ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সমালোচনা করে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, জনসাধারণের প্রতি দায়বদ্ধতা সম্পর্কে তিনি বোধ হয় জানেন না। জানলে তিনি এভাবে ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রকৃতির বুকে ছুরিকাঘাত করে বাহাদুর শাহ পার্কে রেস্তোরাঁ তৈরির অনুমোদন দিতে পারতেন না।

ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্কে রেস্তোরাঁ চালুর মাধ্যমে পরিবেশ ধ্বংসের প্রতিবাদে আজ সোমবার মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

আনু মুহাম্মদ বলেন, মেয়রের উচিত পার্কটির ইজারা অবিলম্বে বাতিল করে এটিকে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা। কারণ, আমাদের ইতিহাসের একটি অংশ হিসেবে বাহাদুর শাহ পার্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামের সিপাহিদের এখানে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। এই পার্কের ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করে একটি জাদুঘর স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে, যাতে তরুণ প্রজন্ম এর ইতিহাস ও ঐতিহ্য জানতে পারে।

এ সময় তিনি মেয়রকে উদ্দেশ করে বলেন, পার্ক পরিষ্কার রাখার জন্য ইজারা দিতে হলে আপনি আছেন কী করতে? আপনার দায়িত্ব কী? ঢাকা সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব হচ্ছে শহরের মাঠ, উন্মুক্ত স্থান ও পার্কগুলো রক্ষা করা। সেটি না করে তারা আজ ইজারা দিচ্ছে।

তিনি বলেন, এসব ইজারা নামমাত্র টাকায় দিলেও পেছনের দরজা দিয়ে বড় বড় লেনদেন হচ্ছে। এটা ছোট রেস্টুরেন্ট হলেও লক্ষণ দেখে বোঝা যাচ্ছে- সুচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বের হওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এ পার্কটির অবস্থান এমন একটি জায়গায়, যাকে ঘিরে ২৫টির বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বিশুদ্ধ বায়ু গ্রহণের জন্য এ পার্কের গাছগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজ এখানে রেস্টুরেন্ট করা হয়েছে, কাল যে পাঁচতারকা হোটেল হবে না তার নিশ্চয়তা কী? এসব হোটেল-রেস্টুরেন্ট দিয়ে এখানের গাছগুলো ধ্বংস করার অপচেষ্টা কখনোই সফল হতে দেওয়া হবে না।

এ সময় বাহাদুর শাহ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব আক্তারুজ্জামান খানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সৌম্য সরকার, উজ্জ্বল বিশ্বাস, তোফাজ্জল হোসেন, সানবীর হোসেন বাচ্চু প্রমুখ।