গত কয়েক মাস ধরেই জিনেদিন জিদানকে নিয়ে গুঞ্জন। শুরুতে ফ্রান্সের একাধিক গণমাধ্যমের খবর, পিএসজির কোচ হচ্ছেন জিদান। বিষয়টি তাৎক্ষণিক অস্বীকার করেছিলেন জিজুর ব্যক্তিগত এজেন্ট। এর পরও থেমে ছিল না গুঞ্জন। 

মারিওসি পচেত্তিনোর চাকরি যাওয়ার পর গুঞ্জনের ডালপালা আরও ছড়ায়। পরে পিএসজির মালিক খেলাইফি বলে দেন, জিদানের সঙ্গে তাদের কোনো কথাই হয়নি। সবশেষ মুখ খুললেন জিদান। নিজের ৫০তম জন্মদিনে ফরাসি দৈনিক 'এল ইকুইপে'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাটি করে দিলেন সব গুঞ্জন। জানালেন আপাতত তার ইচ্ছাটা ফ্রান্স জাতীয় দলের কোচ হওয়া।

প্রশ্ন :ফ্রান্স দলের হয়ে মাঠ মাতিয়েছেন। ছিলেন দলনেতাও। এবার কি কোচের চেয়ারে বসতে চান?

জিদান :লেস ব্লুজের সঙ্গে পথচলা আমার এখনও বাকি। অবশ্যই একদিন এই দলেরও কোচ হবো। যদিও এটা আমার হাতে নেই। আমি চাই ফ্রান্স জাতীয় দলের হয়ে পুরো বৃত্তটা পূরণ করতে। খেলোয়াড় হিসেবে এই দলের জার্সিটা গায়ে জড়ানোর সুযোগ হয়েছিল, যে অনুভূতিগুলো আমার দেখা সেরা। বর্তমান দলটা খুবই দারুণ। তাদের একটা লক্ষ্য আছে। কখনও যদি সুযোগ আসে, আমি আবারও এই দলের একজন হতে চাইব। আসলে এখানে মোটেও আমার হাত নেই। আমি কেবল নিজের ইচ্ছার কথাটা জানালাম। আমার দেখা ফ্রান্স দলটা বেশ সুন্দর ও গোছানো।

প্রশ্ন :পিএসজি কি আপনাকে কোচের প্রস্তাব দিয়েছিল? তাদের কি না বলে দিয়েছেন?

জিদান :কখনও না বলতে নেই। বিশেষ করে যখন আপনি কোচের চেয়ারে বসা থাকবেন। যখন আমি একজন খেলোয়াড়, তখন আমি যে কোনো ক্লাবকেই বেছে নিতে পারব। কিন্তু কোচের বেলায় সেটা ভিন্ন, তখন কিন্তু ৫০ ক্লাবকে বাছতে পারব না। বড়জোর সেটা দুই কিংবা তিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। আমি যদি কোনো ক্লাবে ফিরে যাই, সেটাকে জিততে হবে। বিষয়টি আমি বিনয়ের সঙ্গেই বলছি। সেজন্য আমি চাইলেই যে কোনো ক্লাবে যেতে পারি না। আরেকটা কারণ হলো, আমি সবখানের সঙ্গে নিজেকে মেলাতে পারব না। সেখানকার ভাষা, উদাহরণস্বরূপ, কিছু কিছু কন্ডিশনে কোচিং করানো বেশ কঠিন। যখন লোকে আমাকে বলে, আপনি কি ম্যানইউতে যেতে চান? আমি এর মানেটা বুঝি; কিন্তু আমি ইংলিশের পুরো মাস্টার না। জানি, অনেক কোচই কাজ করে যাচ্ছেন যারা কিনা ভাষাগত সমস্যা নিয়েও। কিন্তু আমার বিষয়টি পুরো ভিন্ন, আমাকে জিততে হলো বিভিন্ন দিক নিয়ে খেলতে হয়, আসলে এটা বৈশ্বিক ব্যাপার। আমি জানি, জিততে হলে কী করা প্রয়োজন।'

প্রশ্ন :রিয়ালে আপনি কেন পাঁচ নম্বর জার্সি বেছে নিয়েছিলেন?

জিদান :পাঁচ আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। এটা বলতে পারেন, আমার জীবনে সৌভাগ্যের। একটা উদাহরণ দেওয়া যাক, আমি পাঁচটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের সঙ্গে জড়িত। তিনটি কোচ হিসেবে, দুটির একটি খেলোয়াড় আর একটি কার্লো আনচেলত্তির সহকারী হিসেবে। দেখুন, যখন আমি রিয়ালের সঙ্গে চুক্তি করি তখন পেরেজ আমাকে বলেছিল, কেবল একটা জার্সিই খালি। আছে সেটা নাম্বার ফাইভ। আমি উত্তরে বলি কোনো সমস্যা নেই ওটাই আমি পরব। এই নাম্বার ফাইভ আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে।

প্রশ্ন :আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

জিদান :কোচিং চালিয়ে যাওয়া, এরপর না হয় একটা প্রকল্পের লিডার হবো। সেটা হতে পারে কোনো ক্লাবের প্রেসিডেন্ট কিংবা কোনো কোম্পানির ম্যানেজার। এরই মধ্যে আমি জেড ফাইভ নামের একটি কোম্পানি চালু করেছি। যেখানে আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্য জড়িত।