্যার। গোলপোস্টের নিচে ভরসার পাশাপাশি নেতৃত্বও দিচ্ছেন তিনি। তার কাছেও টানা নবম শিরোপা জয়ের পর সবকিছু অদ্ভুত লাগছে, 'আমরা মাঠে নামার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলাম। এমন সময় ড্রেসিংরুমে টিভি দেখে বুঝতে পারলাম আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেছি।' গত মৌসুমে জুভেন্তাস টানা নবম লিগ শিরোপা জিতে ইউরোপে রেকর্ড করেছে। আগামী মৌসুমে বায়ার্ন টানা দশম শিরোপা জিতে রেকর্ডটা এককভাবে নিজেদের করে নেবে বলেও চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন ক্লাবটির নতুন সভাপতি হতে যাওয়া অলিভার কান।