তাঁরও আশা ছিল কাতারে খেলার। কিন্তু সেই আশা আর পূরণ হয়নি। হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ফুটবলকেই বিদায় বলে দেন। তবে ফুটবল ছাড়লেও মনটা মাঠেই পড়ে আছে সার্জিও আগুয়েরোর। নিয়মিত মেসিদের সঙ্গে কথা হয়। মাঠে যেতে না পারলে ঘরে বসে ম্যাচ উপভোগ করেন। সর্বশেষ গত বছর কোপা আমেরিকায়ও আর্জেন্টিনা দলের সদস্য ছিলেন। এবার যখন ফুটবল বিশ্বকাপ, তখন কি আর ঘরে বসার জো আছে। প্রথম দিন থেকেই কাতারে আছেন। সর্বশেষ সেমিতে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। তার আগে বৃহস্পতিবার সাবেক সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলনেও দেখা যায় আগুয়েরোকে। একেবারে অনুশীলনের জার্সি পরে ক্যাম্পে যান তিনি। দেখে বোঝার উপায় নেই, তিনি ফুটবলকে বিদায় বলে দিয়েছেন। ফাইনালের দিনও থাকবেন মেসিদের সঙ্গে ২৭তম খেলোয়াড় হিসেবে। হয়তো গ্যালারি থেকে ডি মারিয়াদের করতালিতে জানাবেন উৎসাহ।

একসময়ের তারকা ফুটবলার আগুয়েরো। দেশ আর ক্লাবের হয়ে যতদিন মাঠে ছিলেন, দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। বলতে পারেন, ফুটবল আকাশের ধ্রুবতারাও। দাপট দেখিয়ে খেলেছেন, গোল করেছেন, ট্রফি জিতেছেন, রেকর্ড ভেঙেছেন, গড়েছেন। ৩৩ বছর বয়সে আচমকা ধ্রুবতারার আলো কেড়ে নিল হার্টের সমস্যা। তাই বাধ্য হয়ে ফুটবলকে বলে দিলেন বিদায়। যদিও তাঁর ক্যারিয়ার এতটা সমৃদ্ধ, আফসোস করার কিছু নেই। ক্লাবের হয়ে ম্যানসিটিতে তিনি রাজ করেছেন লম্বা সময়। জিতেছেন ১৫টি ট্রফি। প্রিমিয়ার লিগের সেরা আক্রমণভাগের একজন ছিলেন। চার ক্লাব মিলিয়ে করেছেন সাড়ে তিনশর বেশি গোল। আর দেশের হয়েও একটা ট্রফি (কোপা আমেরিকা) জয়ের সঙ্গী হয়েছিলেন।

মাঠে না থাকলেও যেন ছাতার মতো আগলে রাখছেন পুরো দলকে। প্রয়োজনে বুদ্ধি দিয়ে, তথ্য দিয়ে সহায়তা করছেন কোচ লিওনেল স্কালোনিকে। আর্জেন্টিনা যখন কোয়ার্টারে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হয়, তখনও ছিলেন ভিআইপি গ্যালারিতে। টাচলাইনে মেসিদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় ডাচদের। যেটা মিটমাট করতে সবার আগে এগিয়ে আসেন আগুয়েরো।

স্বাদ থাকলেও সাধ্য নেই আগুয়েরোর। না হলে তিনিও তো এই দলের একজন সদস্য হতে পারতেন। বিধাতা তাঁকে সেই সুযোগ দেয়নি। তাতে আগুয়েরোর খুব বেশি আফসোসের কারণও নেই। তিনি এখন মনেপ্রাণে চাইছেন আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হোক। তেমনটা হলে নিজেও অনেক বেশি আনন্দিত হবেন।