পুল-স্নুকার অনেকের কাছেই অপরিচিত। অথচ এই অপরিচিত খেলাতেই চমক দেখিয়েছেন মুনতাসের জুবেরী। গত আগস্টে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত এশিয়ান ওপেন নাইন বল চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়ে বাংলাদেশকে দুটি জয় এনে দিয়েছেন। ২০১৯ সালে টেন বল ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন কো পিন চানকে ৯-৬ ব্যবধানে হারিয়ে দেন মুনতাসের। এটি দেশের জন্য অনেক বড় অর্জন। পুল-স্নুকার সম্পর্কে জানতে চাইলে মুনতাসের জুবেরী বলেন, 'এটি একটি কিউ স্পোর্টস গেম। অনেকটা পুলের মতো মনে হলেও এটি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম একটি খেলা। পুল খেলা হয় সর্বোচ্চ ১৫টি বল দিয়ে। স্নুকার খেলা হয় ২১টি বল দিয়ে, যার মধ্যে ১৫টি লাল বল আর ছয়টি অন্যান্য রঙের। এই বলগুলো নির্দিষ্ট একটি সাদা বল দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু নিয়মকানুনের মাধ্যমে খেলতে হয়। বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে এটি খেলা হয় বাংলাদেশ বিলিয়ার্ড অ্যান্ড স্নুকার ফেডারেশনের মাধ্যমে। বর্তমানে আমি ন্যাশনাল নাইন বল চ্যাম্পিয়ন।'

জন্ম ও বেড়ে ওঠা
মুনতাসেরের জন্ম রাজশাহীতে। বাবা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা। ছোটবেলা থেকে বাবার উৎসাহেই খেলাধুলা করে আসছেন তিনি। বাবার উৎসাহ আর আগ্রহেই যত অর্জন মুনতাসেরের। গৃহিণী মাও উৎসাহ দিয়ে আসছেন ছেলেকে। কলেজ পর্যন্ত রাজশাহীতে পড়ে ২০১০ সালে ঢাকায় থিতু হন মুনতাসের। ভর্তি হন এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে। সেখান থেকেই বিবিএ করেন।

স্নুকারে সাফল্য
২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে স্নুকারে আসেন মুনতাসের। তখন রাজশাহীতেই থাকতেন। খেলার জন্য ঢাকায় আসতেন। টুর্নামেন্ট শেষে ফের রাজশাহী চলে যেতেন। এভাবে খেলতে খেলতে বিভিন্ন ক্লাব ডিঙিয়ে ২০১৭ সালে ন্যাশনাল নাইন বল চ্যাম্পিয়ন হয়ে যান মুনতাসের। এরপর কাতারে অনুষ্ঠিত এশিয়ান স্নুকারে দু'বার বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। চলতি বছরের আগস্টে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত এশিয়ান ওপেন নাইন বল চ্যাম্পিয়নশিপেও বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। এই টুর্নামেন্টে দুটি জয়ও পান। একটিতে ২০১৯ সালে টেন বল ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন কো পিন চানকে ৯-৬ ব্যবধানে পরাজিত করেন। মুনতাসের বলেন, 'এটি বাংলাদেশের জন্য এবং আমার জন্য অনেক বড় একটি অর্জন।'

আগামীর স্বপ্ন
আগামীর স্বপ্নের কথা জানতে চাইলে মুনতাসের জুবেরী বলেন, 'পুল-স্নুকারে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সাফল্য এনে দিতে চাই। তবে এর জন্য সরকার ও বিবিএসএফের সহযোগিতা প্রয়োজন। একটু পেছনে ফিরে তাকান। দেখবেন, আজ থেকে ২০ বছর আগেও আমাদের দেশে ক্রিকেট এতটা জনপ্রিয় ছিল না। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ও বিসিবির নজরদারির কারণে ক্রিকেট আজ সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। তেমনি কিউ স্পোর্টসে (পুল এবং স্নুকার) সরকার ও বিবিএসএফ নজর দিলে বেশি নয়, তিন থেকে চার বছরের মধ্যেই আন্তর্জাতিক সাফল্য এনে দিতে পারব। আশা করি, সেই সহযোগিতা সরকার ও বিবিএসএফ আমাদের করবে।'

বিষয় : পুল-স্নুকার মুনতাসের জুবেরী টেন বল ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন

মন্তব্য করুন