- খেলা
- সীমাবদ্ধতা মেনে সাকিবের নয়া যাত্রা
সীমাবদ্ধতা মেনে সাকিবের নয়া যাত্রা

টি২০ দলের নেতৃত্বে ফিরেই এশিয়া কাপের মতো বড় টুর্নামেন্ট খেলতে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। যে যাত্রায় দলের সেরা খেলোয়াড়দের পাচ্ছেন না তিনি। কোচিং স্টাফেও এসেছে পরিবর্তন। এই সীমাবদ্ধতা ও পরিবর্তন মেনে নিয়েই এশিয়া কাপে দল হিসেবে ভালো করতে চান বাঁহাতি এ অলরাউন্ডার। গতকাল আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপ ও নিজের পরিকল্পনা নিয়ে মনের আগল খুলে দিয়েছিলেন সাকিব।
কোন সময়ে কত রান করতে হবে, খেলোয়াড়দের এরকম কোনো পরিকল্পনা দিয়েছেন কিনা?
সাকিব: এই পরিকল্পনাগুলো সচরাচর কোচ ও অধিনায়ক মিলে করে থাকে। আমাদের এখানে একজন নতুন দায়িত্বে এসেছেন, তাঁর সঙ্গে বসে এগুলো করা হবে। এরকম সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা থাকবে বলে আমার মনে হয় না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট যারা খেলে তাদের নিজেদের ধারনা থাকে কীভাবে দলকে জেতানো যায়। এজন্য আলাদা করে বলে দেওয়ার কিছু নেই। আমরা ফোর-ফাইভের স্টুডেন্ট না যে, আমাদের শিখিয়ে দিতে হবে।
বাংলাদেশ কি এবার এশিয়া কাপে ফাইনাল খেলতে পারবে?
সাকিব: আমাদের জন্য কঠিন। বাস্তবসম্মত চিন্তা করলে আমরা যদি এই দুটি ম্যাচ ভালো খেলতে পারি এবং আগের যে সিরিজগুলো খেলেছি বা এক দেড় বছরে যে সিরিজগুলো খেলেছি সেখান থেকে উন্নতির ছায়া যদি রাখতে পারি, তাহলে একটা অর্জন হবে এই টুর্নামেন্টে।
আপনাকে কবে অধিনায়ক হতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে না পরে?
সাকিব: আনঅফিসিয়াল প্রস্তাব কবে দেওয়া হয়েছে বলাটা মুশকিল। অফিসিয়ালি বেশ অনেকদিন। এগুলো গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় না।
এখন যেটা ফোকাসের জায়গা সেটা আগামী দুই-আড়াই মাস। এই সময়ে আমরা কতটা উন্নতি করতে পারি। আমাদের অনেক চোটের সমস্যা আছে। এই প্রতিকূলতার মাঝেও আমরা কীভাবে উন্নতি করতে পারি, সেটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি আমরা ভালো দল। যদি হেরেও যাই তাহলে শেষ ওভারে গিয়ে যেন হারি। প্রতিটি ম্যাচ প্রতিযোগিতা করলাম। যেন মানুষ বোঝে যে, আমাদের মধ্যে উন্নতির ছায়া আছে। আমি বিশ্বাস করি, মানুষ এখন আর আমাদের কাছ থেকে বেশি কিছু প্রত্যাশা করে না। বিশেষ করে টি২০-তে গত ১৬ বছরে তেমন কিছু করতে পারিনি। আমি যা দেখছি, ৫ থেকে ১০ বছর এই সংস্করণটা বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি পরিচিত হবে।
অতীত অভিজ্ঞতা থেকে কী বদলাতে চান?
সাকিব: আমি এসেই কিছু বদলে দেব, আমার মনে হয় না এটা একটা ঠিক চিন্তা। একটা সংস্থা যখন একজনকে দায়িত্ব দেয়, তাঁর নির্দিষ্ট কিছু কাজ থাকে। সেই কাজগুলো করার চেষ্টা থাকবে। এটা না যে পরিবর্তন করতে হবে। এগুলোকে কীভাবে ভালোভাবে ব্যবহার করে ভালো রিটার্ন অব ইনভেস্টমেন্ট পেতে পারি, সেটাই আমার চিন্তা।
মুশফিককে ওপেনিংয়ে খেলানোর কোনো পরিকল্পনা?
