- খেলা
- বাফুফের আরেকটি অপরিকল্পিত প্রজেক্ট
বাফুফের আরেকটি অপরিকল্পিত প্রজেক্ট

সারাদিন ভিক্ষা করি, চুরি করার সময় কই।
২০২২ কাতার বিশ্বকাপে খেলবে বাংলাদেশ।
ওপরের মন্তব্যগুলো বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে করেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। পরিকল্পনা আর বাস্তবতার সঙ্গে ঠিক কতটা অমিল, তা বর্তমানে সবাই কমবেশি বুঝে নিয়েছেন। এবার নতুন আরেকটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বাফুফে। নারী ফুটবল ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ– ‘বাংলাদেশ ওমেন্স সুপার লিগ’।
বাফুফের নির্বাহী কমিটির অনুমোদনের আগের দিনই সোমবার তারকাদের নিয়ে উন্মোচিত হয় মেয়েদের ফ্র্যাঞ্চাইজি ফুটবলের ট্রফি এবং বলের। এর আগে ২০১৬ সালেও একবার ছেলেদের ফ্র্যাঞ্চাইজি বাংলাদেশ সুপার লিগ (বিএসএল) টুর্নামেন্টের লোগোও উন্মোচন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই টুর্নামেন্ট আর আলোর মুখ দেখেনি।
এবারও তেমনই একটা অপরিকল্পিত প্রজেক্ট নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে চারদিকে। বাফুফে এবং স্বত্বাধিকারী কে স্পোর্টস মিলে চার দলের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ চালু করার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু মেয়েদের প্রিমিয়ার লিগে খেলা ক্লাবগুলোও ফ্র্যাঞ্চাইজি এ লিগ নিয়ে অন্ধকারে। কীভাবে খেলোয়াড় বাছাই করবে, সেটাও নিশ্চিত করতে পারেনি আয়োজকরা। ১৫ মে টুর্নামেন্ট শুরুর দিন ধার্য করলেও আদতে সেদিন মাঠে গড়াচ্ছে না ফ্র্যাঞ্চাইজি এ লিগ।২২ মের কথা শোনা গেলেও তা নিয়েও আছে অনিশ্চয়তা।
এর আগে বিএসএল আয়োজনের সব প্রস্তুতিই নিয়েছিল সাইফ পাওয়ার টেক। কিন্তু স্বার্থের দ্বন্দ্বের কারণে ভারতের আইএসএলের মতো এ প্রতিযোগিতা বাংলাদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত হয়নি। অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে এখন এমনিতেই টালমাটাল দেশের ফুটবল। এর মধ্যে অনুমোদনের আগে নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করাটা ভালোভাবে নেননি কার্যনির্বাহী কমিটির অনেক সদস্য।
এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। ট্রফি উন্মোচনের অনুষ্ঠানে শুধু বাফুফের দু’জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ ওমেন্স সুপার লিগের জমকালো আয়োজন করলেও এখনও ভেন্যু চূড়ান্ত হয়নি। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের সঙ্গে বিকল্প ভেন্যু হিসেবে আয়োজকরা চেয়েছে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা। কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, সংস্কার কাজ চলায় নিজেদের মাঠ দিতে রাজি হয়নি কিংস। টার্ফের বেহাল দশার কারণে কমলাপুরে মেয়েদের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, বিদেশি অনেক ফুটবলার খেলতে আসবেন।
মেয়েদের ফুটবল হলেও আর যাই হোক ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ করার মতো অবস্থা নেই মাঠের। লিগের ১২টি দলের বেশিরভাগের সঙ্গেই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিয়ে আলোচনা করেনি বাফুফে নারী ফুটবল কমিটি। শুধু তাই নয়, সর্বশেষ অনুষ্ঠানেও কোনো ক্লাবের প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ না জানানোর কথা বলেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, ‘কার্যনির্বাহী কমিটিতে কী আলাপ হয়েছে, সেগুলো তো আমরা জানি না। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিয়ে আমরা পুরো অন্ধকারে। আমি যেহেতু জানি না, অন্যান্য ক্লাবগুলো স্বাভাবিকভাবে না জানারই কথা।’
এ ইভেন্টের জন্য ক্লাবগুলো থেকে খেলোয়াড় নেবে কিনা, সেটাও অজানা ক্লাব কর্তাদের। প্রতিটি দল যদি ১৮ বা ২০ ফুটবলার নেয়, তাহলে লিগে খেলার সুযোগ পাবেন ৮০ ফুটবলার। এর মধ্যে তো আছে বিদেশি খেলোয়াড়। তার মানে বাফুফের ক্যাম্পের বাইরের ফুটবলারদের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার সুযোগ একেবারেই কম।
এ প্রসঙ্গে জানতে নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তাঁর মতো বাফুফের অনেক কর্মকর্তা এখন চুপসে গেছেন। ফোন দিলেও সাড়া মিলছে না। নানা অনিয়ম কাণ্ডে দুই বছরের জন্য আবু নাঈম সোহাগকে ফিফা নিষিদ্ধ করার পর নির্বাহী কমিটির সদস্যরাও আতঙ্কে আছেন!
মন্তব্য করুন