
সলিডারিটি গেমসে ব্রোঞ্জ পদকের পর হাস্যোজ্জ্বল দিয়া সিদ্দিকী ও রোমান সানা। এই আরচারদের কারণেই মান রক্ষা বাংলাদেশের-সংগৃহীত
একটি রুপা, দুটি ব্রোঞ্জ। ইসলামিক সলিডারিটি গেমস নিয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতেই পারেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা। তুরস্কের কোনিয়ায় বৃহস্পতিবার শেষ হওয়া এ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের তিন পদকের সবগুলোই যে এসেছে আরচারি থেকে। বাকি দশ ডিসিপ্লিনের নামের পাশে নেই কোনো পদক। তীরন্দাজদের সাফল্য ছাড়া সলিডারিটি গেমসে বাংলাদেশের প্রাপ্তির খাতায় শূন্য। ব্যর্থতার তালিকায় অ্যাথলেটিকস, ফেন্সিং, হ্যান্ডবল, জিমন্যাস্টিকস, কারাতে, শুটিং, সাঁতার, টেবিল টেনিস, ভারোত্তোলন এবং কুস্তি।
কমনওয়েলথ গেমসে পদকের ধারেকাছেও যেতে পারেননি বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা। সেই তুলনায় সলিডারিটিতে তীর-ধনুকের নিশানাভেদে এসেছে সাফল্য। সম্ভাবনাময় এ ইভেন্টের তিন পদকের সবগুলোই এসেছে দলগত বিভাগ থেকে। কম্পাউন্ড নারী দলগত ইভেন্টে শ্যামলী রয়, রোকসানা ও সুস্মিতার হাত ধরে এসেছে রৌপ্য পদক। ব্রোঞ্জ পদক এসেছে রিকার্ভ পুরুষ ও নারী দলগত ইভেন্ট থেকে।
তবে আরচারিতে যাঁদের কাছে প্রত্যাশা বেশি ছিল সেই রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকী ব্যক্তিগত ইভেন্টে পারেননি নিজেদের মেলে ধরতে। তার পরও পদকের তালিকায় লাল-সবুজের নামটি তো তাঁরাই উঠিয়েছেন। আলোটা ছিল স্প্রিন্টার ইমরানুর রহমানের দিকেও। অ্যাথলেটিকসের ১০০ মিটার ইভেন্টে ফাইনালে উঠে স্বপ্নের দুয়ার খুললেও শেষ বেলায় খেই হারিয়ে ফেলেন লন্ডন প্রবাসী এ তারকা।
জিমন্যাস্টিকসে আলী কাদের হকও আশার ফুল হয়ে ফুটেছিলেন; কিন্তু ফাইনালে গিয়ে নিউজিল্যান্ড প্রবাসী এ জিমন্যাস্টস পারেননি প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তি মেলাতে। কমনওয়েলথের মতো সলিডারিটিতেও কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে টেবিল টেনিসের খেলোয়াড়রা দেখিয়েছেন সঠিক পরিচর্যা পেলে তাঁরাও দেশকে এনে দিতে পারবেন সাফল্য। সম্ভাবনার সাঁতার তুরস্কতেও ডুবেছে। ভারোত্তোলক সোয়াইবা রহমান রাফা ব্যক্তিগত সেরা সাফল্য পেলেও পদকের মঞ্চে উঠতে পারেননি।
নেপালে অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান গেমসে সোনা জয়ী ফেন্সার ফাতেমা সেইবার ইভেন্টের প্রাথমিক পর্ব থেকে ছিটকে যান। শুটিংয়ে এয়ার রাইফেল ইভেন্ট না থাকায় বাংলাদেশের পদক জয়ের আশা ছিল না। স্কিট শুটিংয়ে ব্যর্থ লাল-সবুজের শুটাররা। বরাবরই ঢাকঢোল পিটিয়ে যে কোনো গেমসে অংশ নিতে যাওয়া হ্যান্ডবল, রেসলাররা এবারও তলানিতে শেষ করেছেন।
আরচারির পর কারাতে ইভেন্ট ঘিরে বাংলাদেশের পদকের আশা ছিল। বিশেষ করে এস এ গেমসে স্বর্ণজয়ী কারাতেকা মারজান আক্তার প্রিয়া এবং হুমায়রা আক্তার অন্তরাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছিল সবাই। দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে সাফল্য পাওয়া যতটা সহজ, তার চেয়ে বেশি কঠিন বাইরের প্রতিযোগিতাগুলোতে তা বুঝেছেন কারাতেকরা।
গতকাল নারীদের -৬১ কেজিতে অন্তরা ২-১ পয়েন্টে মরক্কোর প্রতিযোগীর কাছে হেরে বিদায় নেন। আগের দিন বাদ পড়েছেন আল আমিন এবং মারজান আক্তার প্রিয়া। পুরুষ অনূর্ধ্ব-৬০ কেজি কুমি ইভেন্টে ইয়েমেনের প্রতিযোগীকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেও পরে দ্বিতীয় রাউন্ডে বাদ পড়েছেন বাংলাদেশের আল-আমিন। নারীদের ৫৫ কেজি ওজন শ্রেণিতে প্রিয়া আলজেরিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে হেরে যান। তাতেই সমাপ্তি হয় বাংলাদেশের সলিডারিটি গেমসের।
মন্তব্য করুন