- খেলা
- অলিম্পিয়া অ্যামেচারে বাংলাদেশের প্রথম নারী বডিবিল্ডার
অলিম্পিয়া অ্যামেচারে বাংলাদেশের প্রথম নারী বডিবিল্ডার

বডিবিল্ডার মাকসুদা
বডি বিল্ডারের নাম শুনলেই চোখে ভাসে শরীরগঠনবিদদের দেহ। সাধারণত শরীরের নানা কসরত দেখিয়ে দর্শকদের আনন্দ দেন পুরুষ বডিবিল্ডাররা। কিন্তু নারী বডিবিল্ডারকে খুব কমই দেখা যায়। তবে চট্টগ্রামের মেয়ে মাকসুদা মৌ শরীর গঠনের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। আর সেই মাকসুদাই আজ আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের হয়ে নিজের নাম লিখিয়েছেন।
বডিবিল্ডার নিয়ে বরাবরই একটি ট্যাবু রয়েছে নারীদের মধ্যে। আজও কোনও নারী শরীরচর্চা করলে অনেকেই বাঁকা নজরে দেখেন কিংবা ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য করেন। একটি মেয়ে বডিবিল্ডিং করছেন, তা যেন মানতেই পারে না এই সমাজ। কিন্তু পুরুষ এবং নারী উভয়েরই শরীরচর্চা করা অত্যন্ত প্রয়োজন। ইউরোপের দেশগুলি এ ক্ষেত্রে কিছুটা আধুনিক মানসিকতার পরিচয় দিলেও উপমহাদেশের দেশগুলিতে দৃষ্টিভঙ্গীর এই সমস্যা প্রবল।
মাকসুদা এই ট্যাবুটাই ভাঙতে চান। তার স্বপ্ন, পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও বডিবিল্ডিংয়ের মতো প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। আরো আগেই মাকসুদা তার স্বপ্নের পথে হাঁটা শুরু করেছেন। এরই মধ্যে জিতেছেন জাতীয় শরীর গঠন প্রতিযোগিতায়। বাংলাদেশ গেমসের নবম আসরে নারী বডিবিল্ডিং ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন মাকসুদা মৌ। তিনি এখন অপেক্ষায় দেশের প্রথম নারী হিসেবে কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের।
ভারতের মুম্বাইয়ে আজ থেকে শুরু হয়েছে আইএইচএফএফ অলিম্পিয়া অ্যামেচার বডিবিল্ডিং চ্যাম্পিয়নশিপ। এই প্রতিযোগিতায় 'ওমেন ফিজিক' শ্রেণিতে অংশ নেবেন বাংলাদেশের মাকসুদা। প্রতিযোগিতাটি চলবে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
মাকসুদার সামনেও অনেক বাধা এসেছে। সে সব পেরিয়ে আজ তিনি বহু নারীর অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন। ছোট থেকে অবশ্য শরীরচর্চার প্রতি কোনও আলাদা ভাললাগা ছিল না তার। পড়াশোনার জন্য কয়েক বছর ভারতে ছিলেন মাকসুদা। তখনই তিনি সুস্থ থাকার জন্য জিমে যোগ দেন। এরপর শরীরচর্চা তার প্রতিদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়। প্রতি দিন যেমন খেতে, ঘুমতে হয়, শরীরচর্চাও তার কাছে ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে শরীরচর্চার প্রতি আগ্রহ দেখে এই বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন মাকসুদা। এরপর বডিবিল্ডিংকেই স্বপ্ন বানিয়েছেন তিনি।
প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক আসরে অংশ নিতে পেরে রোমাঞ্চিত মাকসুদা। বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে উচ্ছ্বসিত মাকসুদা জানান, 'আমাদের দেশে মেয়েদের বডিবিল্ডিং নিয়ে এখনো একটা ট্যাবু আছে। সেই বাধার দেওয়াল ভাঙার চেষ্টা করছি আমি, যাতে আমাদের দেশের অন্য মেয়েরাও বডিবিল্ডিংয়ে আসতে পারেন। প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক আসরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে খুব ভালো লাগছে আমার।'
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মাকসুদার পথ চলা শুরু মাত্র। মাকসুদার ইচ্ছা, একদিন বিশ্বের বুকে নারী বডিবিল্ডিংয়ে বাংলাদেশের পতাকা উড়বে।
মন্তব্য করুন