- খেলা
- অনুপ্রেরণা আনাই-আনুচিং, ফুটবল বাড়ি থেকে ফুটবল গ্রাম
অনুপ্রেরণা আনাই-আনুচিং, ফুটবল বাড়ি থেকে ফুটবল গ্রাম
পথে পথে চ্যাম্পিয়ন সাবিনা সানজিদাদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। সরাসরি...
Posted by Samakal on Wednesday, September 21, 2022
যমজ বোন আনাই এবং আনুচিং মগিনী। তাদের বাড়ি ঢুকতেই দেয়ালে শোভা পাচ্ছে রঙে ফুঁটিয়ে তোলা চারটি ফুটবল। যেন এটা ফুটবল বাড়ি। তবে ফুটবলের জোয়ার ওই দেয়ালে আটকে নেই। ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের মারমা গ্রামে। কথা প্রসঙ্গে ওদের বৌদি বললেন, দেখে মনে হচ্ছে আমাদের বাচ্চারাও ওই পথে হাঁটছে।
শুধু আনাই-আনুচিংয়ের বাড়ি নয় খাগড়াছড়ি জেলা সদরের সাতভাইয়াপাড়া গ্রামটাই যেন একটা ফুটবল গ্রামে পরিণত হয়েছে। তারা গ্রামটাকে এতোটাই প্রভাবিত করেছে যে, গ্রামের লোকজন তাদের সন্তানদের পা থেকে ফুটবল কেড়ে নেওয়ার সাহস করেন না। ওই অনুপ্রেরণায় যোগ করতে হবে মনিকা চাকমার নামও।
খাগড়াছড়ির এই তিন ফুটবলার সাফের শিরোপা জয়ী দলের অন্যতম সদস্য। দলটির সঙ্গে সহকারী কোচ হিসেবে কাজ করছেন জেলার আরেক গর্ব তৃষ্ণা চাকমা। অন্য জেলার চেয়ে এই পাহাড়ে তাই আনন্দের জোয়ার একটু বেশি। খেলা শেষ হবার পরেই জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস তাদের প্রত্যেকের জন্য এক লাখ টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করায় উচ্ছ্বাসটা যেন বাড়তি।
আনাই-আনুচিংয়ের বাবা রিপ্রম্নচাই মগ সমকালকে জানান, মেয়েরা দেশের জন্য গৌরব বয়ে এনেছে জেনে খুবই খুশী। সকালে ফোনে কথা বলেছি। তারা নাকি খুশীতে রাতে ঘুমাতেই পারেনি।
তাদের ছোট বৌদি উম্রা মারমা বলেন, এই সংসারে আসার পর ওদের (আনাই-আনুচিং) খেলা দেখছি। ওদের খেলা দেখতে দেখতে আমাদের বাচ্চারাও মনে হয় ওই পথেই হাঁটছে। আরেক বৌদি আরম্নই মগিনী বলেন, টেলিভিশনে খেলা না দেখলেও সকালে সাংবাদিক আসতে থাকলেই পাড়া-প্রতিবেশী বুঝে যায় যে, ওরা আরেকটা সুফল এনেছে।
আনাইদের গ্রামে বেড়াতে আসা রাম্রা মারমা জানান, প্রতিটি মারমা গ্রামে এখন আনাই-আনুচিংয়ের গল্প। ওদের সাফল্যে মারমা পরিবারগুলো মেয়েদের খেলাধুলায় আগ্রহ বেড়েছে। রাম্রা নিজের অসমাপ্ত ফুটবল জীবনের কথা তুলে ধরে জানান, এখন খেলাধুলায় মেয়েদের অর্জনকে সম্মান করা হয়।
খাগড়াছড়ির মনিকা চাকমার বাড়ি দুর্গম লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার মরাচেঙ্গী গ্রামে। তার বাবা বিন্দু কুমার চাকমা জানান, সোমবার রাতে মেয়ের ফোনে সাফ বিজয়ের খবর শুনেছেন। পাহাড়ে তখন গভীর রাত। স্থানীয়রা জানান, আনাই-মনিকার জন্যই ইএনও-ডিসি তাদের গ্রাম চিনেছে। এখন তারা মনিকাদের সুবাদে গ্রামের কিছু উন্নয়ন চান।
বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র জানান, অন্যান্য মেধাবী এবং সম্ভাবনাময় খেলোয়ারদের জন্য জেলা প্রশাসন সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। তাদের দেখে এলাকার অন্যরা যাতে অনুপ্রাণিত হয় সেই কাজও করা হচ্ছে। এছাড়া এলাকার লোকজন নানান সমস্যার কথা বলেছেন। তাদের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন