টেস্টের প্রথম ইনিংসে একশ’ রানে অলআউটের পর জয়ের আশা থাকে না। বরং লজ্জা চোখ রাঙায়। ওই লজ্জার ভয়ে হাল না ছেড়ে লড়াই করেছে সাকিবের দল। ইনিংস হারের শঙ্কা উড়িয়ে লিড নিয়েছে। জয়ের মামুলি লক্ষ্য দিয়েও উইন্ডিজ শিবিরে কাঁপন ধরিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে হারলেও বাংলাদেশ দলের প্রাপ্তি লড়াইয়ের দীক্ষা। 

অ্যান্টিগার কন্ডিশন বিরুদ্ধ। টস জিতলে বোলিং করা অনুমিত সিদ্ধান্ত। স্বাগতিক অধিনায়ক ক্রেগ ব্রাথওয়েট ভিন্ন কিছুর কথা ভাবেননি। এরপর এক প্রান্ত দিয়ে মাহমুদুল জয়, নাজমুল শান্ত, মুমিনুল হকের ডাক মারার প্রতিযোগিতায় চার বছর আগের সেই ৪৩ রানে অলআউটের লজ্জার শঙ্কা ফিরে আসে। শেষ পর্যন্ত সাকিব ৫১ রানের ইনিংস খেলে দলকে ১০৩ রানের পুঁজি এনে দেন। 

জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ পেসারদের যোগ্য সম্মান দিয়ে ব্যাটিং শুরু করে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মুস্তাফিজ-এবাদতরা আগুনে বোলিং করেছেন। ব্রাথওয়েট-ক্যাম্পবেল তা ঠান্ডা মাথায় সামলে গেছেন। ভালো শুরু পাওয়া, মিডল অর্ডারে রান পাওয়ার পরও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৬৫ রানে অলআউট হয়ে যায়। লিড নেয় ১৬২ রানের। 

অধিনায়ক ব্রাথওয়েট ২৬৮ বল খেলে নয় চারের শটে ৯৪ রান করেন। ক্যাম্পবেল ৭২ বলে করেন ২৪ রান। এনক্রুমাহ বোনার ৯৬ বলে করেন ৩৩ রান। জার্মেইন ব্ল্যাকউড ১৩৯ বলে ৬৩ রান করেন। শেষ ৬৮ রানে ৭ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। 

জবাব দিতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে একটু ভালো শুরু করে বাংলাদেশ। তামিম ও জয় ৩৩ রানের জুটি গড়েন। সিনিয়র ওপেনার ফিরে যান ৩১ বলে ২২ রান করে। এরপর নাইট ওয়াচম্যান মিরাজ ফিরে যান ২ রান। পরেই আউট হন শান্ত (১৭), মুমিনুল (৪), লিটনরা (১৭)। ১০৯ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। 

ইনিংস হারের লজ্জা তখন সামনে। সম্মান বাঁচাতে তখনও দরকার ৫৩  রান। হাতে মাত্র চার উইকেট। ওখান থেকে জুটি গড়েন সাকিব ও নুরুল হাসান। দু’জনই ফিফটি তুলে নেন। ১২৩ রানের জুটি গড়েন। সাকিব ফিরে যান ৬৩ রান করে। নুরুল করেন ৬৪ রান। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ২৪৫ রানে অলআউট হয়। লিড নেয় ৮৩ রানের। 

জবাব দিতে নেমে ৯ রানে ৩ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ধারাভাষ্যকক্ষে তখন সর্বনিম্ন রানের লিড নিয়েও জয়ের রেকর্ডের হাতড়াচ্ছে। শেষ পর্যন্ত সর্বনিম্ন রানের পুঁজি নিয়ে জেতা হয়নি। বরং ওই তিন উইকেট হারিয়েই জোহান ক্যাম্পবেল ও জার্মেইন ব্ল্যাকউড জয় তুলে নেন। ওপেনার ক্যাম্পবেল করেন ৫৮ রান। ব্ল্যাকউডের ব্যাট থেকে আসে ২৬।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন কেমার রোচ। প্রথম ইনিংসে শুরুর দুই উইকেট নেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। আলজারি জোসেপ দুই ইনিংসেই তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন। বাংলাদেশের মিরাজ প্রথম ইনিংসে চার উইকেট নেন। খালেদ প্রথম ইনিংসে দুটি ও দ্বিতীয় ইনিংসে নেন তিন উইকেট।