- খেলা
- তবুও গুরুত্বপূর্ণ এক ম্যাচ
তবুও গুরুত্বপূর্ণ এক ম্যাচ

অন্তত শেষ ম্যাচটা জিততে চায় টাইগাররা
বাংলাদেশের টি২০ বিশ্বকাপ শেষ হচ্ছে আজ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। সাদা চোখে দেখলে, এই ম্যাচের তেমন একটা গুরুত্ব নেই। তবে একটু ভেতরে ঢুকলেই দেখা যাবে আজকের ম্যাচের গুরুত্ব দুই দলের জন্যই সমান। সেমিফাইনাল খেলতে হলে অস্ট্রেলিয়াকে শুধু দুই পয়েন্ট পেলেই হবে না, রানরেট বাড়িয়ে নেওয়ারও ব্যাপার থাকবে। অস্ট্রেলিয়ার মতো না হলেও অন্য কারণে বাংলাদেশের জন্য ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ। পরের টি২০ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার সুযোগ তৈরি করা, প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় রাউন্ডে জয়ের স্বাদ নেওয়া এবং পাকিস্তান সিরিজের জন্য আত্মবিশ্বাস নিয়ে দেশে ফিরতে চাইলে জিততে হবে মাহমুদউল্লাহদের। গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচটি তাই জিততে চাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু চাওয়া আর পাওয়া সব সময় এক বিন্দুতে মেলে না। গত ৪ ম্যাচে যেমন হয়নি।
গত দুই মাসে মুদ্রার দুই পিঠই দেখা হলো বাংলাদেশের। দুই মাস আগে সিরিজ জয়ের রমরমা স্মৃতি। জিম্বাবুয়ের পর অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের উন্মাদন দেশের ক্রিকেটে। বিশ্বকাপে এসে পদে পদে হোঁচট খেল তারাই। মাহমুদউল্লাহরা স্কটল্যান্ডের কাছে হার দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করলেও ওমান ও পাপুয়া নিউগিনিকে হারিয়ে উন্নীত হয় সুপার টুয়েলভে। মূল পর্বে ঢোকার পর থেকেই পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যেতে থাকে টাইগারদের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জেতা ম্যাচে হেরেছে নিজেদের ভুলে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বাগে পেয়েও হারানো যায়নি। ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারল না। বিশ্বকাপ মঞ্চ টাইগারদের কাছে হয়ে থাকল মুদ্রার উল্টোপিঠ। গত তিন মাসে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একই অভিজ্ঞতা হয়েছে স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথের। জুলাই মাসে বাংলাদেশ দলের জিম্বাবুয়ে সফরে কাজে যোগ দিয়ে টানা তিনটি সিরিজ জয়ের স্বাদ পেলেন। বিশ্বকাপে আশাহত হলেন দলের বিপর্যয়ে। অথচ সাত বছর আগে শ্রীলঙ্কার টি২০ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন তিনি। খেলোয়াড়ি জীবনের বিপরীত অভিজ্ঞতা হলো কোচিং ক্যারিয়ারের। টাইগারদের এ কোচের স্মৃতিতে নাড়া দিতেই আবেগতাড়িত হলেন, '২০১৪ সালে আমরা বিশ্বকাপ জিতেছি। শ্রীলঙ্কা দলের একজন সদস্য হিসেবে যেটা আমার জন্য স্মরণীয় হয়ে আছে। বিশ্বকাপ জেতার অন্যরকম অনুভূতি। অন্যরকম তৃপ্তি।'
যে দল টি২০ বিশ্বকাপের মূল পর্বে এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচই জেতেনি, সেই বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ কী বুঝবেন। একটি জয়ের খোঁজে নামা টাইগারদের শেষ সুযোগ আজ।
বাংলাদেশের মানুষের কাছে ক্রিকেট আবেগের নাম। সাধারণ মানের খেলোয়াড়দের নিয়েও উন্মাদনার শেষ নেই। হেরাথ মনে করেন, এই খেলোয়াড়রা একটু মনোযোগ ও একাগ্রতা দেখালে নিজেরা যেমন কিংবদন্তি হতে পারবেন, তেমনি বাংলাদেশ দলকেও বুভুক্ষুর মতো জয়ের জন্য তাকিয়ে থাকতে হতো না। মুশফিকরা এ কোচের কথা অনুসরণ করলে এক বছর পর হয়তো বদলে যাওয়ার গল্প লেখা যাবে।
হেরাথের কথা, 'দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলা গর্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার মতো। সেক্ষেত্রে সবাইকে নিজের দায়িত্ব ও ভূমিকা সম্পর্কে বুঝতে হবে। শ্রীলঙ্কা বা বাংলাদেশ যে দেশেই হোক, নিজের শক্তির জায়গা ও ভূমিকা বুঝতে পারলে ভালো করা সম্ভব। বিখ্যাত ক্রিকেটার হতে হলে ভালো এবং খুব পেশাদার হতে হবে। কঠিন পরিশ্রম করার পাশাপাশি নিজের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ জানাতে হবে। সেটা করতে পারলে ব্যক্তিগতভাবে উন্নতি করার পাশাপাশি দল হিসেবে ভালো করবে।'
বাংলাদেশ দলের জন্য এমন পেশাদার মানসিকতার খেলোয়াড় খুব প্রয়োজন। মুশফিকরা ক্যারিয়ারের শেষান্তে চলে এলেও শেখ মেহেদীরা তো দেশের জন্য তৈরি হতে পারেন।
মন্তব্য করুন