
ছবি: ফাইল
বিপিএল চলাকালে জাকির আলী অনিকের প্রশংসা করে লিটন কুমার দাস বলেছিলেন, ‘তুই যে রকম উন্নতি করেছিস, বেশি দিন দেরি নেই জাতীয় দলে আসার।’ বিকেএসপির সাবেক এই দুই অগ্রজ আর অনুজের ব্যক্তিগত সে আলাপচারিতার বিষয়টি জানতেন না জাতীয় দল নির্বাচক প্যানেলের সদস্যরা। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বা অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের কান পর্যন্তও তা পৌঁছায়নি। কিন্তু নিয়তির নিয়ন্ত্রণকর্তা নিশ্চয়ই লিটনের সে নিঃস্বার্থ আবেগ দেখে খুশি হয়েছিলেন। তাই তো বিপিএল শেষ হওয়ার এক মাস যেতে না যেতেই জাতীয় দলের দরজা খুলে গেল অনিকের জন্য।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি২০ সিরিজের জন্য বুধবার ঘোষিত ১৪ জনের দলে রাখা হয়েছে উইকেটরক্ষক এ ব্যাটারকে। বিপিএল না খেলা রিশাদ হোসেনকে টি২০ দলে নেওয়া অবশ্য বড় চমক এ মুহূর্তে। এ দুই ক্রিকেটারের অন্তর্ভুক্তি যেমন আকস্মিক, তেমনি উইকেটরক্ষক-ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান ও মিডলঅর্ডার ব্যাটার আফিফ হোসেনর বাদ পড়াও অবাক হওয়ার মতোই।
গত ৯ মাসে কত নয়ছয়ই না হলো জাতীয় টি২০ দলে। মাহমুদউল্লাহ নেতৃত্ব হারালেন, বাদও পড়লেন। সাকিব আল হাসানকে এই সংস্করণে অধিনায়ক নির্বাচিত করে সহ-অধিনায়ক করা হয়েছিল সোহানকে। সাকিবের অনুপস্থিতিতে গত বছর জিম্বাবুয়ে সফরে টি২০ দলের অধিনায়কও ছিলেন তিনি। টি২০ এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ দুটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে সাকিবের সেই সহ-অধিনায়ক এবার দলেরই বাইরে। ২০২৪ সালের টি২০ বিশ্বকাপ ভাবনায় হয়তো রাখাই হবে না তাঁকে। সে জায়গাটি পূরণ করতেই তরুণ সম্ভাবনাময় জাকির আলীকে নেওয়া।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ মিলিয়ে ১৪টি টি২০ খেলে ৬ উইকেট পাওয়া লেগস্পিনার রিশাদকে নেওয়া হয়েছে নেট বোলিং দেখে। বোলিং বৈচিত্র্য আনার প্রয়োজন থেকে দলে একজন লেগস্পিনার রাখতে চান চন্ডিকা। ২০১৫ সালে অনেকটা এভাবেই টেনে দেখে যোবায়ের হোসেন লিখনকে জাতীয় দলে নিয়েছিলেন কোচ। আনকোড়া লেগি যোবায়েরের স্রোতের টানে ভেসে যেতেও সময় লাগেনি।
তবে লিখনের সঙ্গে রিশাদের একটা মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট না খেলেই টেস্ট দলে সুযোগ পেয়েছিলেন যোবায়ের। রিশাদ সে তুলনায় কিছুটা অভিজ্ঞ। বিসিবি এইচপি স্কোয়াডে রেখেছে তাঁকে। ১৩টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ১৯টি উইকেট আছে তাঁর। এমন অনভিজ্ঞ একজন লেগস্পিনারকে দলে নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, ‘লেগস্পিনার রিশাদ হোসেনকে আমরা একটু দেখতে চাচ্ছি। যেহেতু আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে খেলা, এই সিরিজটায় আমরা ওকে দেখব। আমাদের টিম ম্যানেজমেন্টও একটা লেগস্পিনার চাচ্ছিল। এ জন্যই আমরা নিয়েছি।’
ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশের সিরিজ থেকে বাদ পড়ার তালিকটা বেশ বড়ই। স্কোয়াড ১৪ জনের হওয়ায় একজনকে অটো বাদ পড়তে হতো। পেসার শরিফুল ইসলাম ফিট হওয়ায় রেজাউর রহমান রাজাকে রাখা হয়নি। আর পুরোপুরি ছন্দে না থাকা আফিফকে কোচ বলে দিয়েছেন, লিগে রান করে দলে ফিরতে। কারণ কোচের মনে হয়েছে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিং ও ফিল্ডিংয়ে সেরাটা দিতে পারেননি আফিফ।
এ ব্যাপারে নির্বাচক হাবিবুল বাশার বলেন, ‘আফিফ ভালো খেলোয়াড়। আশা করি, লিগে ভালো খেলে ফিরতে পারবে। কোচ তাকে রান করার জন্যই লিগে পাঠিয়েছেন।’ আসলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে, তা তো বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনই বলেছিলেন। তারই অংশ হিসেবে কাউকে বাইরে পাঠিয়ে নতুনদের সুযোগ করে দেওয়া।
মন্তব্য করুন