- খেলা
- কিছুতেই সাড়া দিচ্ছিল না ঘোড়াটি...
কিছুতেই সাড়া দিচ্ছিল না ঘোড়াটি...

পেন্টাথলনে বশ মানেনি আনিকা স্কলিউর ঘোড়া
বিধাতা বুঝি এমন দিনের জন্য অপেক্ষায় রেখেছিলেন আনিকা স্কলিউকে। ক্যারিয়ারে অন্যসব বড় টুর্নামেন্টে তার স্বর্ণ জেতা হয়েছে একাধিকবার। কেবল অলিম্পিকই বাকি ছিল। এবার বড্ড আশা নিয়ে টোকিও যান এই জার্মানকন্যা। কিন্তু বিদায়টা নিতে হলো চোখের জলে। হয়তো কল্পনাও করেননি এভাবে অলিম্পিকে হতাশ হতে হবে।
মেয়েদের মর্ডান পেন্টাথলনে শুক্রবার জার্মানির হয়ে পদক লড়াইয়ে নামেন আনিকা। কিন্তু ভাগ্যের কী পরিহাস, ঘোড়ার পিঠে ওঠার পর আর হাসতে পারেননি। কিছুতেই ঘোড়া নির্দেশনা মানেনি। সংকেতে দিচ্ছিল না কোনো সাড়াও। তাতে কেঁদে বুক ভাসান আনিকা। তবে ঘোড়ার আচরণ মানতে পারেননি তার কোচ কিম রেইজনার। মেজাজ হারিয়ে ঘোড়াকে মেরে বসেন ঘুসি। যেটা একেবারে অলিম্পিকের নিয়মনীতিবহির্ভূত। যে কাে ডিসকোয়ালিফাইড হয়েছেন রেইজনার। অলিম্পিকে নিজের ইভেন্টেও অংশ নিতে পারবেন না তিনি। শনিবারই একক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল রেইজনারের। কিন্তু ঘুসি মেরে নিজের পায়ে কুড়াল মারলেন তিনি।
অবশ্য জার্মানির অলিম্পিক প্রধান হরম্যান আগেই জানিয়ে দেন, রেইজনারকে ছেলেদের একক প্রতিযোগিতা থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। সঙ্গে নিয়মে বদলের কথাও জানান হরম্যান। এক বার্তায় তিনি বলেন, 'শনিবারের প্রতিযোগিতায় এই কোচকে না রাখার ব্যাপারে আমরা সবাই একমত হয়েছিলাম। আমরা এও মনে করি, এ ঘটনার সুষ্ঠু পর্যালোচনা দরকার। বিশেষ করে পশু সুরক্ষার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ফেডারেশনগুলোর গুরুত্ব দেওয়া উচিত।' মর্ডান পেন্টাথলনে কেউ নিজেদের ঘোড়া ব্যবহার করতে পারেন না। নিয়ম অনুযায়ী খেলা শুরুর আগে এলোমেলোভাবে নির্বাচিত করা হয় ঘোড়া।
সেক্ষেত্রে যার জন্য যেটা নির্ধারিত হয় তিনি ওই ঘোড়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে ২০ মিনিট সময় পান। আনিকার ঘোড়াটি ওয়ার্মআপেই সমস্যা শুরু করে। সে ঠিকমতো লাফাতে চাচ্ছিল না। সংকেত দিলেও সেটা মেনে চলছিল না। যে কারণে হতাশায় ভেঙে পড়েন আনিকা। তার কান্না দেখে কোচও রেগেমেগে আগুন। মেরে বসেন ঘোড়ার পায়ে ঘুসি। যার জন্য এখন শাস্তি পেতে হবে আনিকার কোচ রেইজনারকে। তবে সবকিছুর পরও আনিকার কান্নার ছবিগুলো সবার হৃদয়কে নাড়া দেয়। ওই সময় ধারাভাষ্যের দায়িত্বে থাকা একজন স্তব্ধ হয়ে যান।
ব্রিটিশ ব্রডকাস্টার বিবিসিকে তিনি বলেন, 'আমি নিজেই এই দৃশ্যটা দেখে আবেগ হারিয়েছি। আনিকার কান্নাটা সত্যিই সবার মন ছুঁয়েছে। ঘোড়ার সমস্যাটা দেখে সে ধরেই নেয় আমার কোনো সম্ভাবনা নেই। আসলে তার পদক জেতার সুযোগটা নষ্ট হলো।'
মর্ডান পেন্টাথলনে আনিকার নামডাক অনেক। গত কয়েক বছর এই প্রতিযোগিতার ছোট-বড় আসরে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি। ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে জেতেন পাঁচটি স্বর্ণপদক। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে আরও তিনটি। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ক্যারিয়ারে ২৩টি পদক জিতেছেন।
মন্তব্য করুন