মাহমুদউল্লাহরা যখন আবুধাবি যাওয়ার জন্য টিম বাসে উঠছিলেন, সাইফউদ্দিনের তখন ভীষণ মন খারাপ। পিঠের পুরোনো ব্যথাটা মাথাচাড়া দেওয়ায় সতীর্থদের সঙ্গে আবুধাবি যাওয়া হয়নি তার। দুবাইয়ের ক্রাউন প্লাজা হোটেলে বসে পরিচর্যা করতে হয়েছে পিঠের ব্যথার। বিশ্বকাপের মাঝপথে আজ দেশেও ফিরছেন ২৪ বছর বয়সী পেস বোলিং এ অলরাউন্ডার। গতকাল ফোনে সাইফউদ্দিনই জানালেন দেশে ফেরার খবর। দেশে না ফিরে কোনো উপায়ও নেই। পিঠের ব্যথা বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে দিয়েছে তাকে। টুর্নামেন্টের মাঝপথে চোট নিয়ে দেশে ফিরতে হওয়ায় হতাশ সাইফউদ্দিন।

বিশ্বকাপের দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন সাইফউদ্দিন। প্রথম রাউন্ডে স্কটল্যান্ড, ওমান, পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ভালো করেছেন। যদিও সুপার টুয়েলভে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তেমন সুবিধা করতে পারেননি। চার ম্যাচে পাঁচ উইকেট পাওয়া এ বোলার টিম ম্যানেজমেন্টের পছন্দের। ডেথ ওভারে দারুণ কার্যকর ডেলিভারি দেন তিনি। 

টিম ম্যানেজমেন্ট জানায়, লঙ্কানদের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে ব্যথা বেড়ে যায়। ফিজিও জুলিয়ান ক্যালেফাতো এবং চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর সাইফউদ্দিনকে না খেলার পরামর্শ দেন। আইসিসি টেকনিক্যাল কমিটির কাছে রুবেলকে বিকল্প বোলার করার আবেদন করে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। টেকনিক্যাল কমিটি মঙ্গলবার অনুমোদন দেওয়ার পর রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় আইসিসির মিডিয়া বিভাগ। বিশ্বকাপ দলের সদস্য হতে পারা রুবেলের জন্য খুশির হলেও হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে সাইফউদ্দিনের। গতকাল ফোনে হতাশ শোনাচ্ছিল টাইগার এ অলরাউন্ডারের কণ্ঠস্বর, 'খুব খারাপ লাগছে দেশে ফিরে যেতে হচ্ছে বিশ্বকাপ থেকে। সব কিছু ভালোই যাচ্ছিল। ব্যথাটা হঠাৎ ফিরে এসেছে। এই ব্যথা নিয়ে খেলাও যায় না। খেললে বেশি ক্ষতি হতো। যাক, আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। সামনে অনেক খেলা আছে। দেখা যাক কী হয়।'

সাইফউদ্দিনের পিঠের নিচের দিকের ব্যথা বেশ পুরোনো। চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠাতে প্রস্তুতি নিয়েছিল বিসিবি। ইংল্যান্ডের বিশেষজ্ঞ শৈল্যবিদ ও বায়োম্যাকানিক সেন্টারে তার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে 'ওয়ার্ক লোড ম্যানেজ' করে খেলার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই থেকে বিসিবিও চেষ্টা করছে সাইফউদ্দিনকে বিশ্রাম দিয়ে খেলাতে। যে কারণে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট বা টেস্ট খেলেন না তিনি। টি২০ ও ওয়ানডে স্কোয়াডে রাখা হয় তাকে। এরপরও টানা খেলতে সমস্যা হয়। ২০১৯ সালে ইংল্যান্ড ওয়ানডে বিশ্বকাপে ব্যথানাশক ইনজেকশন নিয়ে খেলেছেন। চলমান টি২০ বিশ্বকাপের আগেও টানা খেলা ছিল জাতীয় দলের। প্রস্তুতি পর্ব মিলে লম্বা সময় খেলার ভেতরে থাকায় শরীরের ওপর চাপ পড়ায় ব্যথা ফিরে এসেছে বলে মনে করছেন সাইফউদ্দিন।