- খেলা
- অজেয় ইংল্যান্ডের রহস্য
অজেয় ইংল্যান্ডের রহস্য
-samakal-63730a4415190.jpg)
ইংল্যান্ডের এই দলটা কী সাদা বলের ক্রিকেটে সর্বকালের সেরা! মেলবোর্নের সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন করা হলে বেশ সংযত প্রতিক্রিয়া দেন জস বাটলার। তবে এই দলটি যে আরও অনেক দিন রাজত্ব করবে, সে বিষয়ে ইংল্যান্ড অধিনায়কের কোনো সন্দেহ নেই। তিন-চার বছর ধরে নিজেদের আলাদা একটা উচ্চতার দিকে নিয়ে চলেছে ইংল্যান্ড। টেস্ট ক্রিকেটে তাদের একাধিপত্য নিয়ে প্রশ্নের জায়গা থাকলেও সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তারাই রাজা। সেটা শুধু ওয়ানডের পর টি২০ বিশ্বকাপ জেতার কারণেই নয়, কয়েক বছর ধরে সাদা বলে রীতিমতো শাসন করছেন বাটলার-স্টোকসরা।
ইংল্যান্ডের শিরোপা জয়ের কারণ বলতে গিয়ে অল্প কথায় দারুণ ব্যাখ্যা দিয়েছেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার মোহাম্মদ কাইফ। টুইটারে তিনি পোস্ট করেন, 'টি২০ বিশ্বকাপ থেকে যা শিখলাম :শুধু বোলিং দিয়ে পাকিস্তান বিশ্বকাপ জিততে পারেনি, ভারত পারেনি শুধু ব্যাটিং দিয়ে। কিন্তু ইংল্যান্ডের ব্যাটার রয়েছে, পেসার রয়েছে, স্পিনার রয়েছে, দারুণ ফিল্ডিংও করে তারা। সে সঙ্গে ভাগ্যটাও তাদের সহায় ছিল।' ফাইনাল ও সেমিফাইনাল- দুই ম্যাচে টস জেতা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখানে আরও একটি বিষয় উল্লেখ করলে এ গুরুত্বটা বোঝা যাবে। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে নকআউট পর্বসহ শেষ ১১টি ম্যাচে টসজয়ী দল বিজয়ীর বেশে মাঠ ছেড়েছে।
ভাগ্যের সহায়তা হয়তো কিছুটা ছিল, তবে সে সহায়তাকে কাজে লাগানোর জন্য শক্তিশালী একটি দল তো লাগবে! সীমিত ওভারের ক্রিকেটে দারুণ দক্ষ এক ঝাঁক খেলোয়াড় রয়েছে ইংল্যান্ডের দলে। সে কারণেই জোফরা আর্চার, জনি বেয়ারস্টো, ডেভিড মালান, মার্ক উড, রিসে টপলি- সেরা একাদশের এই পাঁচ ক্রিকেটারকে ছাড়াই শিরোপা জিতেছে তারা। এখানেই ইংল্যান্ডের শক্তির গভীরতা বোঝা যায়। এই এক ঝাঁক সাদা বলের স্পেশালিস্ট কিন্তু এত সহজে পায়নি তারা। ২০১৫ বিশ্বকাপ বিপর্যয়ের পর তারা সাদা বলের ক্রিকেটকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে আগায়। সেই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরে প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল তাদের। তৎকালীন অধিনায়ক ইয়ন মরগানের ইচ্ছায় ১৮ থেকে ২০ জন ক্রিকেটারকে সাদা বলের ক্রিকেটের জন্য আলাদাভাবে গড়ে তোলা হয়। সময়ের সঙ্গে বাটলার, স্টোকস, মঈন, রশিদদের কোর গ্রুপের সঙ্গে যোগ হন লিয়াম লিভিংস্টোন, স্যাম কারেনের মতো প্রতিভা। এই বিশ্বকাপে দেখা মিলেছে হ্যারি ব্রুক ও ফিল সল্টের মতো ক্রিকেটার। তাই ইংল্যান্ড যে আরও বেশ কয়েক বছর সাদা বলের ক্রিকেটে রাজত্ব করবে, সেটা নির্দি্বধায় বলা যায়।
ইংল্যান্ডের এই দলটার এমন দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠার পেছনে রয়েছে তাদের আগ্রাসী মনোভাব। এখানেও সাবেক অধিনায়ক মরগানের ভূমিকা রয়েছে। আগ্রাসন ও স্মার্ট ক্রিকেট খেলা ছিল মরগানের দর্শন। সেই আগ্রাসনের মন্ত্র বাটলারও ধরে রেখেছেন। সব কিছুর পরও বেন স্টোকসের মতো ইস্পাতকঠিন মানসিকতার একজনকে পাওয়া ইংল্যান্ডের জন্য অনেক বড় আর্শীবাদ। বড় মঞ্চে চাপের মুখে তাঁর মতো পারফরমার বর্তমান বিশ্ব ক্রিকেটে দ্বিতীয়টি নেই। ২০১৬ টি২০ ফাইনালে চার-ছক্কা খেয়ে শিরোপা হাতছাড়া করলেও ২০১৯ সালে লর্ডসে তাঁর ৮৪ রানের ইনিংসেই কাপ জেতে ইংল্যান্ড। গত রোববার ৪৯ বলে ৫২ রানের ইনিংস দিয়ে আবার এনে দিলেন শিরোপা।
মন্তব্য করুন