ক্লাব ক্যারিয়ারে তাঁদের সাক্ষাৎ বহুবার হয়েছে। যেখানে কখনও লিওনেল মেসি হেরেছেন, কখনও রবার্ট লেভানডস্কি। অবশ্য সেই পাল্লাটা লেভারই ভারী। বায়ার্ন মিউনিখের জার্সি গায়ে বার্সার আঙিনায় লেভার গোলের পর উদযাপন এখনও টাটকা। এখন তো তিনি নিজেই সেই আঙিনার খেলোয়াড়। মেসি চলে গেছেন পিএসজিতে। এর পর এখনও দু'জনার দেখা হয়নি। হয়তো সামনে হতেও পারে। তার আগে বিশ্বমঞ্চে দেখা হয়ে গেল।

আজ স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ দেশের জার্সিতে মুখোমুখি হবে দুই মহাতারকা। দু'জনই জয় চাইবেন। যদিও পোল্যান্ডের জন্য পথটা আর্জেন্টিনার চেয়ে সহজ। তারা টেনেটুনে ড্র করলেই গ্রুপ পর্ব পার। অন্যদিকে আর্জেন্টিনাকে জিততে হবে। মূলত জিতলে কোনো রকম হিসাব-নিকাশ ছাড়াই তারা শেষ ষোলো নিশ্চিত করবে। তবে ড্র করলে সৌদি আরব-মেক্সিকো ম্যাচের ফলটা তাদের জন্য জরুরি হয়ে যাবে। সেখানে যদি সৌদি জিতে যায়, তাহলে আর আকাশি-সাদাদের রক্ষা নেই। তবে মেক্সিকো-সৌদি ম্যাচটি ড্র কিংবা মেক্সিকো জেতে, তাহলে শেষ ষোলোতে চলে যাবে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এমন জটিল হিসাব মেলানোর চেয়ে পোলিশ-পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতেই চাইবেন লিওনেল স্কালোনির দল, যেখানে কা ারি হতে হবে মেসিকেই। অবশ্য দুঃসময়ে তিনি ভালোই ঝলক দেখাতে পারেন।

২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা মূল পর্বে ওঠা নিয়ে শঙ্কায় পড়েছিল। এক মেসি ইকুয়েডরের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে আর্জেন্টিনাকে মূল পর্বের টিকিট উপহার দেন। এর পর মূল মঞ্চে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে তাঁর গোলেই নাইজেরিয়ার বিপক্ষে জেগে ওঠে আর্জেন্টিনা। সর্বশেষ মেক্সিকোর বিপক্ষেও তাঁর চোখজুড়ানো গোলে ম্যাচে ফিরেছিল বাদ পড়ার মুখে থাকা আলবেসেলেস্তেরা। আজ পোল্যান্ডের বিপক্ষেও তাই মেসির পানে চেয়ে থাকবে আর্জেন্টিনা।

তবে এই আশার গুড়ে বালি ঢালতে পারেন লেভানডভস্কি। ২০১৮ বিশ্বকাপে পোল্যান্ডের হয়ে খেললেও সেভাবে দ্যুতি ছড়াতে পারেননি তিনি। এবার দারুণ ছন্দে আছেন। এরই মধ্যে বিশ্বকাপে প্রথম গোল আর অ্যাসিস্টের দেখাও পেয়েছেন। যেটা আর্জেন্টিনার জন্য হতে পারে মাথাব্যথার। তা ছাড়া ফিনিশিংয়ে খুবই নিখুঁত লেভানডভস্কি। পাশাপাশি ড্রিবলিং এবং লং শটেও ভয়ংকর। আর গোলমুখে কর্নার থেকে ভেসে আসা বল কিংবা উইং বা মাঝমাঠ থেকে আসা কোনো ক্রসে যে কোনো সময় মাথা ঠুকে প্রতিপক্ষের স্বপ্ন চুরমার করে দিতে পারেন ৩৪ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার। তবে মেসিরও ছাড় দেওয়ার কথা না। কাট ইনসাইড (ডি বক্সের ভেতর বা বাইরে ছোট ছোট পাস), লং বল (হাওয়ায় ভাসানো ক্রস), কাউন্টার অ্যাটাকের সঙ্গে (উল্টো দ্রুত আক্রমণে ওঠা), লে অফসে (ওয়ানটাইম শট, ক্রস ও পাস) খুবই ভয়ানক এই আর্জেন্টাইন। সব মিলিয়ে দোহার মহামঞ্চে মহাটক্করই দেখার অপেক্ষায় ফুটবলবিশ্ব।