
এক দিন আগে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আপসেট দেখেছি। আমি মনে করি, সৌদি আরবের কাছে আর্জেন্টিনার পরাজয় ফেভারিটদের জন্য সতর্কবার্তা। সৌদির জয়ের পর আমার কাছে মনে হচ্ছে, 'ছোট' দলগুলো কাতার বিশ্বকাপে বাজিমাত করবে। বড় দলগুলোর জন্য হুমকি এখন আন্ডারডগরা। সৌদি আরব আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে দেওয়ায় ছোট দলগুলোর মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাসও চলে এসেছে, চেষ্টা করলে বড় দলগুলোকে হারানো যায়। আমার মনে হচ্ছে, এবারের বিশ্বকাপ বড় দলগুলোর জন্য মাথাব্যথার কারণ ছোটরা। মঙ্গলবার বাংলাদেশের এক অংশের বিশ্বকাপ শুরু হয়ে গেছে। আর্জেন্টিনার পরাজয়ে সমর্থকরা ব্যথিত হয়েছেন। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) মাঠে নামছে ব্রাজিল। বিশ্বকাপের সত্যিকার আমেজটা বলতে গেলে কাল থেকে শুরু হচ্ছে।
সার্বিয়ার বিপক্ষে ফেভারিট ব্রাজিল। আর্জেন্টিনার হারের পর কোনো দলই এখন নিজেদের ফেভারিট মনে করছে না বলে আমার বিশ্বাস। আর ব্রাজিল অবশ্যই আর্জেন্টিনার ম্যাচটি দেখেছে। তাই সার্বিয়া ম্যাচ নিয়ে তারা সতর্ক। টেকনিক্যালি সার্বিয়ার চেয়ে ব্রাজিল শক্তিশালী। খেলোয়াড়দের দিক বিবেচনা করলে সার্বিয়ার চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে ব্রাজিল। তাদের বিশ্বমানের কোচ আছেন তিতে। যিনি কিনা সময়ের সঙ্গে ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। ব্রাজিলের এমন কিছু প্লেয়ার আছেন, যাঁরা কিনা খেলাটা শেষ করে দিতে পারেন। ভিনিসিয়ুস, নেইমারের মতো প্লেয়ার যে দলে আছে, তাদের এগিয়ে থাকাটাই স্বাভাবিক।
মেসির হারটা তাঁর ভক্তদের কষ্ট দিয়েছে। আমরা ১০-১৫ বছর ধরে মেসিকে দেখে আসছি। পায়ের জাদুতে সবাইকে মোহিত করে চলেছেন তিনি। সৌদি আরবের কাছে তাঁর হতাশার ছবিটি ফুটবল দুনিয়ায় থাকা ভক্তদের জন্য কষ্টের। আজ নেইমারের ম্যাচ। আমরা জানি, মেসির সঙ্গে নেইমারের ভালো বন্ধুত্ব। বন্ধুর খেলা তো অবশ্যই দেখেছেন তিনি। তাঁরও এখন দায়িত্ব আছে। ১০ বছর ধরে নেইমার ফুটবল খেলে যাচ্ছেন। নেইমার গোল করতে চান, পারফরম্যান্স করতে চান। নেইমার জানেন, এটা ফুটবলের সবচেয়ে বড় মঞ্চ, এখানে পারফর্ম করতেই হবে।
নেইমারের সঙ্গে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোও মাঠে নামছেন। যদিও গত তিন মাস রোনালদোর খারাপ সময় গেছে ক্লাবের সঙ্গে। কিন্তু পর্তুগালের সঙ্গে এটা আলাদা। জাতীয় দলে সতীর্থ আলাদা, পরিবেশ আলাদা। এখানে সবকিছুই ভিন্ন। এটা তো নিজ দেশ। ক্লাব এবং দেশ- দুটি কিন্তু ভিন্ন। আপনি যখন নিজ দেশের জার্সি গায়ে জড়াবেন, তখন আবেগ কাজ করে। সে সময় সবাই শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করেন। একজন প্লেয়ার হিসেবে আমিও তাই করি। রোনালদো নিজেও জানেন, এটা তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। শেষটা অবশ্যই রাঙাতে চাইবেন। আর পর্তুগাল ও ঘানার ম্যাচ নিয়ে যদি কথা বলতে হয়, তাহলে আমি এগিয়ে রাখব রোনালদোর দলকেই। আফ্রিকান দলগুলো শারীরিকভাবে শক্তিশালী, তবে ট্যাকটিক্যালি নয়। পর্তুগাল টিম ফিজিক্যাল, টেকনিক্যাল ও ট্যাকটিক্যালি ভালো। তাদের আক্রমণভাগে যাঁরা আছেন, বেশিরভাগই বড় বড় ক্লাবে খেলেন। পর্তুগাল ফেভারিট। তবে আর্জেন্টিনার সৌদি আরবের কাছে পরাজয়টিই মনে রাখতে হবে। এখানে র্যাঙ্কিং বড় বিষয় নয়, মাঠের পারফরম্যান্সই মুখ্য। বিশ্বকাপের মঞ্চে যে কোনো কিছুই ঘটতে পারে। আমার হৃদয় বলে ঘানা, তবে মাথা বলছে পর্তুগাল জিতবে। ছোট দল আর আন্ডারডগ বলেই আমার কেন যেন মনে হচ্ছে, ঘানা যে কোনো কিছু ঘটাতে পারে।
বিশ্বকাপে যারা আসে, তারা তো যোগ্যতার বিচার করেই আসে। তিউনিসিয়ার বিপক্ষে ফেভারিট ছিল ডেনমার্ক। দেখা গেল, ডেনিশদের সঙ্গে তিউনিসিয়া দুর্দান্ত ফাইট করেছে। কালকে (আজ) রোনালদোর, নেইমারের মতো মাঠে নামছেন লুইস সুয়ারেজও। উরুগুয়ের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়া, এশিয়ার জায়ান্ট দল। লাতিন আমেরিকার দেশ হিসেবে উরুগুয়ে এগিয়ে থাকলেও কোরিয়াকে খাটো করে দেখছি না। কারণ, গত বিশ্বকাপে জার্মানিকে হারিয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া।
মন্তব্য করুন