- খেলা
- রোনালদোর বাজার ধস, কারণ কী?
রোনালদোর বাজার ধস, কারণ কী?

ছবি: ফাইল
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো; এক সময় ক্লাবগুলোর জন্য ছিলেন সোনার ডিম পাড়া হাঁসের মতো! এমন কোনো ক্লাব নেই, যারা তাকে পেতে চাইত না। ইউরোপের ফুটবল বাজারের অন্যতম বড় ক্রেতা ক্লাব পিএসজি, ম্যানসিটি এমনকি চেলসিও স্বপ্ন দেখত একদিন রোনালদো তাদের জার্সি গায়ে মাঠ মাতাবেন। কিন্তু এখন হচ্ছে তার উল্টো।
যে রোনালদোর জন্য কোষাগারের সব অর্থ সাবাড় করতে প্রস্তুত ছিল পিএসজি, তারাই এবার তাঁকে ফিরিয়ে দিল। শুধু তারাই নয়, প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব চেলসিও তাঁকে নিতে নারাজ। দলটির কোচ থমাস টুখেল কিছুতেই চাইছেন না রোনালদো তাঁর ডেরায় আসুক।
চারদিকে এমন 'না' এর মাঝে সিআর সেভেনের বাজারমূল্যে লাগল বিশাল ধাক্কা। কমতে কমতে এখন ৩০ মিলিয়নের ঘরে রোনালদো।
যেভাবে দামি থেকে কম দামি
বছর বাজারমূল্য (ইউরো) ক্লাব
জানুয়ারি ২০১৮ ১২০ মিলিয়ন রিয়াল
ডিসেম্বর ২০১৮ ১০০ মিলিয়ন জুভেন্তাস
জুন ২০১৯ ৯০ মিলিয়ন জুভেন্তাস
ডিসেম্বর ২০১৯ ৭৫ মিলিয়ন জুভেন্তাস
এপ্রিল ২০২০ ৬০ মিলিয়ন জুভেন্তাস
জুন ২০২১ ৪৫ মিলিয়ন জুভেন্তাস
ডিসেম্বর ২০২১ ৩৪ মিলিয়ন ম্যানইউ
জুন ২০২২ ৩০ মিলিয়ন ম্যানইউ
ভাবা যায়, ২০১৮ সালেও যে রোনালদোর বাজারমূল্য ছিল ১২০ মিলিয়ন ইউরো। কয়েক বছর না যেতেই তাঁকে নিয়ে এত অনীহা। এর পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছেন ফুটবলবোদ্ধারা। সম্প্রতি খেলাধুলা বিষয়ক স্প্যানিশ দৈনিক 'মুন্ডো দেপোর্তিভো'র সম্পাদকীয়তে রোনালদোর কম দামি খেলোয়াড় বনে যাওয়ার কারণ হিসেবে কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হয়।
যার মধ্যে একটি রোনালদো ২০১৮ সালের পর রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে যে দুই ক্লাবে ছিলেন তাদের অবস্থা ওই সময় ছিল খুবই শোচনীয়। জুভেন্তাস নিজেদের হারিয়ে খোঁজে। রোনালদো যাওয়ার পর তাঁকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন বুনেছিল তুরিনের ক্লাবটি। কিন্তু প্রথম মৌসুমে সুপারকোপা ও সিরি-এ লিগের ট্রফি ঘরে তোলে। দুটি শিরোপা জিতলেও তাদের মনে ছিল না আনন্দ। কারণ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নাগাল পায়নি তারা।
ধসের তিন কারণ
*ক্লাবগুলো মেজর ট্রফি না পাওয়া
*ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের গ্রাফ নিম্নমুখী
*মাঠের গতি আর ছন্দে কিছুটা হেরফের
এরপর লিগ শিরোপাসহ রোনালদোর তিন বছরে মোট পাঁচটি ট্রফি পেলেও তাঁর প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। যদিও তাঁর মাঠের পারফরম্যান্স একেবারে মন্দ ছিল না। সব মিলিয়ে ১৩৪ ম্যাচ থেকে করেছিলেন ১০১ গোল। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আলো ছড়াতে না পারায় ক্লাব বদলে ম্যানইউতে আসেন। নিজের চেনা ক্লাবে আরও বেশি হতাশ হতে হলো রোনালদোকে।
প্রথম মৌসুমে ম্যানইউ এতটা বাজে সময়ের মধ্য দিয়ে যায়, খোদ রোনালদোও ক্লাবটির দিকে আঙুল তুলেছেন। নেই কোনো শিরোপা, তার ওপর ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সও আগের মতো হচ্ছিল না। লিগে রেড ডেভিলদের হয়ে ৩০ ম্যাচে করেন ১৮ গোল।
অথচ আজকের রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদের করেছেন রাজ। আক্রমণভাগের মূল সারথী ছিলেন। লস ব্লাঙ্কোসদের হয়ে প্রায় সব ট্রফিই জিতেছেন তিনি। গোল, রেকর্ড তো নিয়মিতই হতো। দল জিতুক বা হারুক, রোনালদোর উদযাপন থামাতে পারত না প্রতিপক্ষ।
তবে কি শেষের অধ্যায়ে আছেন রোনালদো? এমন প্রশ্ন এখন অনেকেরই মনে হতে পারে। যদিও তিনি নিজেও বারবার বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, যতদিন তার শরীর সায় দেবে ততদিন চালিয়ে যাবেন ফুটবল। বয়স এখন ৩৭; দেখার বিষয়, এভাবে আর কতদিন ফুটবলের সঙ্গে কাটবে পর্তুগিজ সুপারস্টারের।
মন্তব্য করুন