- খেলা
- পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে রংপুরে সমাবেশ ও গণমিছিল
পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে রংপুরে সমাবেশ ও গণমিছিল

পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে দেশের উত্তরের জনপদ রংপুরে সংহতি সমাবেশ ও গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বিকেলে রংপুরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন’–এর উদ্যোগে সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
নাগরিক সমাবেশে রংপুরের প্রগতিশীল ব্যক্তিত্ব, শিক্ষক, আইনজীবী, রাজনৈতিক কর্মী, মানবাধিকার কর্মী, নাগরিক সমাজসহ বিভিন্ন ছাত্র ও যুব সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। সমাবেশ শুরুর আগে বিভিন্ন সংগঠন খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে সমবেত হয়।
আয়োজক সংগঠন সূত্র জানিয়েছে, পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবিতে গড়ে ওঠা এটি দ্বিতীয় বিভাগীয় সমাবেশ। এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি প্ল্যাটফর্মটির উদ্যোগে চট্টগ্রামে প্রথম বিভাগীয় সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
সংহতি সমাবেশের উদ্বোধন করেন অধ্যাপক মোজাহার আলী। তার সভাপতিত্বে জাসদ রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি গৌতম রায়ের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন পার্বত্য চট্রগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুল রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশ জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোবাইদা নাসরিন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাহীন রহমান, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য নজরুল ইসলাম হক্কানী, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকার চুক্তি করে ঠিকই, কিন্তু সেই চুক্তির বাস্তবায়ন আলোর মুখ দেখে না। ২৫ বছর পরও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন হয় নি। তাই আমাদের লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলন আরও বেগমান করতে হবে। একইসঙ্গে পাহাড় ও সমতলের আদিবাসীদের স্বীকৃতি দিতে হবে। এটি আমাদের অধিকার আদায়ের লড়াই। সমাবেশ শেষে শহীদ মিনার থেকে একটি সম্মিলিত গণমিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে দুই দশকের সশস্ত্র লড়াইয়ের অবসান হয়। চুক্তি বাস্তবায়নকারী পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন করছে।
দাবি সমূহ:
১.পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সময়সূচিভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে চুক্তির দ্রুত ও যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে।
২. পাহাড়ে সামরিক কর্তৃত্ব ও পরোক্ষ সামরিক শাসনের স্থায়ী অবসান করতে হবে।
৩. আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদকে প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক করা এবং স্থানীয় শাসন নিশ্চিত করতে পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক এসব পরিষদের যথাযথ ক্ষমতায়ন করতে হবে।
৪. পার্বত্য ভূমি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনকে কার্যকরের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু ও ভারত প্রত্যাগত জুম্ম শরণার্থীদের পুর্নবাসন করে তাদের ভূমি অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
৫. দেশের মূল স্রোতধারার অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও স্থায়িত্বশীল উন্নয়নে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের অংশীদারত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
সমতলের আদিবাসীদের জন্য দাবিসমূহ:
১. ইউনিয়ন পরিষদসহ সকল স্তরের স্থানীয় সরকারে সমতলের আদিবাসীদের জন্য বিশেষ আসন সংরক্ষণ এবং আদিবাসী জনগণের জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
২. সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করতে হবে।
মন্তব্য করুন