- খেলা
- ফেভারিটদের হালহকিকত
ফেভারিটদের হালহকিকত
-samakal-634b89d14f84f.jpg)
'তোমার ফেরারির রং কী, ফিঞ্চি?' মেলবোর্নে ক্যাপ্টেনস মিডিয়া ডে অনুষ্ঠানের সঞ্চালকের মজার ছলে করা প্রশ্নটি হাসি দিয়ে এড়িয়ে যান অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক। এই ফেরারি কিন্তু গাড়ি নয়, এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে শক্তিধর অস্ট্রেলিয়াকে রূপক অর্থে বুঝিয়েছেন সঞ্চালক। একে তো নিজের দেশে বিশ্বকাপ, তার ওপর আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন তারা। বোদ্ধাদের চোখে তো বটেই, এবারের বিশ্বকাপের আরেক ফেভারিট ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলারও অস্ট্রেলিয়াকেই হট ফেভারিট মানছেন। এই দুই দলের সঙ্গে সময়ের অন্যতম সেরা দল ভারত এবং গত কয়েকটি আইসিসি ইভেন্টে দারুণ পারফর্ম করা নিউজিল্যান্ডও শিরোপার অন্যতম দাবিদার। পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকাকেও হিসাবের বাইরে রাখা যাবে না। ১৬ দলের আসরে সুপার টুয়েলভের বাইরে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কাও চমক দেখাতে পারে।
তবে হট ফেভারিট অস্ট্রেলিয়া কিছুটা ক্লান্ত। আগস্টের শেষ থেকে টানা খেলার মধ্যে আছে তারা। গত ২৬ দিনে তারা ৮টি ম্যাচ খেলেছে, যার মধ্যে ৩টি ভারতে গিয়ে। গত শুক্রবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ টি২০ ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর ক্লান্তির বিষয়টি স্বীকার করে নেন ফিঞ্চ, 'আমার মনে হয়, এই মুহূর্তে ছেলেরা কিছুটা ক্লান্ত। গত ছয় থেকে আট সপ্তাহ আমরা টানা খেলার মধ্যে ছিলাম।' এই ক্লান্তির জন্যই গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ছন্দে দেখা যাচ্ছে না। এমনকি পেসত্রয়ী স্টার্ক-কামিন্স-হ্যাজেলউডকে স্বরূপে পাওয়া যাচ্ছে না। অ্যাডাম জাম্পার স্পিনে ধার দেখা যাচ্ছে না। অসি অধিনায়ক ফিঞ্চের প্রত্যাশা, ২২ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে তরতাজা হয়ে উঠবেন তাঁরা। কাগজে-কলমে দারুণ ভারসাম্যপূর্ণ এক দল অস্ট্রেলিয়া। ওয়ার্নার, ফিঞ্চ, মার্শ, ওয়েডদের সঙ্গে টিম ডেভিড যোগ হওয়ায় অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং অন্য মাত্রা পেয়েছে। এবারের আসরের অন্যতম সেরা তারকা হয়ে উঠতে পারেন সিঙ্গাপুরে জন্ম নেওয়া এই বিগ হিটার। ইতিহাস যদিও অন্য কথা বলে। টি২০ বিশ্বকাপের গত সাত আসরে স্বাগতিকদের শিরোপা জেতার নজির নেই।
স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার মতো ভারতও দারুণ শক্তিশালী। কোহলি, রোহিত, রাহুল, সূর্যকুমারকে নিয়ে গড়া ব্যাটিং লাইন সম্ভবত এবারের বিশ্বকাপের সেরা। তাঁদের সঙ্গে পাওয়ার হিটার হার্দিক পান্ডিয়া জ্বলে উঠলে যে কোনো দলকে উড়িয়ে দিতে পারে ভারত। তবে চোটের কারণে জাসপ্রিত বুমরাহ ছিটকে যাওয়ায় ভারতের বোলিং কিছুটা দুর্বল হয়ে গেছে। ভুবনেশ্বর, হার্শাল, শামি, চাহাল অনেক ভালো বোলার। কিন্তু বুমরাহ এমন একজন, যার শূন্যস্থান পূরণ হওয়ার নয়। তিনি না থাকায় ডেথ ওভারে সমস্যায় পড়তে পারে ভারত। সে সঙ্গে স্পিনিং অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজার না থাকাও ভোগাবে তাঁদের। ইংল্যান্ডেরও মূল শক্তি বিস্ম্ফোরক ব্যাটিং। বাটলার, হেলস, মালান, মঈন, স্টোকসদের সঙ্গে বিগ হিটার লিভিংস্টোন, হ্যারি ব্রুক আছেন। তাদের যে কেউ ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন। তাদের পেস আক্রমণটাও বেশ ভালো। তিন পেসার টপলি-ওকস-উইলি দারুণ ছন্দেও আছেন। মঈন-আদিলের স্পিন কার্যকর।
তাসমান সাগরের অপর পাড়ের দেশ নিউজিল্যান্ড বেশ কিছুদিন ধরেই আইসিসি ইভেন্টে দারুণ পারফর্ম করছে। গত বছর দুবাইয়ে টি২০ বিশ্বকাপে ফাইনালিস্ট ছিল তারা। ২০১৯ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপেও সুপার ওভারে তাদের কপাল পুড়েছে। ২০১৫ বিশ্বকাপের ফাইনালে হেরেছিল তারা অস্ট্রেলিয়ার কাছেই। এবার উইলিয়ামসন কি পারবেন এত দিনের আক্ষেপ দূর করতে? কিউইদের বোলিংটা দুর্দান্ত। বোল্ট-সাউদি-ফার্গুসন-মিলনের পেসের সঙ্গে ব্রেসওয়েলের স্পিনের সমন্বয়ে দারুণ এক বোলিং আক্রমণ তাঁদের। উইলিয়ামসনের নেতৃত্বে ব্যাটাররা জ্বল উঠলেই হবে। পাকিস্তানেরও বোলিংটা দুর্ধর্ষ। শাহিন আফ্রিদি ফিট হয়ে উঠেছেন। শাহিন, নাসিম, রউফের সমন্বয়ে গড়া পেস আক্রমণ টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা হিসেবে বিবেচিত। তবে পাকিস্তানকে ভোগাবে ব্যাটিং। বাবর আজম ও রিজওয়ান বাদে ভরসা করার মতো কেউ নেই।
মন্তব্য করুন