- খেলা
- জামায়াত নেতার বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘিরে রহস্য
জামায়াত নেতার বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘিরে রহস্য

বিম্ফোরণের পর সেই বাড়ি ঘিরে রাখে পুলিশ।
বগুড়া শহরে একটি টিনশেড বাড়ি সংস্কারের সময় হাতবোমা বিস্ফোরণে আব্দুল বাছেদ (৩৫) নামে এক নির্মাণ শ্রমিক আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে শহরের সূত্রাপুরে এ ঘটনা ঘটে। পরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা গিয়ে বিকেলে আরেকটি হাতবোমা ধ্বংস করেন।
বাড়িটির মালিক দুলাল আহম্মেদ ২০১৫ সালে মারা যান। বর্তমানে সেখানে তাঁর স্ত্রী ছকিনা বেগম ও মেয়ে স্কুলশিক্ষিকা সেলিনা শিউলি বসবাস করছেন। পুলিশের দাবি, দুলাল আহম্মেদ বগুড়া শহর জামায়াতে ইসলামীর সক্রিয় কর্মী
ছিলেন। ২০১৪ সালের নির্বাচন ঘিরে সারাদেশে নাশকতার সময়ে হাতবোমাগুলো ঘরের ছাদে সংরক্ষণ করা হয়।
মুন হাসান নামে এক প্রতিবেশী জানান, সকালে বিকট শব্দে গিয়ে দেখেন ওই বাড়িতে কাজ করা এক শ্রমিক আহত হয়েছেন। পরে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। বাড়ির মালিক দুলাল আহম্মেদ জামায়াত করতেন। স্ত্রী ও মেয়ে বর্তমানে দলটির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন বলে জানান তিনি।
দুলালের মেয়ে সেলিনা শিউলী জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই তিনি বাড়িটিতে বড় হয়েছেন। ছাদে ককটেল থাকবে, তাঁরা ভাবতেও পারছেন না। সেলিনার ভাষ্য, ‘টিনশেড বাড়িটি সংস্কারের জন্য মা-মেয়ে তিন দিন আগে অন্যত্র বাসা ভাড়া করে থাকছেন। বাবা কখনও রাজনীতি করেননি দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘কীভাবে এখানে ককটেল আসল, বুঝতে পারছি না। বাড়ির জমি নিয়ে কারও সঙ্গে আমাদের ঝামেলা নেই।’
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) স্নিগ্ধ আখতার জানান, বিস্ফোরণের পরই বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়। পরে ঢাকা থেকে সিটিটিসির সদস্যরা এসে আরেকটি হাতবোমা শনাক্ত করে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সেটি ধ্বংস করেন। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে বাড়িটি প্রয়াত জামায়াত নেতা দুলাল আহম্মেদের বলে জেনেছি। হাতবোমাগুলো অনেক পুরোনো। ধারণা করা হচ্ছে, ২০১৪ সালের নির্বাচন ঘিরে সারাদেশে নাশকতার সময় এগুলো গোপনে ছাদে রাখা হয়।’ বর্তমানে বাড়ি ও আশপাশের এলাকা নিরাপদ রয়েছে। এর সঙ্গে কারা জড়িত, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এদিকে, বিস্ফোরণে আহত আব্দুল বাছেদ বগুড়ার শাজাহানপুরের আতাইল গ্রামের হাফিজার রহমানের ছেলে। শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে তিনি বাড়িতে অবস্থান করছেন। বিস্ফোরণে তাঁর ডান হাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আব্দুল বাছেদ জানান, শুক্রবার সকালে তিনি বাড়ির টিন খোলার সময় ছাদে বোমাসদৃশ বস্তুটি দেখতে পান। পরে সেটি নাড়াচাড়া করার সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বিস্ফোরণের খবর পেয়ে পুলিশ এসে বাড়িটি ও আশপাশের এলাকা ঘিরে রাখে। ঢাকা থেকে সিটিটিসির বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের পরিদর্শক রাইসুল ইসলামের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি দল ঘটনাস্থলে আসে। এক ঘণ্টা তল্লাশির পর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আরও একটি হাতবোমা পেয়ে সিলিংয়ের ওপরেই বিস্ফোরণের মাধ্যমে ধ্বংস করেন তাঁরা।
মন্তব্য করুন