মুন্সীগঞ্জ সদরের মীরকাদিমে বাবার সামনে ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। ঘাটের ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বুধবার সরকারি হরগঙ্গা কলেজের শিক্ষার্থী সম্রাট হোসেন ঝলককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

নিহত ঝলক মীরকাদিম পৌরসভার কাউন্সিলর মোহাম্মদ লিটনের ছেলে। এ ঘটনার জন্য পৌরসভার মেয়র আব্দুস ছালামের ছেলে মানিক মিয়াকে অভিযুক্ত করেছেন লিটন।

স্থানীয়রা জানান, বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ থেকে ৩০ দিনের জন্য মীরকাদিম লঞ্চঘাট ইজারা আনেন আওলাদ নামে একজন। সম্প্রতি আলাউদ্দিন নামে আরেক ব্যক্তিও একই ঘাটের ইজারা পান। এই ইজারা নিয়ে দেখা দেয় দ্বন্দ্ব। এ ছাড়া ঘাট এলাকায় পণ্যবোঝাই ট্রলার ও জাহাজ থেকে মালপত্র ওঠানামার জন্য পৌর মেয়রের ছেলে মানিক মিয়ার নেতৃত্বে একটি গ্রুপ চাঁদা তুলে আসছিল।

এ নিয়ে শ্রমিকরা এলাকার কাউন্সিলর লিটনের কাছে প্রতিকার চান। বিষয়টি মীমাংসা করতে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মানিক ও তার গ্রুপের লোকজনকে লঞ্চঘাট এলাকায় ডেকে আনেন লিটন। কিন্তু আলোচনা চলাকালে কাউন্সিলর লিটনকে ধাক্কা মারেন মানিক ও তার লোকজন। এ সময় ঝলক তার বাবার পাশে দাঁড়ান। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মানিকের লোকজন ঝলককে ছুরিকাঘাত করে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সম্পদ বেপারী বলেন, কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ঝলককে প্রতিপক্ষ গ্রুপের মোমেন, সুমন, জালাল ও ঝিল্লু চড়থাপ্পড় মারে ও ছুরিকাঘাত করে।

কাউন্সিলর লিটন বলেন, মেয়র সালামের ছেলে মানিক ঘাটের মার্জিন ডাক এনেছে টাকা তোলার জন্য। ঝিল্লু, মাসুদ, জালাল মাদবর, সুমন, নাসির, মানিক তার সামনে ছেলেকে মেরে ফেলেছে।

মীরকাদিম পৌরসভার সাবেক মেয়র শহীদুল ইসলাম শাহীন বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরেই পুলিশকে বলা হচ্ছিল বিষয়টি সমাধান করতে। পুলিশ চাঁদাবাজি বন্ধে পদক্ষেপ নিলে এ হত্যাকাণ্ড এড়ানো যেত। মানিক ও তার বাহিনী নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছে।

এদিকে মেয়র হাজী আব্দুস ছালাম বলেন, তার ছেলে ঘটনাস্থলে ছিল না। ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে কিছু লোক পাঁয়তারা চালাচ্ছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) সুমন দেব বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।