চোখের সমস্যা নিয়ে যা বললেন সাকিব

বিশ্বকাপ থেকেই চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন সাকিব আল হাসান। যে কারণে সম্প্রতি দেশে এবং দেশের বাইরে গিয়ে চক্ষু বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হয়েছিলেন তিনি। চলমান বিপিএল শুরুর আগেই লন্ডন থেকে চোখের ডাক্তার দেখিয়ে এসে বিপিএলে প্রথম ম্যাচ খেলেছিলেন সাকিব। কিন্তু সেখানেও দেখা গেছে তার চোখের সমস্যা। এরপর সিঙ্গাপুরে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেন সাকিব। ঢাকা পর্বের বাকি ম্যাচগুলো খেলতে না পারলেও সিঙ্গাপুর থেকে বিপিএলের সিলেট পর্বে যোগ দিয়েছেন তিনি।

তবে এবারের বিপিএলে এক অচেনা সাকিবের দেখা মিলেছে। বাংলাদেশের সেরা অলরাউন্ডার তিনি অথচ তার নামের পাশে কি না পাঁচ ম্যাচে মাত্র ৪ রান! যদিও দুটি ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নামেননি, বাকি যে তিনটি ম্যাচে ব্যাটিং করেছেন, ইনিংসে সর্বোচ্চ রান ২। গতকাল শনিবার সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে নেমে প্রথম বলেই আউট হয়েছেন। মূলত সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে আসার পর সাকিবকে শুধু বোলার হিসেবেই খেলতে হচ্ছে। ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও বল হাতে আবার ধারাবাহিক সাফল্য পাচ্ছেন। কিপটে বোলিংয়ে ৫ ম্যাচে নিয়েছেন ৬ উইকেট।

গতকাল সিলেট ম্যাচের পর অকপটে স্বীকার করেছেন, খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। তবে সমস্যাটা কোথায় হচ্ছে, এটা নিজেও জানেন না সাকিব। অলরাউন্ডার সাকিব থেকে বোলিং সাকিবে পরিণত হওয়া নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘জীবনে এই প্রথমবার শুধু একটা দিক নিয়ে খেলছি। রংপুর রাইডার্সের জন্য খারাপ লাগছে আমার। তারা আমাকে দলে নিয়েছিল। অথচ আমি তাদের জন্য অর্ধেক কাজ করতে পারছি, অর্ধেক পারছি না।’

সংবাদ সম্মেলেনে চোখের বিষয় নিয়ে বেশি বলতে হলো সাকিব আল হাসানকে। এতদিন যে ধরনের কথা শোনা গেছে, গতকাল সাকিব দিলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন তথ্য। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য বা সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদের কেউই তার চোখের সমস্যা নির্ণয় করতে পারেননি। তিনি নিজে থেকে চেষ্টা করছেন সমস্যার উৎস খুঁজতে, ‘চোখের কোনো সমস্যা নেই। আমি আপনার চেয়ে ভালো দেখছি (হাসি)।’ 

চোখে কোন সমস্যা নাই তাহলে কোন কারণে ব্যাট করতে ভুগছেন তিনি? এই উত্তর সাকিবেরও অজানা, ‘এটাই তো আমি খুঁজতেছি। আমি বের করার চেষ্টা করছি। বাকিরাও চেষ্টা করছে।’

বিসিবি বিবৃতিতে জানিয়েছিল নানান পরীক্ষা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শের পর নিশ্চিত হওয়া গেছে যে,  সাকিব ভুগছেন ‘এক্ট্রাফোভিয়াল সেন্ট্রাল সেরিওস কোরিওরেটিনোপ্যাথি’ বা সিএসআর নামক সমস্যায়। এই ধরণের সমস্যা মানসিক চাপের কারণেও হতে পারে বলে বলেন কোন কোন বিশেষজ্ঞ। সাকিবও তার মানসিক চাপের বিষয় উড়িয়ে দেননি, ‘এটা তো আপনার একটা ভালো প্রশ্ন যে বেড়ে যাচ্ছে কিনা। মাঝে মাঝে আমারও চিন্তা হয় এটা করলে বেশি হয়ে যাচ্ছে কিনা।’

বিপিএল খেলতে পারলেও এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা যে কঠিন সাকিবের কথায় মিলেছে সেই আভাস। বিপিএলের পর পরই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজ আছে বাংলাদেশের। এখনো তিন সংস্করণের অধিনায়ক থাকা সাকিব সেই সিরিজ খেলবেন কিনা, খেললেও অধিনায়ক থাকবেন কিনা তা নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে হবে তার আলোচনা।