ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

ভিক্টোরিয়ায় ড্রোন উড়িয়ে ছবি তুলতে গিয়ে আটক দুই বাংলাদেশি

ভিক্টোরিয়ায় ড্রোন উড়িয়ে ছবি তুলতে গিয়ে আটক দুই বাংলাদেশি

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এলাকায় অনুমতি ছাড়া ড্রোন ব্যবহার নিষেধ

কলকাতা প্রতিনিধি ও বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২২ | ০৩:০২ | আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২২ | ০৪:১৮

ভারতের স্বাধীনতা দিবসের আগে কলকাতাসহ দেশের সর্বত্র গুরুত্বপূর্ণ স্থান মুড়ে ফেলা হয়েছে কড়া নিরাপত্তা বলয়ে। এমন অবস্থায় কলকাতার ড্রোন নিষিদ্ধ অঞ্চল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল- এ অনুমতি না নিয়ে ড্রোন ক্যামেরা উড়িয়ে ছবি তোলার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুই বাংলাদেশি নাগরিককে। তাদের নাম মো. সিফাত ও মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান। তারা বাংলাদেশের রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাসিন্দা। 

কলকাতা শহরে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থাকায় নিরাপত্তার জন্য ড্রোন উড়াতে গেলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর অনুমতি নিতে হয়। ওই দুই যুবক জানিয়েছে তারা জানতেন না কলকাতায় ড্রোন উড়াতে গেলে অনুমতি নিতে হয়। 

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৯ আগস্ট তারা ভারতে ঘুরতে যান। বুধবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ঘুরে দেখতে যান তারা। সেই সময় ভিক্টোরিয়ার উত্তর দিকে দোতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে ড্রোন ওড়াচ্ছিলেন। দেখতে পেয়েই তাদের আটক করে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের নিরাপত্তা রক্ষীরা। পরে তাদের তুলে দেয়া হয় কলকাতা পুলিশের হাতে। 

এর আগে একই কাণ্ড ঘটানোয় তিন বছর আগে কলকাতায় আটক করা হয়েছিল তিনজন চীনা নাগরিককে। আপাতত পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়ে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কেন তারা ড্রোন ওড়াচ্ছিল তাদের আসল উদ্দেশ্য কি তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। 

এদিকে বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, প্রবাস জীবন থেকে স্বপরিবারে বাঘার দক্ষিণ মিলিকবাঘা গ্রামে যান সিফাত আলীর (২২) পরিবার। এই গ্রাম থেকে চাচা জিল্লর রহমানকে (৩৫) নিয়ে কলকাতায় যান বিবিএ ছাত্র সিফাত আলী। আগামী ২৩ আগস্ট পর্যন্ত তাদের পুলিশ হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তাদের আসল উদ্দেশ্য কি তা খতিয়ে দেখার স্বার্থে ভিডিওগুলো ফ্রেম টু ফ্রেম পরীক্ষার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে আবেদন করলে এই নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির আদালত।

সিফাত আলী কোরিয়া প্রবাসী আব্দুল লতিফের ছেলে। চাচা মো. জিল্লর রহমান দক্ষিণ মিলিক বাঘা গ্রামের আব্দুর রউফের ছেলে। ২০১৩ সালে স্বপরিবারে দক্ষিণ কোরিয়ায় চলে যান আব্দুল লতিফ। গ্রিন কার্ডে তারা এখন দক্ষিণ কোরিয়ার বাসিন্দা। তার ছেলে সিফাত আলী সেই দেশটির ইনসোন ইউনির্ভাসিটি বিবিএ (ট্রেড এ্যান্ড কমার্স) ছাত্র। মহামারি করোনার আগে মিলিকবাঘা গ্রামের বাড়িতে আসেন আব্দুল লতিফ। ২ মাস আগে তিনি স্ত্রী ও ছেলেকে রেখে কোরিয়ায় চলে গেছেন।

সিফাতের মা সেলিনা খাতুন শাপলা শনিবার সমকালকে বলেন, গত ৯ আগষ্ট বৈধ ভিসায় কলকাতায় গেছে সিফাত ও তার চাচা জিল্লর রহমান। আমার জন্য ওষুধ কেনা ও বেড়ানো উদ্দেশে যায় তারা। সেখানে গিয়ে শখের বসে ড্রোন ক্যামেরা উড়িয়ে ছবি তোলে। কিন্তু সেই এলাকাটি সংরক্ষিত তা তাদের জানা ছিল না। তার দাবি, বৈধ ভিসায় বিভিন্ন দেশে গিয়ে শখের বসে ছবি তুলে বাঘা ফেসবুক পেজে দেয় সিফাত। চলতি মাসের ২৯ আগষ্ট দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার জন্য বিমানের টিকিট কাটা হয়েছে। কিন্তু এর আগেই অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে গেল। কলকাতার পুলিশের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছেন বলে জানান তিনি। 

তিনি জানান, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া জন্য যোগাযোগ করছি। এছাড়া আইনিভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সিফাতের অপর এক চাচাকে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। 

আরও পড়ুন

×