ফুটবলের অনূর্ধ্ব-১৯-এ আবহনীতে শাকিল নামে একজন গোলকিপার ও আশা নামে আরও একজন বিকেএসপিতে অনুশীলন করছেন। অনেকে অনূর্ধ্ব-১৪, ১৫ ও ১৬-এ অংশ নিয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে গৌরব অর্জন করেছেন।

এ ছাড়া দড়িলাফে চারবার গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখান রাসেল নামে এক যুবক। ২০০৭ সাল থেকে এমন চিত্র দেখা গেছে ঠাকুরগাঁওয়ের পল্লীবীর স্পোর্টস সেন্টারে। তাই স্পোর্টস সেন্টারটি নিয়ে আশায় বুক বাঁধেন তরুণ-যুবকরা।

তবে তাদের সেই স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে। এখন থেকে সেখানে কোনো অনুশীলন হবে না, কেউ এলাকার হয়ে ক্রীড়াঙ্গনে দ্যুতি ছড়াবে না। অভিযোগ উঠেছে, ১৫ বছর আগে স্টেডিয়ামের জন্য নামমাত্র মূল্যে জমি কিনে গত মে মাসে তা বিক্রি করে দিয়েছেন প্রবাসী ডা. সাইফুল্লাহ মোহাম্মদ সৈয়দ। স্পোর্টস সেন্টারটি কিনেছেন শিল্পপতি মোক্তার হোসেন বাবু। তিনি ওই স্টেডিয়ামে গাছের চারা রোপণ করেছেন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ২০০৭ সালে স্টেডিয়ামের জন্য স্থানীয় ২০ জন মিলে প্রায় ১২ একর জমি বিক্রি করেন। জমি রেজিস্ট্রি হয় স্থানীয় ক্রীড়াব্যক্তিত্ব প্রবাসী ডা. সাইফুল্লাহ মোহাম্মদ সৈয়দের নামে। কথা ছিল তাঁদের সন্তানরা সেখানে চাকরি পাবেন।

কিছু দিন পর তাঁদের কানে আসে, আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়ামে নিজস্ব হাসপাতাল লাগবে। সে হিসেবে প্রথমেই শুরু হয় হাসপাতাল তৈরির কাজ। হাসপাতাল ও স্টেডিয়ামের যাত্রা শুরু হয় একই সঙ্গে। কোচও নিয়োগ দেওয়া হয়। স্টেডিয়ামের নাম রাখা হয় পল্লীবীর স্পোর্টস সেন্টার। হাসপাতালের নামকরণ করা হয় মায়মুনা মাতা শিশু হাসপাতাল।

কিছু দিন পর জানা গেল, সেখানে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম হবে। তিন একর জমি দিতে রাজি হন সাইফুল্লাহ মোহাম্মদ। তবে ফাইলটি বেশিদূর আগায়নি।

জমিদাতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খেলাফত হোসেন অভিযোগ করেন, ডা. সাইফুল্লাহ এলাকাবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তাকে বলেছিলেন, এলাকায় আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম হবে, অনেক মানুষের কর্মের ব্যবস্থা হবে। এখন বেশি দামে পল্লীবীর স্পোটর্স সেন্টারটির ৯ একর জমি বিক্রি করেছে। বাকি ৪ একর হাসপাতাল ও নার্সিং ইনস্টিটিউট চালু রেখেছে। স্টেডিয়ামের নামে বিদেশিদের কাছ থেকে অনুদান এনেছেন তিনি। স্টেডিয়াম হোক আর না হোক, তাদের জমি ফেরত দেওয়া হোক।

প্রতিষ্ঠানটির কোচ আফজাল হোসেন বলেন, স্পোর্টস সেন্টারটি দাঁড় করাতে অনেক পরিশ্রম হয়েছে তাদের। হঠাৎ রাতারাতি কেন বিক্রি হয়ে গেল, কিছুই বুঝতে পারছেন না।

সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুস আলী বলেন, যখন দেখতাম ছেলেমেয়েরা সেই জমিতে খেলা করছে, তা দেখে জমি বিক্রি করার কষ্ট কমে যেত। এখন তা বিক্রি হওয়ায় কষ্ট আরও বেড়ে গেল।

সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান হান্নু বলেন, তরুণ প্রজন্মকে মাদকের হাত থেকে ফিরিয়ে আনতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে সেন্টারটি। হঠাৎ এটির মালিকানা পরিবর্তন হওয়ায় মানুষ হতাশ।

প্রবাসী সাইফুল্লাহ মোহাম্মদ সৈয়দ বিদেশে থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তার ছোট ভাই সৈয়দ আহম্মদ দাবি করেন, লোকসানের কারণে স্পোর্টস সেন্টারটি বিক্রি করা হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, বিভিন্ন অসুবিধার কারণে ওই জমি শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের জন্য নেওয়া হয়নি।