- খেলা
- খেরসনে বাঁধ ধ্বংস, বহু এলাকা প্লাবিতের আশঙ্কা
খেরসনে বাঁধ ধ্বংস, বহু এলাকা প্লাবিতের আশঙ্কা
-samakal-647f802d6b6c5.jpg)
ইউক্রেনের খেরসনে একটি গুরুত্বপূর্ণ জলবিদ্যুৎ বাঁধ ধ্বংস করেছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। এমনই দাবি করেছে ইউক্রেন। ফলে ওই অঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। বন্যা বিপর্যয় হতে পারে– এমন আশঙ্কায় আশপাশের এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ইউক্রেন ও পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো রাশিয়ার বিরুদ্ধে বাঁধটি উড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছে, অন্যদিকে কিয়েভকে দায়ী করেছে মস্কো। খবর: বিবিসি ও রয়টার্স’র।
ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক মার্ক এলিস বলেন, বাঁধের মতো বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ সামরিক প্রয়োজনের বাইরে রাখা উচিত। এ পদক্ষেপের কারণে যদি অর্জিত সামরিক সুবিধা সামান্য হয় এবং বেসামরিকদের ক্ষতি করা হয় বিপর্যয়কর, তাহলে এটি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। এদিক থেকে নোভা কাখোভকা বাঁধ ধ্বংস ন্যায্য হতে পারে না। তিনি বলেন, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনীয় বাহিনী কিয়েভের উত্তরে ভূমি প্লাবিত করার জন্য ইরপিন বাঁধ ধ্বংস করেছিল। এর মাধ্যমে রাজধানী অভিমুখে রুশ বাহিনীর অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছিল। সেটি সামরিক প্রয়োজনে ন্যায়সংগত ছিল।
বাঁধ ধ্বংস বিভিন্ন দিক থেকে গুরুতর পরিণতি সৃষ্টি করতে পারে। এরই মধ্যে কিছু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। শহরের নিচু অংশের বাসিন্দাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সরে যেতে এবং উঁচু জমিতে আশ্রয় নেওয়ার জন্য সতর্ক করেছে খেরসন কর্তৃপক্ষ। অঞ্চলটির ১৪টি জনবসতিতে ২২ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন। বাঁধসংলগ্ন শহরগুলোয় পানির উচ্চতা ১২ মিটার পর্যন্ত উঠতে পারে বলে জানান রাশিয়া নিযুক্ত মেয়র ভ্লাদিমির লেওনতিয়েভ। এ ঘটনায় নোভা কাখোভকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
পাশাপাশি অন্য বিপদও আছে। বাঁধটি উজানে ক্রিমিয়া অঞ্চল ও জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পানি সরবরাহ করে। উভয় অবস্থানই রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। একটি বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রসি বলেন, বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জলাধারের পানির স্তর প্রতি ঘণ্টায় ৫ সেন্টিমিটার কমে যাচ্ছে। স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় জলাধারে পানি প্রায় ১৬ দশমিক ৪ মিটার ছিল। এ স্তর যদি ১২ দশমিক ৭ মিটারের নিচে নেমে যায়, তবে এটি আর পাম্প করা যাবে না।
আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রসি সতর্ক করেন, অত্যাবশ্যকীয় কুলিং ওয়াটার সিস্টেমে দীর্ঘসময় শীতল পানির অনুপস্থিতির কারণে জরুরি ডিজেল জেনারেটর অকার্যকর হয়ে পড়বে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পাশে একটি বড় পুকুরসহ বেশ কয়েকটি বিকল্প পানির উৎস রয়েছে।
বাঁধ ধ্বংসের পর ১৫০ টন ইঞ্জিন অয়েল ডিনিপ্রো নদীতে ছড়িয়ে পড়েছে এবং পরিবেশের জন্য নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করেছে ইউক্রেন। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, প্রায় ৮০টি শহর ও গ্রাম প্লাবিত হতে পারে। রুশদের সন্ত্রাসী বলে অভিহিত করে তিনি বলেন, কাখোভকা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাঁধ ধ্বংসের ঘটনায় সারাবিশ্ব আবারও বুঝতে পারল, তাদের ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের প্রতিটি অংশ থেকে বিতাড়িত করা প্রয়োজন।
এদিকে রাশিয়া বাঁধটিতে হামলার জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করে বলেছে, এটি কিয়েভের ইচ্ছাকৃত নাশকতা। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এটি এই সত্যের সঙ্গেও যুক্ত যে, দু’দিন আগে বড় ধরনের অভিযান শুরু করলেও ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনী তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। তাদের আক্রমণ স্থবির হয়ে পড়ছে।
মন্তব্য করুন