সাকিব: আমরা আসলে ব্যাটিং অর্ডার, সেরা একাদশ কী হবে, সেটা নিয়ে চিন্তা করছি না। ম্যাচের এক-দুই দিন আগে থেকে দলটা কী রকম হতে পারে সেটা নিয়ে ভাবব। এর আগে সবাই যে জায়গায় খেলে অভ্যস্ত, তাদের সেরাটা বের করার চেষ্টা করব।
বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্ব করা কতটা কঠিন?
সাকিব: এখন প্রতিটি দেশে, প্রতিটি জায়গায় আসলে একেক ধরনের চ্যালেঞ্জ থাকে। আমাদের এখানে হয়তো এক ধরনের চ্যালেঞ্জ, একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে সেটা হয়তো অন্য ধরনের। অন্য কোনো ক্রিকেট বোর্ডে কিংবা অন্য দেশে প্রতিনিধিত্ব করা, সেটাও এক ধরনের চ্যালেঞ্জ। কোনোটা কম, কোনোটা বেশি। কোনোটা হ্যান্ডেল করার মতো, কোনোটা হয়তো একটু কঠিন। চ্যালেঞ্জ সব দেশেই আছে।
জিম্বাবুয়েতে টিম ডিরেক্টর বলেছিলেন, ব্যাটাররা জায়গা ধরে রাখতে খেলে। এখন থেকে বেরিয়ে আসার উপায় কী?
সাকিব: জায়গা ধরে রাখার জন্য খেলার সবচেয়ে বড় যে জিনিসটা হচ্ছে, আমরা খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস দিতে পারি যে, ব্যর্থ হওয়ার ভয়টা না পেয়ে যেন দলকে কীভাবে সাহায্য করতে পারে, সেটা নিয়ে কাজ করা। আমরা যদি তাদের এই আত্মবিশ্বাস দিতে পারি যে, তারা দলের অংশ এবং তারা দলে থাকবে। আগে হোক পরে হোক রির্টানটা পাওয়া সম্ভব।
আপনি কম প্রস্তুতি নিয়ে ভালো খেলেন।
সাকিব: অনুশীলন কম করি বলব না। আমার কাছে মনে হয় যতটুকু প্রস্তুতি দরকার, আমি অতটুকু নিই। যেটা হয় যে, মিরপুর এসে তিন দিন ট্রেনিং করেছি, তার মানে কিন্তু এই না যে, আমি তিন দিন ট্রেনিং করেছি। এর আগে হয়তো আমি আরও দশ দিন ট্রেনিং করেছি, মিরপুর আসিনি। যেহেতু আপনারা মিরপুরে থাকেন, আমি নিশ্চিত আপনারা দেখতে পাবেন না। তো স্বাভাবিকভাবে কেউ জানে না, আমি ট্রেনিং করছি কি করছি না।
আপনি মুশফিককে কিপিংয়ে চাচ্ছেন?
সাকিব: উইকেটকিপিং যেটা হচ্ছে, উনি এটা করলে আমার কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে। এটার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে টি২০ সময়টা খুব কম থাকে। যেটা হয়, ফিল্ডিংয়ের অ্যাঙ্গেলগুলো উনি খুব সহজে বদলাতে পারেন। আমার কাছে শোনারও দরকার নেই। আমি অন্য একটা-দুটো বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে পারব। কারণ আমার পক্ষে এগারো জন খেলোয়াড় সবসময় দেখা সম্ভব নয়। একমাত্র কিপারই আছে যে এটা ভালো দেখতে পারে। উনার মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড় থাকলে এগুলো সহজ হয়ে যায়।
মন্তব্য করুন