কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ১০ রানে হারিয়ে টানা সপ্তম জয়ে সবার আগে এবারের বিপিএলের ফাইনালে উঠে গেলো সাকিব আল হাসানের বরিশাল। টস জিতে বল করতে নেমে বরিশালকে ১৪৩ রানে আটকে দেয় কুমিল্লা। জবাবে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রানে থামে ইমরুল কায়েসের দল। এতেই প্রথম কোয়ালিফায়ার জিতে ফাইনালের টিকিট কাটে সাকিবের ফরচুন বরিশাল। তবে বাদ পড়েনি কুমিল্লা। বুধবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের মুখোমুখি হবে ইমরুল কায়েসের দল। সেই ম্যাচের জয়ী দল খেলবে শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে।

১৪৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন কুমিল্লার দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় এবং লিটন দাস। বরিশালের মুজিব উর রহমান এবং সাকিব আল হাসান চেপে ধরার চেষ্টা করলেও সাবলীল ব্যাটিং করতে থাকেন কুমিল্লার দুই ওপেনার। ধীরগতির ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে উইকেট না হারিয়ে ৩৮ রান তোলে কুমিল্লা। 

দলীয় ৬২ রানে  বরিশালকে প্রথম উইকেট এনে দেন মেহেদী হাসান রানা।  তার শিকার ৩০ বলে ২০ রান করা জয়। এরপর ক্রিজে থিতু হতে পারেননি ইমরুল। ৫ রান করে ক্রিস গেইলের হাতে ক্যাচ বানিয়ে তাকে ফেরত পাঠিয়েছেন শফিকুল ইসলাম। লিটন দাস ৩৫ বলে ৩৮ রান করে ফিরলে চাপে পড়ে কুমিল্লা। ৬২ রানে শূন্য উইকেট থেকে ৬৮ রানে ৩ উইকেটের দলে পরিণত হয় কুমিল্লা। 

আজও ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছেন মুনিম শাহরিয়ার

এরপর মঈন আলীকে সঙ্গে নিয়ে ৩৬ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের আশা দেখান ফাফ ডু প্লেসি। মঈনকে বোল্ড করে এই জুটি ভাঙেন ডোয়াইন ব্রাভো। ১৫ বলে ২২ রান করেন মঈন, হাঁকান তিনটি ছক্কা। ১৫ বলে ২১ রান করে দলের প্রয়োজনের সময়েই ক্যাচ আউট হয়ে যান ডু প্লেসিও।

জয়ের জন্য শেষ ওভারে কুমিল্লার প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। বোলিংয়ে আসেন মুজিব উর রহমান। দ্বিতীয় বলে ছক্কা মারার পর ইনিংসের এক বল বাকি থাকতেই আউট হয়ে যান সুনীল নারাইন। সেই সাথে ১০ রানে বরিশালের জয় নিশ্চিত হয়।

বরিশালের পক্ষে ৩ ওভারে মাত্র ১৫ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন মেহেদী হাসান রানা। আরেক বাঁহাতি পেসার শফিকুল ৪ ওভারে ১৬ রানে নেন ২ উইকেট।

এর আগে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন বরিশালের দুই ওপেনার ক্রিস গেইল ও তরুণ মুনিম শাহরিয়ার। ৬.২ ওভারে উদ্বোধনী জুটিতে দুজনে তোলেন ৫৮ রান। ক্রিস গেইলকে ফিরিয়ে জুটি বিচ্ছিন্ন করেন শহিদুল ইসলাম। ১৯ বলে চারটি চারে ২২ রান করেন গেইল।

আইপিএল নিলামে অবিক্রিত থাকার পরদিন সাকিব ফিরলেন এক রানে

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে শান্তকে সাথে নিয়ে আগাতে থাকেন মুনিম। দলীয় ৮৪ রানে এই জুটি ভাঙেন তানভীর ইসলাম। ৩০ বলে ৪৪ রান করে ফেরেন মুনিম। তার ইনিংসে ছিল দুটি চার ও চারটি ছক্কার মার। একই ওভারে দুর্ভাগ্যজনক রান আউট হন বরিশাল অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। টানা পাঁচ ম্যাচে ম্যাচ সেরার পুরস্কার নেয়া সাকিব এবার ফেরেন ২ বলে ১ রান করে। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত ফেরেন ১৩ রান করে। তৌহিদ হৃদয়কে ১ রান করতেই ফেরান মঈন আলী।

এরপর জিয়া ও ব্রাভোয় ১০০ পার করে বরিশাল। দলীয় ১১০ রানে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন জিয়া। ১২ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় ১৭ রান করেন তিনি। ব্রাভো ও নুরুল হাসান বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ১৯তম ওভারে দুজনই আউট হন শহিদুলের বলে। ২১ বলে এক ছক্কায় ১৭ রান করেন ব্রাভো। ১৩ বলে এক চারে ১১ রান করেন নুরুল হাসান।

বল হাতে কুমিল্লার হয়ে ৩ উইকেট নেন শহিদুল। মঈন আলী দুটি, সুনীল নারাইন ও তানভীর নেন একটি করে উইকেট।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স

ইমরুল কায়েস (অধিনায়ক), লিটন দাস, মহিদুল ইসলাম অংকন, মোস্তাফিজুর রহমান, নাহিদুল ইসলাম, তানভীর ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, সুনীল নারিন, মঈন আলী এবং ফাফ ডু প্লেসিস।

ফরচুন বরিশাল

সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মুনিম শাহরিয়ার, ক্রিস গেইল, নাজমুল হোসেন শান্ত, তৌহিদ হৃদয়, জিয়াউর রহমান, ডোয়াইন ব্রাভো, নুরুল হাসান সোহান (উইকেটরক্ষক), মুজিব উর রহমান, শফিকুল ইসলাম এবং মেহেদী হাসান রানা।