বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে ফ্রান্স হেরে যাওয়ায় হতাশায় মুষড়ে পড়েছিলেন দেশটির সমর্থকরা। ফাইনালের রাতে প্যারিসে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। সে শহরই কিলিয়ান এমবাপ্পেদের বরণ করে নিল সোমবার। দেশে ফিরে উষ্ণ সংবর্ধনা পেলেন তাঁরা। বিমান প্যারিসে অবতরণ করার পর ফ্লাইটের কেবিন ক্রুরাই প্রথম সংবর্ধনা দেন ফরাসি খেলোয়াড়দের।

জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের অভিবাদন জানাতে প্যারিসের 'প্লেস দে লা কনকর্ড' এ মানুষের ঢল নামে। এমবাপ্পে-গ্রিজম্যানদের এক পলক দেখতে তীব্র শীত উপেক্ষা করে সোমবার সন্ধ্যা থেকে সেখানে অবস্থান করছিলেন সমর্থকরা। ইনজুরির কারণে সেরা একাদশের পাঁচজনকে না পেলেও বিশ্বকাপে দারুণ খেলেছে ফ্রান্স। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে উন্নীত হয় শেষ ষোলোতে। নকআউট পর্বে পোল্যান্ডকে, কোয়ার্টারে ইংল্যান্ড আর সেমিতে মরক্কোকে হারিয়ে ফাইনাল খেলে দলটি। বিশ্বকাপের ফাইনালেও আর্জেন্টিনার সঙ্গে সমানে পাল্লা দিয়েছে নির্ধারিত সময়ের খেলায়। ১২০ মিনিটের খেলা শেষ করে ৩-৩ গোলের সমতা রেখে। তিনটি গোলই এমবাপ্পের করা। তাঁর তিন গোলের সুবাদে ৬৬ বছর পর ফাইনালে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক দেখে বিশ্বকাপ। টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনার কাছে ৪-২ গোলে হেরে যায় তারা। চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা গোল্ডেন বুট ছাড়া সব পুরস্কারই জিতে নেয়। গোল্ডেন বুটটি উঠেছে ৮ গোল করা এমবাপ্পের হাতে।

রানার্সআপ হলেও ফাইনালে হৃদয় জিতে নেওয়ার মতোই খেলেছে ফ্রান্স। রানার্সআপ হিসেবেও সংবর্ধনা পাওয়ার দাবি রাখে দিদিয়ের দেশমের দল। দেশে মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে হারের কষ্ট কিছুটা হলেও ভুলতে পেরেছেন গ্রিজম্যানরা। ফরাসি স্ট্রাইকার মার্কাস থুরামের মতে, 'সমর্থকদের দেখে আমরা আবেগে আপল্গুত হয়ে পড়ি। এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। আমরা দেশের মানুষকে আনন্দ দিতে সক্ষম হয়েছি। সত্যি বলতে আমরাও চেয়েছিলাম, বিশ্বকাপ শেষে ভক্তদের সঙ্গে দেখা করতে। আসরজুড়ে তারা আমাদের সমর্থন ও সাহস জুগিয়ে গেছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাতে চেয়েছিলাম।' যদিও ফরাসি ফুটবলারদের সংবর্ধনা দেওয়া নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল। সোমবার সকালে ফ্রান্সের ক্রীড়ামন্ত্রী আমেলি ওডা কাস্তেরা জানান, প্লেস দে লা কনকর্ডে ফরাসি খেলোয়াড়দের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। তবে এর কয়েক ঘণ্টা পর ফরাসি ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দেন, খেলোয়াড়রা বিমানবন্দর থেকে সরাসরি নিজ নিজ বাসার উদ্দেশে রওনা হবে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, 'ফাইনালে দল হারলে খেলোয়াড়রা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। তখন কোথায় যাওয়া অথবা সবার সঙ্গে দেখা করার মতো অবস্থা থাকে না তাদের।'