- খেলা
- টি২০ সিরিজেও দাপট দেখাতে চায় বাংলাদেশ
টি২০ সিরিজেও দাপট দেখাতে চায় বাংলাদেশ

ক্রিকেটের সব কিছুতেই সাকিবের একটা পরিমিতিবোধ আছে। খারাপ সময়েও খুব বেশি অনুশীলন করেন না তিনি। আবার ভালো খেলার জন্য কতটা প্রস্তুতি নিতে হবে তাও নিক্তিতে মেপে নেন। তাই সাকিবের অনুশীলন করা না করা খুব চোখে পড়ে। এখন তো তিনি মাঠে না গেলেই ধরে নেওয়া হয় বিজ্ঞাপনী কাজে ব্যস্ত। চট্টগ্রামে গতকাল অনুশীলনে না দেখে সাংবাদিকদের মধ্যে সে ধারণাই হলো, বিজ্ঞাপনী কাজে ঢাকায় গেছেন সাকিব। যোগসূত্র খোঁজারও চেষ্ট হলো। পরে জানা গেল, ঐচ্ছিক অনুশীলনে বিশ্রামে ছিলেন টি২০ অধিনায়ক। শনিবার তো একটি অনুশীলন সেশনে ছিলেনই। তাই হয়তো ক্লান্ত হতে চাননি। কারণ, আজ যে তাঁকে শতভাগ উজাড় করে দিতে হবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচে। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে সেটা জানেন বলেই সাকিবের অনুশীলন করা বা না করায় আপত্তি করেন না। আর তিনি যেটা চান, তা তো প্রত্যাশার চেয়েও বেশি পান অধিনায়কের কাছ থেকে। গতকাল যেমন ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে জানালেন, আইরিশদের বিপক্ষে টি২০ সিরিজেও জয়ের ধারাবাহিকতা দেখতে চান সাকিবের নেতৃত্বে।
এই মার্চেই দারুণ কিছু ঘটনা ঘটে গেছে দেশের ক্রিকেটে। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে টি২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করা তো বিশাল অর্জনই। এর পর পরই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দাপুটে পারফরম্যান্স দিয়ে সিরিজ জয় বড় প্রাপ্তি। আশা করা হচ্ছে, টি২০ সিরিজেও সে ছন্দ ধরে রাখা যাবে। কোচ চন্ডিকাও সে প্রত্যাশার কথা শোনালেন, ‘আমরা একই ফল চাই। এ নিয়ে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে চাই, যেটা করে এসেছি। প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে পারলে আমরা খুবই ভালো দল। যেটা খেলোয়াড়রাও বলেছে। প্রতিদিনই প্রক্রিয়ায় উন্নতি করার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।’
ইংল্যান্ডের কাছে এক দিনের সিরিজ হেরে চট্টগ্রামে যায় বাংলাদেশ। সেখানে শেষ ম্যাচটি জিতে হোয়াইটওয়াশ এড়ায়। যে ম্যাচে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স ছিল সাকিবের। শেষ ম্যাচের জয়ের ছন্দ টি২০ সিরিজেও ধরে রাখেন ক্রিকেটাররা।
ইংলিশদের তুলনায় আয়ারল্যান্ড অনেক পেছনের সারির দল। এক দিনের ক্রিকেট প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারেনি তারা। ধারণা করা হচ্ছে, টি২০ সিরিজেও সেভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে না। প্রভাব বিস্তার করে খেলে সফরকারীদের হোয়াইটওয়াশ করতে পারবেন সাকিবরা।
বাংলাদেশ টি২০তে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম মুখোমুখি হয় ২০০৯ সালের বিশ্বকাপে। প্রথম দেখাতেই আইরিশদের কাছে হারতে হয় ইংল্যান্ডের মাটিতে। তিন বছর পর দ্বিপক্ষীয় সিরিজে আয়ারল্যান্ডকে তাদের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। গত ১১ বছরে ইউরোপের এই দলের বিপক্ষে আর টি২০ খেলা হয়নি। ২০১৬ সালের টি২০ বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে ধর্মশালায় এ দু’দলের ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয় বৃষ্টির কারণে। সে হিসাবে ১১ বছর আগে যেখানে শেষ করেছিল, সেখান থেকেই নতুন শুরু দু’দলের। পার্থক্য শুধু ভেন্যুতে। ২০১২ সালে খেলা হয়েছিল আয়ারল্যান্ডের সিভিল সার্ভিস ক্রিকেট ক্লাব মাঠে। এবারের তিনটি ম্যাচই হবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। যে মাঠে কিছুদিন আগেই ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। হাথুরুসিংহের ভাষ্য অনুযায়ী, ট্যু উইকেটে হবে আজকের ম্যাচ, ‘দেখতে ফ্ল্যাট উইকেট। কারণ, আমাদের পছন্দ মতো পর্যাপ্ত ঘাস নেই। কিছু করারও নেই। অনেক ক্রিকেট খেলা হওয়ায় মাঝের পিচে ঘাস না থাকার কারণ। আশা করি, ট্যু উইকেট হবে। তবে আমার মনে হয় না এ মুহূর্তে অনেক পেস থাকবে।’
এই আয়ারল্যান্ড দলটিকে সবাই যখন হালকা করে দেখছে, কোচ চন্ডিকা তখন খুবই একাগ্র। ক্রিকেটাররা কোনোভাবে প্রতিপক্ষকে হালকাভাবে নেন, তা চান না তিনি। কোচের কথায় কোনো ক্রিকেটই সহজ না, ‘ওভাবে চিন্তা করলে আমরা উল্টো কামড় খাব। এটা আমাদের ক্যারিয়ারের শুরুতেই শিখেছি। যে কারণে আমরা এই খেলাকে ভালোবাসি। প্রতিটি প্রতিপক্ষকে সমানভাবে দেখি আমরা। তবে কখনও তাদের ভয় পাই না। এটাই আমাদের মানসিকতা।’ আধুনিক ক্রিকেটে প্রতিপক্ষকে হেও করে কথা বলার নিয়ম নেই। ক্রিকেটের সেই স্প্রিটই অনুসরণ করে গেলেন চন্ডিকা।
মন্তব্য করুন